জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
,
উত্তম চিকিৎসা হল- ১. আল্লাহর যিকির করা ২. কোরআন তেলাওয়াত করা ৩. নামাযের পাবন্দি করা।
,
১. কেননা, যিকির সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়। (সূরা রা’দ ২৮)
২. কোরআন সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
نُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ وَلاَ يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إَلاَّ خَسَارًا
আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়। (সূরা বনু ইস্রাঈল ৮২)
৩. নামায সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ الْإِنسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعًا إِلَّا الْمُصَلِّينَ الَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ
মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে। যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে। আর যখন কল্যাণপ্রাপ্ত হয়, তখন কৃপণ হয়ে যায়। তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায়কারী। যারা তাদের নামাযে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে। ( সুরা মা’য়ারিজ ১৮-২৩ )
হাদিসে এসেছে, وكان –ﷺ– إذا حزبه أمرٌ فزِعَ إلى الصلاة রাসুলুল্লাহ ﷺ যখন পেরেশান হতেন নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন। (আবু দাউদ ১৩১৯)
রাসুলুল্লাহ ﷺ বেলাল রাযি.-কে বলতেন, أقم الصلاة أرحنا بهاনামাযের ইকামত দাও, এর মাধ্যমে আমাকে প্রশান্তি দাও। (আবু দাউদ ৪৯৮৫)
,
★পিতা মাতা সেই সন্তানের জন্য বেশি বেশি করে দোয়া করবেন। কারণ, যেসব দোয়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে কবুল হয়ে থাকে, তার মধ্যে পিতা-মাতার দোয়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে কবুল হয়। তাই তাদের জন্য বারবার দোয়া করবেন।
,
কোরআনে বর্ণিত এ দোয়াটি করতে পারেন—
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের জীবনসঙ্গীর পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ দান করুন। (সূরা ফুরকান ৭৪)
,
আবু সাঈদ রাযি.থেকে বর্ণিত, জিবরীল আ. রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে এসে বললেন, ইয়া মুহাম্মদ! আপনি কি অসুস্থতা বোধ করছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি (জিবরীল) বললেন,
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
অর্থাৎ, আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি, সে সব জিনিস থেকে, যা আপনাকে কষ্ট দেয়, সব প্রাণের অনিষ্ট কিংবা হিংসুকের বদ নজর থেকে আল্লাহ আপনাকে শিফা দিন; আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি। (মুসলিম ৫৫১২)
সুতরাং দোয়াটি পড়ে সন্তানকে বার বার ফুঁ দিন। ইনশা-আল্লাহ, আল্লাহ তাআলা ধীরে ধীরে সুস্থ করে দিবেন।
,
রাসূলুল্লাহ ﷺ হাসান ও হুসাইন রাযি.-কে এই বাক্যগুলো দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করতেন,
أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
অর্থাৎ, আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহ্র কালামের আশ্রয়ে রাখতে চাই সব ধরনের শয়তান হতে, কষ্টদায়ক বস্তু হতে এবং সব ধরনের বদ-নজর হতে।
(দোয়াটি এক সন্তানের জন্য পড়লে ‘উয়ীযুকা’, দুইজনের জন্য ‘উয়ীযুকুমা’ আর দুইয়ের অধিক হলে ‘উয়ীযুকুম’ বলতে হবে।) (বুখারী ৩৩৭১)
সন্তানকে উক্ত দোয়া প্রতি দিন তিন বা ততোধিক বার পড়ে ফুঁ দিবেন। ইনশা-আল্লাহ, ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবে।
,
আনাস রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এই বলে দোয়া করতেন যে,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْبَرَصِ وَالْجُنُونِ وَالْجُذَامِ وَمِنْ سَيِّئْ الْأَسْقَامِ
হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাইছি আপনার কাছে শ্বেতকুষ্ঠ, উম্মাদ রোগ, কুষ্ঠ রোগ ও তামাম খারাপ ব্যধি থেকে। (আবূ দাঊদ ১৫৫৪)
,
★★যদি এক্ষেত্রে কেহ তাকে যাদু করে থাকে,সেক্ষেত্রে শায়েখ উমায়ের আল কোব্বাদী সাহেব দাঃবাঃ বলেছেন যে যাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। এর পদ্ধতি হচ্ছে- যাদুতে আক্রান্ত রোগীর উপর অথবা কোন একটি পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা আরাফ, সূরা ইউনুস, সূরা ত্বহা এর যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো পড়বে। এগুলোর সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে এবং রোগীর জন্য দোয়া করবে।
,
বিশেষতঃ যে দুআটি রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে সাব্যস্ত হয়েছে:
اللَّهُمَّ ربَّ النَّاسِ، أَذْهِب الْبَأسَ، واشْفِ، أَنْتَ الشَّافي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفاءً لاَ يُغَادِرُ سقَماً
(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)
জিব্রাইল আ. নবী ﷺ-কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন সেটাও পড়া যেতে পারে।
,
সে দুআটি হচ্ছে-
بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ , مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنٍ أَوْ حَاسِدٍ , اللَّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
(অর্থ- আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।)
,
এই দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন।
আলেমগণ বলেছেন, এ দোয়াগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি সে পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে প্রয়োজনমত একবার বা একাধিক বার গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে।