আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
205 views
in পবিত্রতা (Purity) by (2 points)
একজন মেয়ের স্বামী বিয়ের আগে যেনা, ব্যভিচার করত।কিন্তু বিয়ে হয় তার মত পবিত্র,সৎ নারীর সাথে। কিন্তু বিয়ের পর ও সে নামায,রোজা,কিছুই পালন করেনি। বরং মদ পান,গাঞ্জা, অই যেনাকারীনীকে স্মরন করা,চোখের জিনা সহ সব ধরনের খারাপ কাজ ই করে গিয়েছে।স্ত্রীর সাথেও সব সময় দূর দূর থাকা, মনমালিন্য থাকা,কখনো বুঝতে না চাওয়া। তার এইসব আচরন দেখে স্ত্রীর সন্দেহ হয়। অনেক চেষ্টার পর ও কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় অতীত সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়। ততদিনে ৫ বছর পার হয়ে গিয়েছে।পরিশেষে জানতে পারে সে একজন পতিতা যেনা কারী ছিল বিয়ের আগে। তাকে জিজ্ঞেস করায় বলে মুখে তওবা করেছে।⛔তাহলে পাপ কাজ বর্তমানেও করতে থাকায়,তার তওবা কি শুদ্ধ হলো? এর পর সে স্বামীকে বলে পূর্নাংগ রূপে তওবা করতে এবং সব হারাম কাজ বাদ দিতে। স্বামী বর্তমানে কিছু দিন নামায পড়ছে নিয়মিত। কিন্তু ফজর পড়তে অনাগ্রহী।কাযা পড়েন। তবে বরাবরই বলছেন যে, আগের যেনা ব্যাভিচার ছিল বয়সের দোষ, এমন হতেই পারে,এইটা জাস্ট ফান ছিল। স্ত্রী ছিল না বলে এমন করেছে।এইটাই ঠিক বলে মনে হয়েছে। তওবা করলেই তো হলো। এই কথা স্ত্রীর কাছে ভালো লাগে নি। তার মতে শিরকের পর যেনাই বড় গুনাহ।তার আর ও আফসোস বা ভুল করেছে এমন কিছু বলা উচিত ছিল।এবং জীবন যাপনেও অনুশোচনা বা তওবাকারীর মত তেমন তো ছিলই না।স্ত্রী যদি স্বামীর জন্য অপেক্ষা করতে পারে তাহলে স্বামী কেনো করেননি। এখন স্ত্রীর কাছে মনে হচ্ছে তার বিশ্বাস কাচের টুকরার মত ভেংগে গেছে।⛔ সে নিজে সৎপবিত্র হয়েও কেনো এমন স্বামী পেলেন।তবে কি আল্লাহ তার উপর অসুন্তষ্ট,তবে কেনো! স্ত্রীর জানামতে সে কখনো পাপ কাজ করেনি।নাকি রাগান্বিত নাকি পরীক্ষা করছেন তাকে?সে এই ভয়ে অত্যন্ত অধৈর্য এবং শংকিত। আর স্বামীর এই কাজ জানার পর তার স্বামীর প্রতি ঘৃনা কাজ করছে। কোনো ভাবেই তাকে পবিত্র মনে হয় না।প্রতারণা মনে হয়।যেহেতু তওবার পর ও অই যেনাকারীনিদের নিয়ে ভেবেছে।এই ব্যাপারে তার মন কিছুইতেই শায় দিচ্ছে না যে, তার স্বামীকে আর ও পতিতা দেখেছে,থেকেছে এবং সেখানে স্বামী বলছে এইটা শুধু বয়সের দোষ! মানসিক ভাবে স্ত্রীর অবস্থা খুবই করুন।সন্তান ও নেই যে তাকে নিয়ে জীবন পার করবে। আর সে খুবই হতাশ।কিভাবে বেচে থাকবেন তিনি।এইভাবে স্বামিকে ভালোবাসার বদলে, পবিত্র থাকার বদলে কি পেলো! তবে কি পবিত্র নারী ও এমন স্বামী পায়?প্রশ্ন গুলোর দ্রুত সমাধান দিলে উপকৃত হতেন তিনি।⛔কি করনীয় তার? যদিও আল্লাহ সব দেখেন, শুনেন জানেন।আলহামদুলিল্লাহ।
ধন্যবাদ

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/58472/    নং ফাতাওয়ায় বলা হয়েছে যে,

নেককার স্বামী/স্ত্রী পাওয়া এবং সুস্থ সবল সন্তানের পিতা-মাতা হওয়া, বান্দার উপর আল্লাহ তা'আলার এক বিশেষ নেয়ামত।এজন্য প্রত্যেক স্বামী/স্ত্রী এর জন্য মহান রবের শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ। এ বিশেষ নেয়ামতের অকৃতজ্ঞা প্রকাশ করার অর্থই হল নিজের জীবনকে বিপর্যয়ের দিকে ঢেলে দেয়া। আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻭَﺇِﺫْ ﺗَﺄَﺫَّﻥَ ﺭَﺑُّﻜُﻢْ ﻟَﺌِﻦ ﺷَﻜَﺮْﺗُﻢْ ﻷَﺯِﻳﺪَﻧَّﻜُﻢْ ﻭَﻟَﺌِﻦ ﻛَﻔَﺮْﺗُﻢْ ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑِﻲ ﻟَﺸَﺪِﻳﺪٌ

যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। (সূরা ইবরাহিম-৭) বান্দা গোনাহ করার পর যখন সে তাওবাহ করে নেয়,তখন আল্লাহ তা'আলা তার গোনাহকে ক্ষমা করে দেন,এমনকি তার গোনাহকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেন।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﺎ ﻳَﺪْﻋُﻮﻥَ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻟَﻬًﺎ ﺁﺧَﺮَ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻘْﺘُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﺎﻟْﺤَﻖِّ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺰْﻧُﻮﻥَ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻔْﻌَﻞْ ﺫَﻟِﻚَ ﻳَﻠْﻖَ ﺃَﺛَﺎﻣًﺎ

এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।

ﻳُﻀَﺎﻋَﻒْ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻳَﺨْﻠُﺪْ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻬَﺎﻧًﺎ

কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।

ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺄُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ

কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

ﻭَﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﺘَﺎﺑًﺎ

যে তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। (সূরা ফুরক্বান-৬৮-৭০)

গোনাহ করার পর উক্ত গোনাহকে প্রকাশ না করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সাঃ দিয়েছেন। যেমন-

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,

عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। (সহীহ বুখারী-৬০৬৯; সহীহ মুসলিম-২৯৯০)

তওবার পদ্ধতি ও শর্ত সম্পর্কে  বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/7936/

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনার কথা অনুযায়ী ঐ বোনের স্বামী তার পূর্বের কৃত গুনাহসমূহকে হালকা ভাবে দেখছে। অথচ তওবা কবুল হওয়ার জন্য শর্ত ছিল, পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া এবং ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা। বিধায় তার তওবা কবুল হয়েছে কিনা তা আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন তবে আপাতত দৃষ্টিতে তার মাঝে তওবা কবুলের শর্তসমূহ পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী যদি তওবার পদ্ধতি ও শর্তসমূহ মেনে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। কোন দ্বীনদার বোনের জন্য ব্যভিচারী স্বামী পাওয়া আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে পরীক্ষা। হতে পারে আল্লাহ তায়ালা উক্ত বোনের মাধ্যমে তার স্বামীকে হেদায়াত দান করবেন ইনশাআল্লাহ।

 প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে বোনের জন্য উচিৎ স্বামীকে আরো পূর্ণভাবে ভালবাসা। যেন স্বামী স্ত্রীকেই বেশী সময় দেন এবং পর নারীকে নিয়ে কল্পনা করার সুযোগ না পান। সাধারণত এই ধরণের অবস্থায় শয়তান স্বামী স্ত্রীর মাঝে ফাটল তৈরী করে। বিধায়, হাতশ হওয়া যাবে না। বরং তিনি তার জন্য দোয়া করতে থাকবেন এবং স্বামীকে স্থানীয় ভালো কোন আলেমের সোহবতে যাওয়ার জন্য বলবেন। আল্লাহ ওয়ালাদের সোহবতে থাকলে মানুষ এজাতীয় গোনাহ থেকে সহজে বাঁচতে পারে।

উক্ত বোন সাধ্যানুযায়ী সবর ও শতচেষ্টার পরও যদি স্বামীর মাঝে কোন পরিবর্তন না হয় তাহলে ন্যায়সঙ্গত ভাবে আলোচনা করে তালাক নেওয়ার সুযোগ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
এসব ক্ষেত্রে বিয়ে কি নবায়ন করতে হবে ? যেখানে স্বামী বিয়ের আগে যিনা কারী এবং বেনামাজী ছিল এবং বিয়ের আগে তওবা করে নি ?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...