আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,370 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (100 points)
মেয়েরা সালোয়ার নাভির নিচে পরতে পারবে কিনা?! জামা দিয়ে সম্পুর্ন শরীর ঢাকা থাকলেও কি সালোয়ার নাভির নিচে পরা নাজায়েজ হবে?! অনেকে বলে নাভির নিচে পরা সম্পুর্ন হারাম! এটা কতটা যুক্তিযুক্ত!

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মহিলা ও পুরুষের সতর কতটুকু? অর্থাৎ শরীরের কোন অংশ ঢেকে রাখা পুরুষ ও নারীর জন্য আবশ্যকীয়।
এক হল শরীরের পর্দা, আরেক হল শরীরের সতর।
পুরুষের সতর হল নাভি থেকে নিয়ে হাটু পর্যন্ত। অর্থাৎ এতটুকু স্থান অন্য ব্যক্তিদের সামনে ঢেকে রাখা ফরজ। বাকি মানুষের সামনে যাওয়ার সময় ক্ষেত্র ও সমাজ হিসেবে যা শালীন, ও তাকওয়া প্রকাশক করে এমন পোশাক পরিধান করা উত্তম।
আর মাহরামদের সামনে মহিলাদের সতর হল, মাথা, চুল, গর্দান, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা,ড় গর্দান সংশ্লিষ্ট সিনার উপরের অংশ ছাড়া বাকি পূর্ণ শরীর সতর। {ফাতাওয়া হিন্দিয়া-৫/৩২}
আর মহিলাদের নামাযের সময় হাত, পা, মুখ ছাড়া পূর্ণ শরীরই সতর।
ﻓﻰ ﺗﻨﻮﻳﺮ ﺍﻷﺑﺼﺎﺭ - ﻭَﺳَﺘْﺮُ ﻋَﻮْﺭَﺗِﻪِ ﻭَﻫِﻲَ ﻟِﻠﺮَّﺟُﻞِ ﻣَﺎ ﺗَﺤْﺖَ ﺳُﺮَّﺗِﻪِ ﺇﻟَﻰ ﻣَﺎ ﺗَﺤْﺖَ ﺭُﻛْﺒَﺘِﻪِ ﻭَﻟِﻠْﺤُﺮَّﺓِ ﺟَﻤِﻴﻊُ ﺑَﺪَﻧِﻬَﺎ ﺧَﻠَﺎ ﺍﻟْﻮَﺟْﻪِ ﻭَﺍﻟْﻜَﻔَّﻴْﻦِ ﻭَﺍﻟْﻘَﺪَﻣَﻴْﻦِ ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﺑﺎﺏ ﺷﺮﻭﻁ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﻣﻄﻠﺐ ﻓﻰ ﺳﺘﺮ ﺍﻟﻌﻮﺭﺓ - 1/404
মহিলাদের জন্য অন্য সময় গায়রে মাহরামের সামনে পূর্ণ শরীরই সতর। তবে অতীব প্রয়োজনে চেহারা, পা, হাত খোলা জায়েজ আছে। যেমন রাস্তায় প্রচন্ড ভীর হলে, আদালতে সাক্ষ্য দেয়া ইত্যাদি।
ﻋَﻦْ ﺃُﻡِّ ﺳَﻠَﻤَﺔَ، ﻗَﺎﻟَﺖْ : ” ﻟَﻤَّﺎ ﻧَﺰَﻟَﺖْ : } ﻳُﺪْﻧِﻴﻦَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻦَّ ﻣِﻦْ ﺟَﻠَﺎﺑِﻴﺒِﻬِﻦَّ { [ ﺍﻷﺣﺰﺍﺏ : 59 ] ، ﺧَﺮَﺝَ ﻧِﺴَﺎﺀُ ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِ ﻛَﺄَﻥَّ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﺀُﻭﺳِﻬِﻦَّ ﺍﻟْﻐِﺮْﺑَﺎﻥَ ﻣِﻦَ ﺍﻷَﻛْﺴِﻴَﺔِ “
ﺇﺳﻨﺎﺩﻩ ﻗﻮﻱ . ﺍﺑﻦ ﺧﺜﻴﻢ - ﻭﻫﻮ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﺜﻤﺎﻥ - ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ . ﺍﺑﻦ ﺛﻮﺭ : ﻫﻮ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺛﻮﺭ ﺍﻟﺼﻨﻌﺎﻧﻲ، ﻭﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋُﺒﻴﺪ : ﻫﻮ ﺍﺑﻦ ﺣِﺴﺎﺏ ﺍﻟﻐُﺒَﺮﻱ .
ﻭﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺣﺎﺗﻢ ﻓﻲ “ ﺗﻔﺴﻴﺮﻩ ” ﻛﻤﺎ ﻓﻲ “ ﺗﻔﺴﻴﺮ ﺍﺑﻦ ﻛﺜﻴﺮ ” /6 48 – 49 ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﺍﻟﺰﻧﺠﻲ ﻣﺴﻠﻢ ﺑﻦ ﺧﺎﻟﺪ، ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺧﺜﻴﻢ، ﺑﻪ ﻣﻄﻮﻻً .
হযরত উম্মে সালামা রাঃ বলেন, যখন কুরআনে কারীমের এ আয়াত ﻳُﺪْﻧِﻴﻦَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻦَّ ﻣِﻦْ ﺟَﻠَﺎﺑِﻴﺒِﻬِﻦَّ
তথা “তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। [মাথার দিক থেকে]” -সূরা আহযাব-৫৯} নাজিল হয়, তখন আনসারী মহিলারা স্বীয় ঘর থেকে এমনভাবে বের হতো যেন তাদের মাথায় কাক বসে আছে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১০১}
হযরত মুফতী শফী রহঃ “আহকামুল কুরআন” গ্রন্থে লিখেন যে,
ﻓﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻵﻳﺔ ﺩﻻﻟﺔ ﻋﻠﻰ ﺃﻥ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺍﻟﺸﺎﺑﺔ ﻣﺄﻣﻮﺭﺓ ﺑﺴﺘﺮ ﻭﺟﻬﻬﺎ ﻣﻦ ﺍﻷﺟﻨﺒﻴﻴﻦ
এ আয়াত একথা বুঝাচ্ছে যে, যুবতী মেয়েরা ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এমনভাবে বের হবে যেন তাদের চেহারা পরপুরুষের সামনে প্রকাশিত না হয়। {আহকামুল কুরআন-৩/১৪৫৮}
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ :
ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓُ ﻋَﻮْﺭَﺓ،ٌ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺧَﺮَﺟَﺖْ ﺍﺳْﺘَﺸْﺮَﻓَﻬَﺎ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ .
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, নারী জাতি হল আপাদমস্তক সতর। যখনি সে বের হয়, তখনি শয়তান তাকে চমৎকৃত করে তোলে। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১৭৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২০৬৫, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৬৮৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৫৯৮}
অন্য বর্ণনায় এসেছে-
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ : « ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺗَﻄُﻮﻑُ ﺑِﺎﻟْﺒَﻴْﺖِ ﻭَﻫِﻲَ ﻣُﻨْﺘَﻘِﺒَﺔ«ً
হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ বাইতুল্লাহ তওয়াফ করতেন পর্দাবৃত অবস্থায়। {মুসন্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৮৮৫৯}
পর্দা পরপুরুষের সাথে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সৌন্দর্যমন্ডিত বস্তুও লুকানোও ফরজ।
কুরআনে কারীমে নির্দেশ এসেছে-
ﻭَﻗُﻞْ ﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻳَﻐْﻀُﻀْﻦَ ﻣِﻦْ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭِﻫِﻦَّ ﻭَﻳَﺤْﻔَﻈْﻦَ ﻓُﺮُﻭﺟَﻬُﻦَّ ﻭَﻟَﺎ ﻳُﺒْﺪِﻳﻦَ ﺯِﻳﻨَﺘَﻬُﻦَّ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﻇَﻬَﺮَ ﻣِﻨْﻬَﺎۖ ﻭَﻟْﻴَﻀْﺮِﺑْﻦَ ﺑِﺨُﻤُﺮِﻫِﻦَّ ﻋَﻠَﻰٰ ﺟُﻴُﻮﺑِﻬِﻦَّۖ [ ٢٤ :٣١
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে {সূরা নূর-৩১}
এ আয়াতে স্পষ্টভাষায় সৌন্দর্যকে লুকাতে আদেশ দেয়া হয়েছে। যেটা হল পর্দা করার মূল হাকীকত।
কিন্তু যা “সাধারণতঃ প্রকাশমান” বলে চেহারা ও হাত উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। যা তীব্র প্রয়োজনের সময় যেমন প্রচন্ড ভীর, আদালতে সাক্ষ্য প্রদান ইত্যাদি প্রয়োজনে খোলা জায়েজ আছে।
এ দুটি বিষয়কে পৃথক করা হয়েছে সতর থেকে। পর্দা থেকে নয়। অর্থাৎ এ দুটি অংশ সতরের অন্তর্ভূক্ত নয়। কিন্তু পর্দার অন্তর্ভূক্ত। এ কারণেই নামাযরত অবস্থায় হাত ও মুখ এবং পা ঢাকতে হয় না। এসব খোলা রেখেই নামায হয়ে যায়। কারণ এসব সতর নয়। আর নামাযে সতর ঢাকা ফরজ।
কিন্তু বাহিরে বের হওয়ার সময় যেহেতু সতরের সাথে সাথে পর্দা রক্ষা করাও ফরজ, এসব ঢেকে রাখা ফরজ।




এক মহিলার সামনে আরেক মহিলার সতর কতটুকু এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
(وَأَمَّا بَيَانُ الْقِسْمِ الثَّانِي) فَنَقُولُ: نَظَرُ الْمَرْأَةِ إلَى الْمَر


এক মহিলার সামনে আরেক মহিলার সতর কতটুকু এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
(وَأَمَّا بَيَانُ الْقِسْمِ الثَّانِي) فَنَقُولُ: نَظَرُ الْمَرْأَةِ إلَى الْمَرْأَةِ كَنَظَرِ الرَّجُلِ إلَى الرَّجُلِ، كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ. وَهُوَ الْأَصَحُّ
এক মহিলার সামনে অন্য মহিলার সতরঃ
এক মহিলা অন্য মহিলার ঐ সমস্ত অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে,যা এক পুরুষ অন্য পুরুষের দিকে পারে।যখিরা নামক কিতাবে বর্ণিত আছে।এবং এটাই বিশুদ্ধ মত।
এক পুরুষ অন্য পুরুষের কোন কোন অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে,
এসম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
وَيَجُوزُ أَنْ يَنْظُرَ الرَّجُلُ إلَى الرَّجُلِ إلَّا إلَى عَوْرَتِهِ كَذَا فِي الْمُحِيطِ وَعَلَيْهِ الْإِجْمَاعُ، كَذَا فِي الِاخْتِيَارِ شَرْحِ الْمُخْتَارِ. وَعَوْرَتُهُ مَا بَيْنَ سُرَّتِهِ حَتَّى تُجَاوِزَ رُكْبَتَهُ، كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ
একজন পুরুষ অন্য পুরুষের দিকে সতর ব্যতীত অন্যান্যস্থানের দিকে  দৃষ্টিপাত করতে পারবে,এর উপর ইজমা বা উলামায়ে কেরামদের ঐক্যমত রয়েছে।মুহিত ইত্যাদি গ্রন্থাবলীতে এভাবেই বর্ণিত আছে।পুরুষ-পুরুষের সামনে সতর হচ্ছে,নাভীর নিচ থেকে হাটু পর্যন্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩২৭)

আরো জানুন-https://www.ifatwa.info/572


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মেয়েরা সালোয়ার নাভির নিচে পরতে পারবে যদি জামা দিয়ে সমস্ত শরীর ঢাকা থাকে।

নাভীর নিচে পড়া নিষেধ বলা হয় তখন যখন জামা দ্বারা শরীর ঢাকা থাকবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...