আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
170 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (19 points)
এক বোনের দ্বীনের বুঝ হওয়ার আগে তার এক ছেলের সাথে পরিচয় হয়।  ছেলেটা নানানভাবে তাকে হারাম সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়ার পরে সে কোনোভাবে রাজি হচ্ছিলো না। কিন্তু অনেক মাস পর হঠাৎ করেই বোনটা হারাম সম্পর্কে জরিয়ে পরে কিন্তু যখন দ্বীন সম্পর্কে বুঝতে পারে বোনটা এই হারাম থেকে বের হতে চায়। কিন্তু ছেলেটা কিছুতেই বের হতে চাচ্ছিলো না। এমন অবস্থায় বোনটা তাকে সরাসরি জানিয়ে দেয় যে সে এই হারাম সম্পর্ক রাখতে পারবে না। তারপর থেকে ছেলেটা নানানভাবে বোনটাকে বিয়ের কথা বলতে থাকে। বোনটা জানায় যে তার পরিবার কোনো বেকার ছেলেকে মেনে নেবে না। এরপর বোনটা তাকে পড়াশুনা করতে বলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করে এবং আল্লাহকে ভয় করতে বলে। কিন্তু ছেলেটা তাকে বারবার লুকিয়ে বিয়ে করে রাখার কথা বলতে থাকে যাতে বোনটার অন্য কোথাও বিয়ে না দিতে পারে। কিন্ত বোনটা রাজি হয় না। এক পর্যায়ে বোনটা রাজি হয় এবং মেয়ে পক্ষের কোনো সাক্ষী ছাড়া ছেলের মা এবং দুলাভাই সহ কাজী অফিসে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করানো হয়। উল্লেখ্য যে ছেলের মা এবং দুলাভাইই ছেলে এবং মেয়ে উভয় পক্ষের সাক্ষীর কাজ করে। এবং ২ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে। মুখে কোনো কবুল বলানো হয় নি শুধুমাত্র একটা সই নেয়া হয়েছে। বোনটা সই করার পর বুঝতে পারে সে ভুল করেছে এরপর সে তার বিপদের আশংকা করে চুপচাপ থেকে ওখান থেকে বেরিয়ে আসে। বোনটি আন্দাজ করে তাকে হয়তো কোনো কিছুর সাহায্যে রাজি করানো হয়েছে। হয়তো বা জাদুটোনার সহায়তা নেয়া হয়েছে।( সে বাবা মায়ের অমতে বিয়ে করার পক্ষে ছিলোনা কখনোই।) এরপর সে বাসায় আসার পর জ্বর ওঠে। কিছুদিন পর নেমে যায়। (এরপর থেকে সে সবসময় কোনো না কোনো কারনে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকে  এখনো) এরপর সে সিদ্ধান্ত নেয় তার ভুল শুধরে নেয়ার। সে তার বাসায় জানায় কিন্তু বাসার কেউ জাদু টোনায় বিশ্বাস না করায় সে কাউকে এই বিষয়ে বলে নি। এবং বোনটা নিজেও জাদু করা হয়েছিলো কিনা এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন। পরবর্তীতে সে তার ভুল স্বীকার করায় তার বাবা মা তাকে কোর্টে নিয়ে একপাক্ষিকভাবে তালাক দেয়ায় এবং কাগজ ছেলের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু ছেলের পক্ষ থেকে তালাক দেয়া হয়েছে কিনা সেটা এখনো অজানা। এমতাবস্থায়,  বোনটির বিয়ে কি সহীহ ছিলো?  (মুখে কবুল না বললেও তালাকের সময় তালাক উচ্চারণ করানো হয়েছিলো)  আর বিয়ে সহীহ হলেও কি তার তালাক গ্রহনযোগ্য হয়েছে? বোনটিকে এখন তার বাবা মা বিয়ে দিতে চাইছে তাই এটা জানা জরুরি যে সে অন্য কোনো জায়গায় বিয়ে করতে পারবে কিনা৷

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/11771 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,    
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। 

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে উক্ত বিবাহ শরীয়তের বিধান অনুসারে সহীহ হয়নি।
যেহেতু উক্ত বিবাহই শুদ্ধ হয়নি,তাই তালাকের তো প্রশ্নই উঠেনা। 

সুতরাং উক্ত মেয়ে অন্য যেকোনো জায়গায় বিবাহ করতে পারবে,এতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...