আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ,

আমি একজনকে পছন্দ  করতাম। কিন্তু যখন বুঝেছি এটা ইসলামিক ভাবে হারাম তখন থেকে বিয়ের জন্য চেষ্টা করে গিয়েছি। বিয়ের জন্য একটা ছেলে যতটুকু সামর্থবান হওয়া প্রোয়োজন সেই ছেলে তা অর্জন করেছে। কিন্তু আমাদের এলাকায় সাধারন নিয়ম হলো এলাকার বাইরে বিয়ে দেওয়া হয় না মেয়েদের এবং ছেলেকে অবশ্যই প্রবাসী হতে হয় এবং উচ্চ অঙ্কের কাবিন ধার্য করা হয়। কারন তাদের ধারনা মজবুত কাবিন হলে বিয়ে টিকবে । যদি এরকমটা না হয় তাহলে আত্মীয়স্বজনরা কথা শুনায়। কিন্তু আমার পছন্দের ছেলে অন্য এলাকার এবং প্রবাসী নয় তাই আমার পরিবার এই বিয়েতে রাজি। ছেলের প্রবাসে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে কিন্তু তা আমার পরিবার বিশ্বাস করে না যেহেতু একই এলাকার না আমরা।   এদিকে বিয়েটা আমাদের জন্য জরুরী ছিল। আমরা থাকতে পারছিলাম একে অন্যকে ছাড়া। তাই বিয়ের কথা বার্তায় ঝামেলা হয়ে ভেঙ্গে যায়। আমি আমার পরিবারকে রাজি করাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি কিন্তু তাদের অহমিকার কারনে তারা যে কোন মূল্যে এই বিয়ে মেনে নিবে না। এমনকি আমি পায়েও ধরেছি কিন্তু আমার বাবা মা উলটো আমার কারে রিকুয়েস্ট করছে এই বিয়ে না করতে। তাই আমি পালিয়ে বিয়ে করি নি যেহেতু পরিবারের অমতে বিয়ে করাটা কল্যানকর নয় এবং এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছি। আমি পরিবারের বড় মেয়ে আমাকে অনার্স পাশ করিয়েছি তাই আমার পরিবার চায় বিয়ে হয়ে প্রবাসে গিয়ে আমি পরিবারের দায়িত্ব নেই। উল্লেখ্য আমার বাবা এখনো চাকুরি করে কিন্তু কিছুটা অসুস্থ। তাই তারা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেও এই বিয়েতে রাজি না। 

আমি আমার পুর্বের কৃতকর্মের জন্য মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি প্রতিনিয়ত। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল বাবা মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করা যাবে না এবং বাবা মা আমাদের ছোট থেকে অনেক কষ্ট করে বড় করেছে শুধুমাত্র এই অধিকারে তারা আমার বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারেন কিনা না? এটা কি ইসলামের দৃষ্টিতে তাদের অন্যায় হবে কিনা? আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তারা এতে কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। 

1 Answer

0 votes
by (583,050 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
সাবালক ছেলে বা মেয়ের সম্মতি ব্যতিত তাদেরকে বিবাহ দেওয়া অভিভাবকদের জন্য জায়েয হবে না।
যেমন রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لاَ تُنْكَحُ الْبِكْرُ حَتَّى تُسْتَأْذَنَ وَلاَ الثَّيِّبُ حَتَّى تُسْتَأْمَرَ فَقِيلَ يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ إِذْنُهَا قَالَ إِذَا سَكَتَتْ
কুমারী নারী বিয়ে দেয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার অনুমতি গ্রহণ করা হবে। আর বিধবা নারী বিয়ে দেয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার মত গ্রহণ করা হবে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তার অনুমতি কেমন করে? তিনি বললেন, যখন সে নীরব থাকে। (বুখারী ৬৪৯৭)

তবে জোর করে বিয়ে দেয়া যদিও একটি অনৈতিক কাজ, তবে মেয়ের সম্মতি থাকলেই তথা কবুল বলে নিলে, জোরপূর্বক হলেও বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। (রদ্দুল মুহতার ৪/৮৭ বাদায়ে’ ২/৬০২) 

আবু হুরায়রা রাযি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
ثَلاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ : النِّكَاحُ ، وَالطَّلاقُ ، وَالرَّجْعَةُ
তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যা গোস্বায় হোক বা হাসি ঠাট্টায় হোক সর্বাবস্থায় কার্যকরী হয়ে থাকে। বিবাহ, তালাক ও রজয়াত। (আবু দাউদ ২১৯৪ তিরমিযি ১১৮৪)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সাবালক সন্তানকে জোর করে বিয়ে দেওয়া কখনো জায়েয হবে না। তবে যদি জোর করার পরিপেক্ষিতে কোনো সাবালক সন্তান কবুল বলে নেয়, তাহলে জোর করা অভিভাবকের জন্য নাজায়েয হলেও সেই বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। 

অভিভাবকরা সন্তানে ভালো জন্যই সিদ্ধান্ত নেন। কেননা অভিভাবকরা কখনো সন্তানের অকল্যাণ কামনা করেন না। অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে, অভিভাবকরা যা বাচাই করেন, সেটাই সন্তানের জন্য পরবর্তীতে কল্যাণকর হিসেবে দেখা দেয়। 

হ্যা, অভিভাবকরা কখনো দ্বীনের তুলনায় দুনিয়াকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন, এক্ষেত্রে অভিভাবকদের কথা গ্রহণযোগ্য হবে না।বরং দ্বীনকে অগ্রাধিকার দেয়ার সকল প্রকার চেষ্টা প্রচেষ্টা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...