بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://www.ifatwa.info/58472/ নং ফাতাওয়ায় বলা হয়েছে যে,
নেককার
স্বামী/স্ত্রী পাওয়া এবং সুস্থ সবল সন্তানের পিতা-মাতা হওয়া, বান্দার উপর
আল্লাহ তা'আলার এক বিশেষ নেয়ামত।এজন্য প্রত্যেক স্বামী/স্ত্রী
এর জন্য মহান রবের শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ। এ বিশেষ নেয়ামতের অকৃতজ্ঞা প্রকাশ করার অর্থই
হল নিজের জীবনকে বিপর্যয়ের দিকে ঢেলে দেয়া। আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﺇِﺫْ ﺗَﺄَﺫَّﻥَ ﺭَﺑُّﻜُﻢْ ﻟَﺌِﻦ ﺷَﻜَﺮْﺗُﻢْ ﻷَﺯِﻳﺪَﻧَّﻜُﻢْ ﻭَﻟَﺌِﻦ ﻛَﻔَﺮْﺗُﻢْ
ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑِﻲ ﻟَﺸَﺪِﻳﺪٌ
যখন তোমাদের
পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।
(সূরা ইবরাহিম-৭) বান্দা গোনাহ করার পর যখন সে তাওবাহ করে নেয়,তখন আল্লাহ তা'আলা তার গোনাহকে ক্ষমা করে দেন,এমনকি তার গোনাহকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন
করে দেন।
আল্লাহ
তা'আলা বলেন,
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﺎ ﻳَﺪْﻋُﻮﻥَ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻟَﻬًﺎ ﺁﺧَﺮَ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻘْﺘُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲَ
ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﺎﻟْﺤَﻖِّ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺰْﻧُﻮﻥَ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻔْﻌَﻞْ ﺫَﻟِﻚَ
ﻳَﻠْﻖَ ﺃَﺛَﺎﻣًﺎ
এবং যারা
আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং
ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
ﻳُﻀَﺎﻋَﻒْ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻳَﺨْﻠُﺪْ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻬَﺎﻧًﺎ
কেয়ামতের
দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।
ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺄُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ
ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ
কিন্তু
যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত
করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
ﻭَﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﺘَﺎﺑًﺎ
যে তওবা
করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে
আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। (সূরা ফুরক্বান-৬৮-৭০)
গোনাহ করার
পর উক্ত গোনাহকে প্রকাশ না করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সাঃ দিয়েছেন। যেমন-
আবূ হুরাইরা
(রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ،
يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ
ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ
ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ
ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )
আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই
অন্যায় যে, কোন লোক
রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি।
অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ
খুলে ফেলল। (সহীহ বুখারী-৬০৬৯; সহীহ মুসলিম-২৯৯০)
তওবার পদ্ধতি ও শর্ত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/7936/
সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার
কথা অনুযায়ী ঐ বোনের স্বামী তার পূর্বের কৃত গুনাহসমূহকে হালকা ভাবে দেখছে। অথচ তওবা
কবুল হওয়ার জন্য শর্ত ছিল, পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া
এবং ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।
বিধায় তার তওবা কবুল হয়েছে কিনা তা আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন তবে আপাতত দৃষ্টিতে তার
মাঝে তওবা কবুলের শর্তসমূহ পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী যদি তওবার পদ্ধতি
ও শর্তসমূহ মেনে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। কোন
দ্বীনদার বোনের জন্য ব্যভিচারী স্বামী পাওয়া আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে পরীক্ষা। হতে
পারে আল্লাহ তায়ালা উক্ত বোনের মাধ্যমে তার স্বামীকে হেদায়াত দান করবেন ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে বোনের জন্য
উচিৎ স্বামীকে আরো পূর্ণভাবে ভালবাসা। যেন স্বামী স্ত্রীকেই বেশী সময় দেন এবং পর নারীকে নিয়ে কল্পনা করার সুযোগ না পান। সাধারণত এই
ধরণের অবস্থায় শয়তান স্বামী স্ত্রীর মাঝে ফাটল তৈরী করে। বিধায়, হাতশ হওয়া যাবে না।
বরং তিনি তার জন্য দোয়া করতে থাকবেন এবং
স্বামীকে স্থানীয় ভালো কোন আলেমের সোহবতে যাওয়ার জন্য বলবেন।
আল্লাহ ওয়ালাদের সোহবতে থাকলে মানুষ এজাতীয় গোনাহ থেকে সহজে বাঁচতে পারে।
উক্ত বোন
সাধ্যানুযায়ী সবর ও শতচেষ্টার পরও যদি স্বামীর মাঝে কোন
পরিবর্তন না হয় তাহলে ন্যায়সঙ্গত ভাবে আলোচনা করে তালাক নেওয়ার সুযোগ থাকবে।