بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
https://ifatwa.info/30521/?show=30521#q30521 নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,
ইসলামে বিবাহ পূর্ব প্রেম স্পষ্ট
হারাম।
হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন-
اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ
وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْكَلَامُ
وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ
يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه
“দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা,
যবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তি, হাতের ব্যভিচার
হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা
বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য
অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মেশকাত ১/৩২)
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/3298/
দুনিয়ার আগুন শরীরের শুধু বাহ্যিক অঙ্গ
পোড়াতে পারে। পোড়াতে পারে না তা অভ্যন্তরীণ অঙ্গ। কিন্তু জাহান্নামের আগুনের এমন পাওয়ার
থাকবে যা জাহান্নামিদের শরীর পোড়ানোর পাশাপাশি তাদের হৃৎপিণ্ডও পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এটি আল্লাহর প্রজ্ব¡লিত অগ্নি, যা
তাদের হৃদয়কে গ্রাস করে ফেলবে।’ (সূরা হুমাজা : ৬-৭) দুনিয়ার আগুন লাল বর্ণের হয়ে থাকে।
কিন্তু জাহান্নামের আগুন তীব্র উত্তপ্ত হওয়ার দরুণ কালো বর্ণের হবে।
আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত।রাসূলুল্লাহ
সা: বলেন, ‘জাহান্নামের আগুন এক হাজার
বছর জ্বালানোর পর তা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। আবার এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা সাদা
বর্ণ হয়েছে। তারপর এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা কালো বর্ণ হয়েছে। এখন তা গভীর অন্ধকার
রাতের অন্ধকারের মতো কালো (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪৩২০)। ‘জাহান্নামিরা যখন পিপাসায় ছটফট
করবে তখন তাদেরকে গলিত পুঁজ পান করানো হবে, যা সে এক এক ঢোক করে
গিলবে’ (সূরা ইবরাহিম : ১৬-১৭)।
রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘পুঁজ যখন তার মুখের নিকটে নিয়ে আসা হবে,
সে তা অপছন্দ করবে। তারপর যখন আরো নিকটে নিয়ে আসা হবে, তখন তার মুখমণ্ডল পুড়ে যাবে এবং মাথার চামড়া গলে পড়ে যাবে। তারপর সে যখন তা
পান করবে তখন তার নাড়িভুঁড়ি গলে ছিন্নভিন্ন হয়ে মলদার দিয়ে বের হয়ে যাবে।’ (জামে তিরমিজি
:২৫৮৩)
ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ সা: এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন,
অর্থাৎ ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং পূর্ণ মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো
না।’ তারপর প্রিয় নবী সা: ইরশাদ করলেন, ‘যদি জাক্কুম গাছের একটা
ফোঁটা এই দুনিয়ায় পড়ে তাহলে দুনিয়াবাসীর জীবনোপকরণ বিনষ্ট হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় ওইসব
লোকের কেমন দুর্দশা হবে এটা যাদের খাদ্য হবে?’ (জামে তিরমিজি
: ২৫৮৫)
রাসূল সা: জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত
ব্যক্তির আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘জাহান্নামিদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শাস্তি ওই ব্যক্তির হবে, যাকে ফিতাসহ এক জোড়া জুতা পরিয়ে দেয়া হবে। এতে তার মগজ এমনভাবে টগবগ করবে গরম
পানির পাত্র যেমন টগবগ করে। সে ধারণা করবে তার থেকে কঠিন আজাব আর কেউই ভোগ করছে না।
অথচ সে হবে সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি। (সহিহ মুসলিম : ৩৬৪)
প্রিয় পাঠক! জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তির
যদি হয় এমন পাওয়ার তাহলে কঠিন শাস্তির পাওয়ার কেমন হবে? তা আমাদের ভাবতে হবে। প্রতিদিন কত গুনাহ আমরা
করে যাচ্ছি অহরহ। কখনো কি ভেবে দেখেছি, এর শাস্তি যদি আমাকে দেয়া
হয় তাহলে কিভাবে সহ্য করব? অথচ জাহান্নামে যাওয়ার জন্য একটি কবিরা
গুনাহ-ই যথেষ্ট। মহান আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের মাফ না করেন, তাহলে আমাদের কী উপায় হবে? আল্লাহ তায়ালা আমাদের জাহান্নামের
ভয়াবহ শাস্তি থেকে হিফাজত করুন।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই!
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উক্ত পরামর্শ দেওয়া সঠিক হয়েছে।
তবে আমরা তাকে পরামর্শ দিব যে, সত্যিই
যদি তিনি তাকে পছন্দ করেন ও
তাকে বিয়ে করতে চান তাহলে পারিবারিকভাবে উভয়ে দ্রুত বিয়ে করে ফেলা উচিত। আর যদি তাকে
বিয়ে করা সম্ভব না হয় তাহলে হারাম রিলেশন করা থেকে দূরে থাকতে হবে। তাকে সাধুবাদ জানায় যে, তিনি আল্লাহর জন্যই হারাম রিলেশন ত্যাগ করার ডিসিশন নিয়েছেন । আল্লাহ
তায়ালা তাকে সবর করার তৌফিক দান করুন।
সুতরাং কেউ যদি প্রেমিকাকে শরিয়ত সম্মত
পদ্ধতিতে পারিবারিকভাবে তাড়াতাড়ি বিয়ে করে, তাহলে বিয়েতে কোনো অসুবিধে নেই। বিয়ে জায়েজ হয়ে
যাবে। তবে বিয়ের আগে প্রেম করা জায়েজ নয়। বিয়ের আগে প্রেম করাটা ইসলামে নিষিদ্ধ। বিবাহপূর্ব হারাম রিলেশনের
জন্য খুব বেশী বেশী ইস্তেগফার ও দোয়া করা করতে হবে যেন আল্লাহ তায়ালা পূর্বের যাবতীয়
গুনাহ মাফ করে দেন।