আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
128 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি সুদের বিরোধী।কিন্তু আমার পরিবার ব্যাংকে চাকরী করা টা পছন্দ করেন।কারন এখানে বেতন বেশি দেওয়া হয়।আমার পরিবারকে বুঝানো সত্ত্বেও তারা মানতে রাজি না।তাই বাধ্য হয়ে আমি তাদেরকে খুশি করানোর জন্য ব্যাংকে এপ্লাই করেছি এবং পরীক্ষাও দিতে যাই।কিন্তু আমি ব্যাংকে চাকরীর জন্য একটুও পড়িনা।পরীক্ষাতেও ঠিকমত আন্সার করিনা।যাতে আমার চাকরী না হয়।নিরুপায় হয়ে আমি এই কৌশল অবলম্বন করে পরিবারকে খুশি রাখতেছি।

ইদানীং খুব অপরাধবোধে ভুগছি।আমি কি তাদের ধোঁকা দিচ্ছি?
আমাকে যখন জিজ্ঞেস করে, চাকরীর জন্য পড়ছি কিনা?আমি বলি যে,হ্যা পড়ছি।এখানেও মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছি!!অথচ মিথ্যা বলাতো কবীরা গুনাহ।

আল্লাহ কি এক্ষেত্রে আমার নিয়ত,অবস্থান, পরিস্থিতির জন্য আমাকে ক্ষমা করবেন??আমি কি করতে পারি??

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/50420/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে,

শরীয়তের বিধান মতে সূদ দেওয়া,গ্রহন করা,তাতে সহযোগিতা করা সবই হারাম।

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨]

হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮]

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০]

হাদিস শরিফে  এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.

আল্লাহর রাসূল সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

যদি ব্যাংকের এমন কোনো সেক্টরের কাজ হয়,যাতে সুদী কাজে জড়িত হতে হয় না।যেমনঃ ড্রাইভার, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, জায়েজ কারবারে বিনিয়োগ ইত্যাদি সেক্টর হয়,তাহলে যেহেতু এসবে সরাসরি সুদের সহায়তা নেই তাই এমন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে।

ব্যাংকের অবস্থা এই যে, তার পূর্ণ সম্পদ কয়েকটি বিষয়ের সমষ্টি। যথা-

১-মূলধন।

২-সঞ্চয়কারীদের জমাকৃত টাকা।

৩-জায়েজ ব্যবসার আমদানী।

৪-সুদ এবং হারাম ব্যাবসার আমদানী।

এ চারটি বিষয়ের মাঝে কেবল ৪র্থ সুরতটি হারাম। বাকিগুলো যদি কোন হারাম কাজ না হয় তাহলে মূলত জায়েজ।

যেসব ব্যাংকে প্রথম ৩টি বিষয়ের লেনদেন অধিক। আর ৪র্থ বিষয়টি তথা হারাম লেনদেনের লভ্যাংশ কম সেসব ব্যাংকে সেসব ডিপার্টমেন্টে চাকরী করা যাতে হারাম কাজ করতে না হয় তাহলে তা জায়েজ হবে। এবং বেতন নেওয়াও জায়েজ হবে। তবে উত্তম হল এ চাকরীও ছেড়ে দেয়া।

কিন্তু যদি হারাম আমদানী বেশি হয় হালালের তুলনায়, বা হারাম কাজে জড়িত হতে হয় তাহলে উক্ত ব্যাংকে চাকরী করা জায়েজ নয়। এ থেকে বেতন নেওয়াও জায়েজ নয়। বেতন নিলে তা হারাম হিসেবে গণ্য হবে। {ফাতওয়ায়ে উসমানী-৩/৩৯৪-৩৯৬}

ব্যাংকে চাকুরী সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

https://www.ifatwa.info/398

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেহেতু চাকুরীর জন্য নয়, বরং গুনাহ থেকে বাঁচতে আপনি শুধু বাহ্যিক ভাবে পরিবারকে খুশী করার জন্য ব্যাংকে পরীক্ষা দিতে চাচ্ছেন, এক্ষেত্রে এভাবে পরীক্ষা দেয়া যাবে। এতে গুনাহ হবে না। জায়েজ আছে। তবে মিথ্যা বলা যাবে না। আপনি অন্য হালাল চাকুরীর জন্য প্রস্তুতি নিবেন এবং পরিবার যখন জানতে চাইবে আপনি “হ্যাঁ” বলে অন্য বৈধ চাকুরী করার উদ্দেশ্য ও নিয়ত রাখবেন। যদিও তারা মনে করবেন আপনি ব্যাংক জবের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এটি একটি বৈধ কৌশল। এতে কোন গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...