আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
960 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম
আজকে(১৭-১-২১) আমি যানবাহনে থাকার ফলে আছরের নামাজ আদায় করতে দেরি হয়। আমি যখন সালাত শুরু করি তখন 5:22 বাজে এবং যখন শেষ করি তখন 5:26 বাজে। (স্তান:- ঢাকা)

১) আমার নামাজ কি ওয়াক্তের মধ্যে হয়েছে? না হলে কি করব?
২) আসরের নামাজের  ওয়াক্ত শেষ হয় কখন(মাগরিবের কত মিঃ আগে) ?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عن أبي هريرة: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من أدرك من الصبح ركعة قبل أن تطلع الشمس، فقد أدرك الصبح، ومن أدرك ركعة من العصر قبل أن تغرب الشمس، فقد أدرك العصر»
তরজমাঃ-যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের পূর্বে ফজরের এক রা'কাত নামাযের সময় পাবে সে যেন ফজরের নামাযকে পেয়ে গেল।যে ব্যক্তি সূর্যাস্তের পূর্বে আসরের এক রা'কাত নামাযের সময় পাবে সে যেন আসরের নামাযকে পেয়ে গেল।(সহীহ বুখারী-৫৭৯,সহীহ মুসলিম-৬০৮)

 কেউ যদি সূর্যাস্তের পূর্বে ঐ দিনের আসরের এক রা'কাত নামায পড়ার পরিমাণ সময় পায়,এবং সে নামাযে দাড়িয়ে যায় অতঃপর নামাযের মধ্যেই সূর্যাস্ত হয়ে যায়,তাহলে তার নামায ফাসিদ হবে না।এটা হানাফি মাযহাবের সিদ্ধান্ত।এবং অন্যান্য তিন মাযহাবে ফুকাহায়ে কেরামগণও এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
فإذا غربت الشمس في أثناء الصلاة لم يفسد العصر؛ لأنه ما بعد الغروب كامل كما دل فيه لأن ما وجب ناقصا يتادى كاملا بطريق الأولى
যদি আছরের নামাযের সময় সূর্যাস্ত হয়ে যায়,তাহলে ঐ আছরের নামায ফাসিদ হবে না।কেননা সূর্যাস্তর পর সময়টা কামিল(ত্রুটিহীন)।যেহেতু নামায শুরু করার পূর্ব মূহুর্তটা নামায ফরয হওয়ার সবব বা কারণ।তাই বলা যায় তার উপর নাক্বিসভাবে তথা ত্রুটিপূর্ণ ওয়াক্তে বা অবস্থায় নামায ফরয হয়েছে।আর যে নামায ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় ফরয হয়েছিলো এবং শুরুও হয়েছিলো,সে নামায কামিল ওয়াক্ত তথা ত্রুটিহীন অবস্থায় উত্তমভাবে আদায় হবে।(বেনায়া শরহে হেদায়া-২/২৩-শামেলা)

সূর্যাস্তের সময় ঐ দিনের আছরের নামায হবে। 
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-২/৩৫;)

মাবসুত গ্রন্থ প্রণেতা বিশিষ্ট হানাফি ফকিহ আল্লামা সারখাসী রাহ বলেনঃ
(إلا عصر يومه فإنه يؤديها عند غروب الشمس) لأن هذا الوقت سبب لوجوبها حتى لو أسلم الكافر أو بلغ الصبي في هذا الوقت يلزمه أداؤها فيستحيل أن يجب عليه الأداء في هذا الوقت ويكون ممنوعا من الأداء وعلى هذا لو غربت الشمس وهو في خلال العصر يتم الصلاة بالاتفاق، ولو طلعت الشمس وهو في خلال الفجر فسدت صلاته عندنا، وعند الشافعي لا تفسد اعتبارا بحالة الغروب واستدل بقوله - عليه الصلاة والسلام - «من أدرك ركعة من الفجر قبل طلوع الشمس فقد أدرك».
মাকরুহ ওয়াক্ত সমূহে নামায পড়া যাবে না।তবে ঐ দিনের আছরের নামায পড়া যাবে।তথা সূর্যাস্তের সময় ঐ দিনের আছরের নামায পড়া যাবে।কেননা ঐ সময়টাই মূলত সালাত ওয়াজিব হওয়ার মূল সবব বা কারণ।এমনকি যদি ঐ সসময় কোনো কাফির মুসলমান হয় বা কোনো বালক বালেগ হয়,তাহলে এমতাবস্থায় তার উপর উক্ত ওয়াক্তের নামায আদায় করা লাযেম।যদি বিষয়টা বাস্তবে এমনই হয়ে থাকে তাহলে উক্ত ওয়াক্তে নামায ওয়াজিব হওয়া এবং আদায় নিষিদ্ধ হওয়া উভয়টা একত্রিত হয়ে যা যা প্রায় অসম্ভব বললে অত্যুক্তি হবে না।এজন্য বলা যায় যে,আছরের নামায পড়া অবস্থায় যদি সূর্যাস্ত হয়ে যায়,তাহলে সর্বসম্মতিক্রমে নামায পড়া সেই সময়েও শুদ্ধ হবে। কিন্তু ফজরের সালাত পড়া অবস্থায় যদি সূর্যোদয় হয় তাহলে আমাদের হানাফি উলামায়ে কেরামদের মতে তা ফাসিদ হয়ে যাবে।এবং ইমাম শা'ফেয়ী রাহ এর মতে আছরের মত ফজরের সালাত ও ফাসিদ হবে না।শা'ফেয়ী হযরাতগণ এক্ষেত্রে ঐ হাদীস দ্বারা দলিল পেশ করেন যে হাদীসে বলা হয়েছে,
"যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের পূর্বে ফজরের এক রা'কাত নামায পেয়ে গেল সে যেন সমস্ত নামায পেয়ে গেল।


তবে সঠিক সময়ে নামায পড়াই প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
যেমনঃ-আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗَﻀَﻴْﺘُﻢُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﻓَﺎﺫْﻛُﺮُﻭﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻗِﻴَﺎﻣًﺎ ﻭَﻗُﻌُﻮﺩًﺍ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺟُﻨُﻮﺑِﻜُﻢْ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺍﻃْﻤَﺄْﻧَﻨﺘُﻢْ ﻓَﺄَﻗِﻴﻤُﻮﺍْ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻛِﺘَﺎﺑًﺎ ﻣَّﻮْﻗُﻮﺗًﺎ
অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামায ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
(সূরা আন-নিসা-১০৩)
বিশেষকরে আছরের নামায সঠিক সময়ে পড়া বিশেষ গুরুত্ববহ।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﺣَﺎﻓِﻈُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺼَّﻠَﻮَﺍﺕِ ﻭﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻮُﺳْﻄَﻰ ﻭَﻗُﻮﻣُﻮﺍْ ﻟِﻠّﻪِ ﻗَﺎﻧِﺘِﻴﻦَ
সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।(সূরা বাক্বারা-২৩৮)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার আছরের নামায আদায় হয়েছে।

(২) সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আছরের ওয়াক্ত।অবশ্যই সূর্য লালটি বর্ণ ধারণ করার পর নামাযের ওয়াক্তটি দুর্বল হয়ে যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 2,126 views
0 votes
1 answer 328 views
...