আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (25 points)

মুফতি ওলি উল্লাহ শায়েখের কাছে...

আমি দেশে বিকাশের এজেন্ট হয়ে ব্যাবসা করি। বিকাশ কোম্পানি আমাকে প্রতি ট্রানজেকশনে হাজারে ৪ টাকা কমিশন করে দেই। এখন আমার বন্ধু আমার মাধ্যমে প্রবাস থেকে বিকাশের ব্যাবসা করে। এখন বিষয়টা হচ্ছে আমার বন্ধুর কাছে পুঁজি নেই। যদিও তার কাছে পুঁজি থাকতো তাহলে আমাকে অ্যাডভান্স টাকা দিয়েই তার ব্যাবসা করতে হতো। এখন যদি তার সাথে আমি এই চুক্তিতে যায় তার যেহেতু পুঁজি নাই সেজন্য তাকে আমাকে অ্যাডভান্স পেমেন্ট করতে হবে না। ব্যবসাটা দুজনে মিলেই করবো তাকে আমি পুঁজি দিবো। এখন আনুমানিক আমার বন্ধুর মাসিক লেনদেন ৫ লাখ টাকা। এখন যেহেতু তার কাছে পুঁজি নেই। আমি তাকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে ব্যবসায় শরিক হলাম। এখন দেখা যায় যে বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠালে প্রতি এক লাখে তিন হাজার টাকা লাভ হয়। তো এই প্রফিট টা যদি আমরা দুজনে পার্সেন্টেজ হিসেব করে লাভ নেই আমি ৩০% সে ৭০% বা ৫০/৫০ ইত্যাদী। এখন যেহেতু দুজনে ব্যবসা করতেছি তো আমি যদি তার সাথে এরকম চুক্তি করি এটা কি শরীয়ত সম্মত হবে?
আরেকটা বিষয় হচ্ছে আমি যেহেতু বিকাশের এজেন্ট সুতরাং এই ৫ লাখ টাকা লেনদেনের কারণে বিকাশ কোম্পানি আমাকে প্রতি হাজারে ৪ টাকা করে কমিশন দিতেছে। নির্ধারিত কমিশন তো পাচ্ছিই আমি স্বাভাবিকভাবে। এছাড়াও তার থেকে যে এক্সট্রা আমি টাকাটা পাবো প্রতি লাখে পারসেন্ট হিসাব করে ঐটা কি হারাম হবে। ঐটা তো আমি তাকে টাকে দিয়ে তার সাথে ব্যবসায় শরিক হলাম, এখন তো ব্যবসাটা দুজনেরই।

★সু-প্রিয় উত্তরকারী উস্তায,

আপনি বলেছিলেন যে, প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনোক্রমেই এভাবে লাভ নেয়া জায়েজ হবেনা। এখন আমার কথা হচ্ছে, যারা বিদেশ থেকে দেশের এজেন্ট এর মাধ্যমে বিকাশের ব্যাবসা করে এটা কি অবৈধ পন্থা?? যদি অবৈধ পন্থা না হয় তাহলে তো নাজায়েজ হওয়ার কথা না। কেননা এখানে তো আমি তাকে ঋণ দিচ্ছি না। টাকা দিয়ে আমি তার সাথে ব্যবসায় শরিক হলাম এবং লাভ লস এর হিসেব করেই দুজনে পারসেন্ট হারে টাকা নিবো। দয়া করে বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বললে ভালো হবে।

1 Answer

0 votes
by (565,920 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/87892/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মহান আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ-

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ

তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা(২৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم 
  " ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না।(তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)

https://ifatwa.info/86133/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

ব্যাংকের টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার (টিটি) এবং ডাক বিভাগের মানি অর্ডারের সহজ বিকল্প হিসেবে বর্তমান মোবাইল ব্যাংকিং সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউটের কাজ করে থাকে। ফিকহে ইসলামীর দৃষ্টিতে এটি ‘আলইজারাহ’-এর অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে টাকা জমা/উত্তোলনকারী হচ্ছে শ্রম/সেবা গ্রহীতা বা ‘মুসতাজির’।আর এজেন্ট হচ্ছে শ্রম/সেবাদাতা যাকে বলা হয় ‘আজীর’ (বা মূল‘আজীরে’র প্রতিনিধি)।
এক সময়ে ডাক বিভাগের মানি অর্ডারকেও তখনকার উলামায়ে কেরাম এভাবে বিশ্লেষণ করেছিলেন। ‘আলইজারা’এর মৌলিক শর্তগুলো পাওয়া যাওয়ায় বিকাশ ব্যবসা জায়েয বলা যায়। তবে বিকাশ ব্যবসায়ী বা এজেন্টের জন্য কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরী।

১. পার্সোনাল একাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসা করা যাবেনা, কেননা এটি আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ।
২. সেন্ড মানির সময় গ্রাহক থেকে কোন চার্জ নেয়া বা ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে নির্ধারিত হারের চেয়েও বেশি রাখা যেমন হাজারে ১৮.৫০ টাকার জায়গায় ২০/- টাকা বা তার চেয়ে বেশি রাখা কোনোক্রমেই জায়েয হবে না। কেননা এখানে এজেন্ট হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির নিযুক্ত শ্রম/সেবাদাতা প্রতিনিধি (উকীল)।
কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত চার্জের বেশি নেওয়ার অধিকার তার নেই।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/36025

★যেহেতু আপনি বিকাশের নিয়মতান্ত্রিক একজন এজেন্ট। কোম্পানির পক্ষ থেকে আপনি আপনার নির্দিষ্ট কমিশনও পাচ্ছেন।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাদের মাধ্যমে যারা বিদেশে থেকে বিকাশের ব্যাবসা করে তাদের থেকে আপনারা যদি চুক্তির ভিত্তিতে নগদ অথবা বাকিতে যদি এক্সট্রা টাকা নেন,তাহলে এটা জায়েজ হবেনা। 
এই অতিরিক্ত টাকা গ্রহন হারাম হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এই পন্থা অবৈধ নয়।
তবে আপনি যেহেতু বিকাশের নিয়মতান্ত্রিক একজন এজেন্ট। কোম্পানির পক্ষ থেকে আপনি আপনার নির্দিষ্ট কমিশনও পাচ্ছেন।

সুতরাং আপনার জন্য অতিরিক্ত টাকা গ্রহন জায়েজ হবেনা।

★আরো জানার জন্য নিকটতম কোনো দারুল ইফতায় স্বশরীরে যাওয়ার পরামর্শ রইলো। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...