আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
234 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমি আমার ওয়াইফ কে রাগের মাথায় এই শর্ত দিয়েছি যে, সে যদি কখনো আমার সাথে অন্য কোন পুরুষের তুলনা করে তাহলে তার উপর তালাক পতিত হবে। তারপর সে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে আমি যতবার এই রকম তুলনা করব ততবারই কি আমার তালাক পতিত হবে? তখন আমি বলেছিলাম যে হ্যাঁ, কিন্তু আমার সত্যিকার অর্থে নিয়ত ছিল শুধুমাত্র প্রথমবারের বেলায়, দ্বিতীয়বার আর তৃতীয় বার বললেও তালাক হবে তা শুধু তাকে কাজটা থেকে বিরত রাখার জন্য জন্য কথাটা বলেছিলাম। উল্লেখ্য যে এ কথা বলার পর সে একবার তুলনা অলরেডি করে ফেলেছে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে দ্বিতীয় এবং তৃতীয়বার সে যদি কখনো এই কাজটা করে তাহলে কি আমাদের দ্বিতীয় ,তৃতীয় তালাক ও পতিত হয়ে যাবে? এবং এই শর্ত কি উঠে না কোন সুযোগ আছে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/19204/    নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

তালাক শব্দ। এটি খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যেআল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক। (আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।)

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে সেই শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

«" وإذا أضافه إلى شرط وقع عقيب الشرط مثل أن يقول لامرأته إن دخلت الدار فأنت طالق " وهذا بالاتفاق لأن الملك قائم في الحال والظاهر بقاؤه إلى وقت وجود الشرط فيصح يمينا أو إيقاعا "» - «الهداية في شرح بداية المبتدي» (1/ 244)

মর্মার্থ-তালাককে যদি স্বামী কোনো শর্তের সাথে সম্বন্ধযুক্ত করে, তাহলে শর্ত পাওয়া গেলেই সাথে সাথে তালাক পতিত হবে। যেমন স্বামী তার স্ত্রীকে বলল,যদি তুমি ঘরে প্রবেশ করো,তাহলে তালাক। এই তালাক পতিত হওয়াটা সর্বসম্মতিক্রমে সাব্যস্ত হয়েছে।

শর্তের মাধ্যমে তালাক প্রদাণের জন্য নিম্নোক্ত হরফ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যথা-

(১)إنْ-যদি

(২)َإِذَا-যখন

(৩)َإِذْمَا-যখন

(৪)َكُلُّ-সব

(৫)َكُلَّمَا-যখনই

(৬)مَتَى-যখন

(৭)مَتَى مَا-যখন

বাক্যর প্রারম্ভে এ সকল শব্দ প্রয়োগ করে কোনো কাজের সাথে সম্পর্কিত করে তালাক প্রদাণ করলে যখনি উক্ত শর্ত পাওয়া যাবে, তখন তৎক্ষণাৎ তালাক পতিত হয়ে উক্ত শর্তযুক্ত বাক্য বিনষ্ট হয়ে যাবে। পরবর্তীতে একাজের পূনরাবৃত্তি ঘটলে আর তালাক পতিত হবে না। তবে শুধুমাত্র ৫ নং বাক্য এর বিপরিত। এটা ব্যবহার করলে যখনই শর্ত পাওয়া যাবে তখনই তালাক পতিত হতে থাকবে। যতক্ষণ না উক্ত বিয়ে বন্ধন শেষ হচ্ছে। শরীয়া মোতাবেক দ্বিতীয়বার উক্ত স্বামী উক্ত স্ত্রীকে বিয়ে করলে তখন আর তালাক পতিত হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪১৫)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/10666  

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার প্রথম বাক্য দ্বারা একবারই উদ্দেশ্য ছিল অর্থাৎ উক্ত শর্ত পাওয়া গেলে শুধু এক তালাক পতিত হবে। কিন্তু স্ত্রীর কথার প্রেক্ষিতে আপনি যখন “হ্যাঁ” সূচক বাক্য দ্বারা স্পষ্ট ভাবে স্ত্রীর কথার প্রতি উত্তর করেছেন তখন এই শর্তটি আর এক তালাকের সাথে সম্পৃক্ত নেই। বরং যতবার শর্ত পাওয়া যাবে ততবার তালাক পতিত হবে। ইসলাম বাহ্যিক অবস্থার উপর হুকুম দেয়। বিধায় এমতাবস্থায় আপনার নিয়তের কোন ধর্তব্য হবে না।

সুতরাং অলরেডি একটি শর্ত পাওয়ার দরুণ এক তালাক পতিত হয়েছে। পরবর্তিতে ২য় ও ৩য় বার উল্লেখিত শর্ত পাওয়া গেলে ২য় ও ৩য় তালাকও পতিত হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...