মাশা আল্লাহ (ما شاء الله ) শব্দের অর্থঃ আল্লাহ যেমন চেয়েছেন।
যে কোনো সুন্দর এবং ভালো ব্যাপারে এটি বলা হয়। যেমন, মাশা আল্লাহ তুমি তো অনেক বড় হয়ে গেছো।
তবে বিস্ময়কর কোনো কিছু দেখলে এই শব্দ বলা হয়। অর্থাৎ যেকোনো সুন্দর ও ভালো ব্যাপারে এটি বলা হয়। যেমন—মাশাআল্লাহ, তুমি তো অনেক বড় আলেম হয়ে গেছ।
‘মাশাআল্লাহ’ একটি দোয়া জাতীয় বাক্য। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এর অর্থ হচ্ছে, ‘আল্লাহ তায়ালা যা চান।’ কোনো ভালো জিনিস, পার্থিব লাভ, ধন-সম্পত্তি অর্জন ও উন্নতির পর এটা বলা হয়। এজন্য যখন কেউ অন্যের ভালো কোনো বিষয় ও উন্নতি দেখবেন তখন তার উচিত মাশাআল্লাহ বলা। এর মাধ্যমে ওই জিনিসটি অন্যের বদনজর থেকে রক্ষা পায়।
ভালো কিছু পেলে এর বিনিময়ে মাশাআল্লাহ বলার বিষয়টি আল্লাহ তায়ালা নিজেও পবিত্র কোরআনে শিক্ষা দিয়েছেন।
وَ لَوۡ لَاۤ اِذۡ دَخَلۡتَ جَنَّتَکَ قُلۡتَ مَا شَآءَ اللّٰہُ ۙ لَا قُوَّۃَ اِلَّا بِاللّٰہِ ۚ اِنۡ تَرَنِ اَنَا اَقَلَّ مِنۡکَ مَالًا وَّ وَلَدًا ﴿ۚ۳۹﴾
তুমি যখন তোমার বাগানে প্রবেশ করলে তখন কেন বললে না, আল্লাহ যা চান তা-ই হয়, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোন শক্তি নেই? তুমি যদি ধনে ও সস্তানে আমাকে তোমার চেয়ে নিকৃষ্টতর মনে কর।
(সুরা কাহাফ ৩৯)
অর্থাৎ “আল্লাহ যা চান তাই হবে। আমাদের যদি কোন কিছু চলতে পারে তাহলে তা চলতে পারে একমাত্র আল্লাহরই সুযোগ ও সাহায্য -সহযোগিতা দানের মাধ্যমেই।
এ আয়াত থেকে সালফে সালেহীনের কেউ কেউ বলেনঃ কোন পছন্দনীয় বস্তু দেখার পর যদি (مَا شَاءَ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ) বলে দেয়া হয়, তবে কোন বস্তু তার ক্ষতি করে না। [ইবন কাসীর] অর্থাৎ পছন্দনীয় বস্তুটি নিরাপদ থাকে বা তাতে চোখ লাগার মত ক্ষতি হয় না।
এই জন্যই হাদীসে এসেছে যে, ‘যাকে কারো মাল, সন্তান-সন্ততি অথবা অবস্থা ভাল লাগে, সে যেন বলে, ‘মা শাআল্লাহু লা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ (তাফসীর ইবনে কাসীর, মুসনাদ আবূ ইয়া’লা)
সহীহ হাদীসেও এ আয়াতের মত একটি হাদীস এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললেনঃ “আমি কি তোমাকে জান্নাতের একটি মূল্যবান সম্পদের সন্ধান দেব না? সেটা হলো: “লা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।” [বুখারী: ৬৩৮৪, মুসলিম: ২৭০৪] আবার কোন কোন বর্ণনায় বলা হয়েছে, জান্নাতের সে মূল্যবান সম্পদ হলো: “লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”। [মুসনাদে আহমাদ: ২/৩৩৫]
এক্ষেত্রে বারাকাল্লাহ (আল্লাহ তায়ালা তোমাকে বরকত দান করুন) বলা যাবে,তাতেও কোনো সমস্যা নেই। বিষয়টি এমন নয় যে এক্ষেত্রে উপরোক্ত কোনো একটি বাক্য বলা ওয়াজিব,না বললে গুনাহ হবে।