ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির
রহিম।
জবাব,
https://ifatwa.info/17325/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে,
সব ধরনের সম্পদ ও সামগ্রীর ওপর যাকাত ফরয হয় না। শুধু সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং
ব্যবসার পণ্যে যাকাত ফরয হয়।
সোনা-রুপার অলংকার সর্বদা বা কালেভদ্রে ব্যবহৃত হোক কিংবা একেবারেই
ব্যবহার না করা হোক সর্বাবস্থাতেই তার যাকাত দিতে হবে। -সুনানে আবু দাউদ ১/২৫৫; সুনানে নাসায়ী হাদীস ২২৫৮;
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৫৪-৭০৬১,৭০৬৩-৭০৬৫;
মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ৯৯৭৪;৬/৪৬৯-৪৭১
ব্যবসার নিয়তে কোনো
কিছু ক্রয় করলে তা স্থাবর সম্পত্তি হোক যেমন জমি-জমা, ফ্ল্যাট কিংবা অস্থাবর যেমন মুদী সামগ্রী, কাপড়-চোপড়,
অলংকার, নির্মাণ সামগ্রী, গাড়ি, ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক
সামগ্রী, হার্ডওয়ার সামগ্রী, বইপুস্তক
ইত্যাদি, তা বাণিজ্য-দ্রব্য বলে গণ্য হবে এবং মূল্য নিসাব পরিমাণ
হলে যাকাত দেওয়া ফরয হবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১০৩,৭১০৪
★সুতরাং
আপনার উক্ত জমি তো ব্যবসার জন্য নয়,তাই তার উপর যাকাত ফরজ
হবেনা।
যাকাত শুধুমাত্র ক্রমবর্ধমান মালের উপর ওয়াজিব হয়ে থাকে।
মালে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়তে থাকে,সেগুলো সর্বমোট চার প্রকার,(১)সোনা (২)রুপা (৩)ব্যবসার
মাল (৪)গবাদি পশুএগোলো কে যেহেতু শরীয়ত বাড়ন্ত মাল বলে আখ্যা দিয়েছে,সুতরাং এগুলো বাড়ন্ত মাল।বাস্তবে সবগুলো বাড়ুক বা নাই বাড়ুক।
আরো জানুনঃ https://www.ifatwa.info/14779/
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যতগুলো সম্পদ দান করেছেন তার মধ্যে জমি
অতি মূল্যবান একটি সম্পদ। এই মূল্যবান সম্পদের কখন ও কিভাবে যাকাত আদায় করতে হবে তা
নিম্নে আলোচনা করা হল :
(ক) জমি যদি বসবাস অথবা চাষাবাদের কাজে ব্যবহৃত হয় তাহলে সেই
জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না। বরং উক্ত জমি থেকে যে শস্য উৎপাদিত হবে তা নিছাব
পরিমাণ হলে তার ওশর বা যাকাত আদায় করতে হবে।
(খ) উক্ত জমি ভাড়ায় খাটানো হলে অথবা ভাড়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিল্ডিং
তৈরী করা হলে সেই জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না। বরং তা থেকে অর্জিত নিছাব পরিমাণ
অর্থ এক বছর অতিক্রম করলে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে।
(গ) ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি ক্রয় করলে (সরাসরি উক্ত জমি বিক্রয়
করে লাভ করার উদ্দেশ্য থাকলে) এবং তা এক বছর অতিক্রম করলে সেই জমির বর্তমান বিক্রয়মূল্য
হিসাব করে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, উক্ত জমির বছর হিসাব করা হবে ঐ সময় থেকে, যখন থেকে তার
নিকট জমি ক্রয় করার টাকা গচ্ছিত হয়েছে। এ সময় থেকে এক বছর অতিক্রম করলে উক্ত জমির বর্তমান
মূল্যের শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত প্রদান করবে। আর এক বছর অতিক্রম হওয়ার পূর্বেই
জমি বিক্রয় করলে বিক্রয়লব্ধ টাকা নিছাব পরিমাণ হলে তা থেকে যাকাত আদায় করবে।
অতএব মূল কথা হল, ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি
ক্রয়-বিক্রয় করলেই কেবল সেই জমির বর্তমান বিক্রয়মূল্য হিসাব করে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে
যাকাত দিতে হবে। আর ব্যবসার উদ্দেশ্য না থাকলে সেই জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না।
বরং তা থেকে অর্জিত অর্থ নিছাব পরিমাণ হলে তার শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে।
শরহুল মুমতে‘ ৬/১৪২-১৪৩ পৃঃ।
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত বাড়ির উপর যাকাত ফরজ হবেনা। কারণ আপনি তা
বসবাসের উদ্দেশ্যে তৈরী/ক্রয় করেছিলেন। বসবাসের বাড়ির উপর যাকাত আসে না। তবে উক্ত বাড়ি
বিক্রির পর আপনার মালিকানায়া থাকা টাকার যাকাত দিতে হবে ঐসময়
যখন উক্ত টাকার উপর পূর্ণ এক বছর অতিক্রম হবে। অন্যথায় বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই উক্ত
টাকা খরচ হয়ে গেলে যাকাত ফরজ হবে না।