আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
99 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম
মুফতী সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন : আমি আপনাদের সাইট থেকে পড়েছি ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্যে জমি ক্রয় বিক্রয় হলে তার উপর যাকাত দিতে হবে।
১ঃ যদি এমন কোনো জমি অথবা ফ্ল্যাট থাকে যেখানে বসবাস করার নিয়ত ছিল কিন্তু কোন কারনে বিক্রি করতে হবে। বিক্রি হওয়ার পর যে অর্থ আসবে তা যদি এক বছর না থাকে তখন যাকাতের হিসাবটা কিভাবে হবে?  বিক্রিত অর্থ এর কি যাকাত আসবে যদি আসে কিভাবে আদায় করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (57,120 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

https://ifatwa.info/17325/   নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে,

সব ধরনের সম্পদ ও সামগ্রীর ওপর যাকাত ফরয হয় না। শুধু সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার পণ্যে যাকাত ফরয হয়।

সোনা-রুপার অলংকার সর্বদা বা কালেভদ্রে ব্যবহৃত হোক কিংবা একেবারেই ব্যবহার না করা হোক সর্বাবস্থাতেই তার যাকাত দিতে হবে। -সুনানে আবু দাউদ ১/২৫৫সুনানে নাসায়ী হাদীস ২২৫৮; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৫৪-৭০৬১,৭০৬৩-৭০৬৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ৯৯৭৪;৬/৪৬৯-৪৭১

ব্যবসার নিয়তে  কোনো কিছু ক্রয় করলে তা স্থাবর সম্পত্তি হোক যেমন জমি-জমা, ফ্ল্যাট কিংবা অস্থাবর যেমন মুদী সামগ্রী, কাপড়-চোপড়, অলংকার, নির্মাণ সামগ্রী, গাড়ি, ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, হার্ডওয়ার সামগ্রী, বইপুস্তক ইত্যাদি, তা বাণিজ্য-দ্রব্য বলে গণ্য হবে এবং মূল্য নিসাব পরিমাণ হলে যাকাত দেওয়া ফরয হবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১০৩,৭১০৪

সুতরাং আপনার উক্ত জমি তো ব্যবসার জন্য নয়,তাই তার উপর যাকাত ফরজ হবেনা।

যাকাত শুধুমাত্র ক্রমবর্ধমান মালের উপর ওয়াজিব হয়ে থাকে।

মালে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়তে থাকে,সেগুলো সর্বমোট চার প্রকার,(১)সোনা (২)রুপা (৩)ব্যবসার মাল (৪)গবাদি পশুএগোলো কে যেহেতু শরীয়ত বাড়ন্ত মাল বলে আখ্যা দিয়েছে,সুতরাং এগুলো বাড়ন্ত মাল।বাস্তবে সবগুলো বাড়ুক বা নাই বাড়ুক।

আরো জানুনঃ https://www.ifatwa.info/14779/

আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যতগুলো সম্পদ দান করেছেন তার মধ্যে জমি অতি মূল্যবান একটি সম্পদ। এই মূল্যবান সম্পদের কখন ও কিভাবে যাকাত আদায় করতে হবে তা নিম্নে আলোচনা করা হল :

(ক) জমি যদি বসবাস অথবা চাষাবাদের কাজে ব্যবহৃত হয় তাহলে সেই জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না। বরং উক্ত জমি থেকে যে শস্য উৎপাদিত হবে তা নিছাব পরিমাণ হলে তার ওশর বা যাকাত আদায় করতে হবে।

(খ) উক্ত জমি ভাড়ায় খাটানো হলে অথবা ভাড়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিল্ডিং তৈরী করা হলে সেই জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না। বরং তা থেকে অর্জিত নিছাব পরিমাণ অর্থ এক বছর অতিক্রম করলে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে।

(গ) ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি ক্রয় করলে (সরাসরি উক্ত জমি বিক্রয় করে লাভ করার উদ্দেশ্য থাকলে) এবং তা এক বছর অতিক্রম করলে সেই জমির বর্তমান বিক্রয়মূল্য হিসাব করে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, উক্ত জমির বছর হিসাব করা হবে ঐ সময় থেকে, যখন থেকে তার নিকট জমি ক্রয় করার টাকা গচ্ছিত হয়েছে। এ সময় থেকে এক বছর অতিক্রম করলে উক্ত জমির বর্তমান মূল্যের শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত প্রদান করবে। আর এক বছর অতিক্রম হওয়ার পূর্বেই জমি বিক্রয় করলে বিক্রয়লব্ধ টাকা নিছাব পরিমাণ হলে তা থেকে যাকাত আদায় করবে।

অতএব মূল কথা হল, ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি ক্রয়-বিক্রয় করলেই কেবল সেই জমির বর্তমান বিক্রয়মূল্য হিসাব করে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে। আর ব্যবসার উদ্দেশ্য না থাকলে সেই জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না। বরং তা থেকে অর্জিত অর্থ নিছাব পরিমাণ হলে তার শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে।

শরহুল মুমতে‘ ৬/১৪২-১৪৩ পৃঃ।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত বাড়ির উপর যাকাত ফরজ হবেনা। কারণ আপনি তা বসবাসের উদ্দেশ্যে তৈরী/ক্রয় করেছিলেন। বসবাসের বাড়ির উপর যাকাত আসে না। তবে উক্ত বাড়ি বিক্রির পর আপনার মালিকানায়া থাকা টাকার যাকাত দিতে হবে ঐসময় যখন উক্ত টাকার উপর পূর্ণ এক বছর অতিক্রম হবে। অন্যথায় বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই উক্ত টাকা খরচ হয়ে গেলে যাকাত ফরজ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...