আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
146 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

আমি  এবার HSC পরীক্ষা দিয়েছে। আগে ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম এখন দ্বীনের পথে এসে লেখাপড়া থেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছি। না পড়ার কারণে পরীক্ষায় A+ পাই নি।

 তাই  মা আমাকে উঠতে বসতে অভিশাপ দেয় "তোর জীবনেও ভালো হবে না। সারাজীবন কাদতে কাদতেই দিন যাবে। ফোনে হাদিস,সূরা,ওয়াজ দেখলে তুই জাহান্নামে যাবি।হাদিসের চেয়ে মা-বাবা বড়।তুই নফল রোজা,হাদিসের বই পড়তে পারবি না।শুধু একাডেমিক বই পড়বি।অনলাইনে শুধু একাডেমিক পড়া পড়বি।অন্য কিছু দেখতে পারবি না।দেখলে আখিরাতে ঠেকা থাকবি।"

*প্রশ্ন:১* এভাবে অভিশাপ দেওয়াতে  মায়ের কি গুনাহ হচ্ছে?
*প্রশ্ন:২* আমার কি গুনাহ হচ্ছে? বা এই অভিশাপের কারণে কি আমার ক্ষতি হবে?

 *প্রশ্ন:৩* জেনারেল লাইনের হওয়াতে দ্বীন শিখার জন্য আমি যদি অনলাইন ব্যবহার করে থাকি তাহলে কি  গুনাহ হবে? যেমন:মা-বাবাকে না জানিয়ে অনলাইন মাদ্রাসায় পড়া।

 *প্রশ্ন:৪* হাদিস আগে নাকি মা-বাবার হুকুম আগে??

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


পিতামাতার জন্য রাগের অবস্থায় সন্তানদের বদ দুয়া,অভিশাপ দেওয়া উচিত নয়। 
কারন কোন সময় যে আল্লাহ তায়ালা সেসব বদ দুয়া কবুল করে নিবেন,তাহা কেহই বলতে পারেনা।
এমনও হতে পারে যে পিতা মাতা বুঝে না বুঝে অযথাই সন্তানের জন্য বদ দুয়া করলো, আল্লাহ তায়ালা তা পুরোপুরি ভাবে কবুল করে নিলো,তখন এটা সন্তানের জন্য শাস্তির কারন হয়ে দাড়াবে।
বিষয়টি পিতামাতাকে বুঝানো দরকার।

উভয় পক্ষ থেকেই চেষ্টা করা দরকার,যে এই অবস্থায় যেনো পৌছাতে না হয়।

পিতা মাতা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এহেন কথা না বলার,আর সন্তান চেষ্টা করবে,এমন কোনো কাজ না করার,যাতে পিতা মাতা কষ্ট পায়।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৪)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَادَتِ امْرَأَةٌ ابْنَهَا، وَهْوَ فِي صَوْمَعَةٍ قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ يَمُوتُ جُرَيْجٌ حَتَّى يَنْظُرَ فِي وَجْهِ الْمَيَامِيسِ. وَكَانَتْ تَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ رَاعِيَةٌ تَرْعَى الْغَنَمَ فَوَلَدَتْ فَقِيلَ لَهَا مِمَّنْ هَذَا الْوَلَدُ قَالَتْ مِنْ جُرَيْجٍ نَزَلَ مِنْ صَوْمَعَتِهِ. قَالَ جُرَيْجٌ أَيْنَ هَذِهِ الَّتِي تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا لِي قَالَ يَا بَابُوسُ مَنْ أَبُوكَ قَالَ رَاعِي الْغَنَمِ ".

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল। তখন তার ছেলে গীর্জায় ছিল। বলল, হে জুরায়জ! ছেলে মনে মনে বলল, হে আল্লাহ্! (এক দিকে) আমার মা (এর ডাক) আর (অন্য দিকে) আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা আর আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরায়জ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা ও আমার সালাত। মা বললেন, হে আল্লাহ্! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত যেন জুরায়জের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বকরী চরাতো, সে জুরায়জের গীর্জায় আসা যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল- এ সন্তান কার ঔরসজাত? সে জবাব দিল, জুরায়জের ঔরসের। জুরায়জ তাঁর গীর্জা হতে নেমে এসে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে যে, তার সন্তানটি আমার? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে) জুরায়জ বলেন, হে বাবূস! তোমার পিতা কে? সে বলল, বকরীর অমুক রাখাল। (বুখারী ১২০৬.২৪৮২, ৩৪৩৬, ৩৪৬৬; মুসলিম ৪৫/২, হাঃ ২৫৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১১২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১১৩৩)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এভাবে অভিশাপ দেওয়াতে মায়ের গুনাহ হচ্ছে।

(০২)
এক্ষেত্রে আপনি যদি ফরজ/ওয়াজিব/সুন্নাত ইবাদত ব্যাতিত অন্য ক্ষেত্রে মা বাবার এভাবে অমান্য করে থাকেন,বা মায়ের সাথে বেয়াদবি বা জোড় গলায় কথা বলে থাকেন,সেক্ষেত্রে মা বাবার আদেশ অমান্যের কারনে আপনারও গুনাহ হবে।

এই অভিশাপের কারণে আপনার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পরামর্শ থাকবে, এক্ষেত্রে আপনি আপনার মায়ের কাছে মাফ চেয়ে নিবেন। 

আপনার মাকে বলবেন, তিনি যেনো আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে ও প্রশ্নে উল্লেখিত অভিশাপ,বদ দুয়া যেনো কবুল না হয়,সে জন্য যেনো দোয়া করে।

ফরজ/ওয়াজিব/সুন্নাত ইবাদত পালন করবেন। লেখাপড়ার ক্ষতি হওয়ায় নফল ইবাদত কম করবেন। লেখাপড়ার চাপ/মায়ের পক্ষ থেকে চাপের সময় নফল ইবাদত বন্ধ রাখবেন।
হিকমতের পথ অবলম্বন করে চলবেন,যাতে দুই কুল ঠিক থাকে।

আরো জানুনঃ- 

(০৩)
আপনার যদি ফরজে আইন পরিমান জ্ঞান অর্জন না থাকে,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৪)
বিষয়টি ব্যাখ্যা সম্বলিত।

যদি হাদীস দ্বারা ফরজ/ওয়াজিব কাজ উদ্দেশ্য হয়,সেক্ষেত্রে হাদীসের বিধান আগে রাখতে হবে।

আর যদি হাদীস দ্বারা নফল কাজ হয়,সেক্ষেত্রে বিষয়টির হুকুম স্থান কাল হিসেবে ভিন্ন হবে।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...