বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হযরত আবু আইয়ুব রাযি থেকে বর্ণিত
وعَنْ أَبِي أَيُّوبَ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ، يَلْتَقِيَانِ, فَيُعْرِضُ هَذَا، ويُعْرِضُ هَذَا، وخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
সারমর্ম-কোনো মুসলমানের জন্য তিনদিনের বেশী সময় ধরে কথা না বলা জায়েয নয়।(সহীহ মুসলিম-২৫৬০)
গোনাহের কাজ ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত কাজে মাতাপিতার বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।
কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসসালাম বলেছেন,
ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ
গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে।
(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)
অন্যত্র বর্ণিত আছে
ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)
যে সমস্ত বিষয় মাতাপিতার ফায়দাদায়ক এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকর নয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব।যদি মাতাপিতা জন্য ফায়দাদায়ক না হয় বা সন্তানের জন্য ক্ষতিকর হয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ ওয়াজিব নয়।
ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
ﻭﻳﻠﺰﻡ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻃﺎﻋﺔ ﻭﺍﻟﺪﻳﻪ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻤﻌﺼﻴﺔ ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻧﺎ ﻓﺎﺳﻘﻴﻦ ... ﻭﻫﺬﺍ ﻓﻴﻤﺎ ﻓﻴﻪ ﻣﻨﻔﻌﺔ ﻟﻬﻤﺎ ، ﻭﻻ ﺿﺮﺭ ﻋﻠﻴﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ সন্তানের জন্য তখনই ওয়াজিব যখন তা কোনো গোনাহের কাজ হবে না।যদি ও তারা ফাসিক হোক না কেন?
উপরোক্ত হুকুম তখনই যখন তা মাতাপিতার জন্য ফায়দাদায়ক হবে,এবং সন্তানের জন্য কোনো ক্ষতির কারণ হবে না।(সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হলে শরীয়ত কর্তৃক বৈধ জিনিষেও মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব হবে না)(আল-ইখতিয়ারাত-১১৪)
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ
'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার মা যদি ঐ আত্মীয়র সাথে কথা বলতে নিষেধ করে থ্কেন,তাহলে এক্ষেত্রে আপনার জন্য মায়ের আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব হবে না।তাছাড়া ওই আত্নীয়ের কিছু ভুলের কারণে দুই পরিবারে অনেক ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে থাকে,তাহলে আপনি হয়তো নিজে ঐ আত্মীয়র সাথে কথা বলতে পারেন,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে আলাপ আলোচনা করিয়ে বিষয়টার মীমাংসা করে নিতে পারেন।
শরীয়ত এবং মায়ের আদেশ উভয়টিকে রক্ষা করার স্বার্থে আপনি ঐ আত্মীয়র সাথে প্রয়োজন পর্যন্ত কথা বলবেন।সালাম কালাম করবেন।অতিরিক্ত বেশ কোনো আলাপ আলোচনা করবেন না।