আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
173 views
in সালাত(Prayer) by (27 points)
আস সালামু আলাইকুম।
১. যে নামাযে কিয়াম করতে সক্ষম কিন্তু বসতে বা সিজদা দিতে পারে না। চেয়ারে বসে ইশারায় করতে হয়, তার জন্য কি মসজিদে যাওয়া ওয়াজিব?

২. চেয়ারে বসে ইশারায় সিজদা করা ব্যাক্তি কি ইমামতি করতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/55375/?show=55375#q55375 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

নবী সা. সারা জীবন জামাআতের পাবন্দী করেছেন। তদ্রূপ সাহাবা কিরামের যামানা থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত উম্মত জামাআতের পাবন্দী করে এসেছে। সাহাবা কিরামের যুগে জামাআতের এতো গুরুত্ব ছিলো যে, মাযূর (একান্ত অপারগ) ও প্রকাশ্য মুনাফিক ছাড়া কেউ জামাআত ত্যাগ করতেন না। জামাআত ত্যাগে অভ্যস্ত ব্যক্তি ফাসিক এবং ইসলামী বিচার ব্যবস্থায় তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়। হাদীস শরীফে নামাযের বহু ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেন,

صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاةِ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً۔

জামাআতের নামায একা নামাযের চেয়ে সাতাশ গুণ উত্তম। (সহীহ্ মুসলিম, ৬৫০)

 

জামাআতে নামায পড়ার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রা. বলেন, আমাদের যুগে গুরুতর অসুস্থ অথবা একমাত্র প্রকাশ্য মুনাফিক ছাড়া কেউ জামাআত ত্যাগ করতো না। আর যদি অসুস্থ ব্যক্তি  দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটতে সক্ষম হলে সেও জামাআতে এসে শরীক হতো। এবং বলেন, রাসূল সা. আমাদেরকে হেদায়াতের সুন্নাতগুলি শিক্ষা দিয়েছেন । আর আযান হয় এমন মসজিদে নামায পড়া (অর্থাৎ, জামাআতে নামায পড়া) হেদায়াতের সুন্নাতগুলির অন্তর্ভুক্ত।  (মিরক্বাতুল মাফাতীহ্ শর্হে মিশকাতুল মাসাবীহ্, ১০৭২)

 

জামাআত কাদের উপর ওয়াজিব?

যদি শরী’আত সম্মত কোন ওযর না থাকে তাহলে ১.প্রাপ্ত বয়স্ক ও ২.স্বাধীন ৩.ও ৪. মুসলমান পুরুষের জন্য জামাআতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব।

 

যে কোন নামায জামাআত ছাড়াও আদায় হয়ে যায়। তবে জুমুআ ও দুই ঈদের জন্য জামাআত শর্ত। জামাআত ছাড়া জুমুআ ও ঈদের নামায সহীহ্ নয়। নাবালক, অসুস্থমস্তিস্ক, গোলাম ও ওযরগ্রস্ত  ব্যক্তির উপর জামাআত ওয়াজিব নয়। তবে তারা জামাআতে নামায পড়লে সওয়াবের অধিকারী হবে। অবশ্য স্ত্রীলোকদের ঘরে নামায পড়াই উত্তম। (এই ফিতনার যুগে)

 

জামাআত ওয়াজিব না হওয়ার ওযর

১.প্রচণ্ড বৃষ্টি বা ২.ঠাণ্ডা বা ৩.অন্ধকার হলে,

৪.পথে ভীষণ কাদা হলে,

৫.রাতে প্রচণ্ড ঝড় হলে,

৬.হেঁটে মসজিদে যেতে না পারার মতো অসুস্থ বা ৭.বৃদ্ধ হলে

৮.অন্ধের সাহায্যকারী না থাকলে

৯.কেউ যদি এমন রোগীর সেবায় ব্যস্ত থাকে যে, তার অনুপস্থিতিতে রোগীর ক্ষতি বা কষ্ট হবে,(তাহলে তার জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

১০.সফরে কাফেলার যাত্রার সময় হয়ে গেলে, গাড়ী ও জাহাজ ছেড়ে দেয়ার সময় হয়ে গেলে এবং সামান হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকলে (জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

১১.ইস্তিঞ্জার হাজত হলে,

১২.ক্ষুধার সময় খাবার উপস্থিত হলে এবং খাবার চাহিদা থাকলে (জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই!  

১.প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ তথা অনেকটা ওয়াজিবের কাছাকাছি। বিনাকারণে জামাত ছেড়ে দিলে ব্যক্তি গুনাহগার হবে।

নবীজি (সা.) কখনও জামাত তরক করতেন না। এমনকি অসুস্থ অবস্থায় যখন তিনি হাঁটতে পারতেন না, তখনও দুই সাহাবির কাঁধে ভর করে পা টেনে টেনে নামাজের জামাতে হাজির হয়েছেন। জামাতবিহীন একা একা নামাজ পড়েননি।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে জামাত ছেড়ে দেওয়ার দরকার নেই। বরং আপনি জামাতেই নামাজ পড়বেন। যদি চেয়ারে বসে সালাত আদায় করেন তথাপি জামাতে সালাত আদায়ের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। 

তবে একাকী বাসায় নামাজ পড়লে নামাজ হবে কিন্তু  জামাতের ফজিলত থেকে মাহুরুম হবে।


২. যে ব্যক্তি বসে সমতলে রুকু সেজদা করে, তার পিছনে দাড়িয়ে রুকু সেজদা করতে সক্ষম ব্যক্তিদের নামায শুদ্ধ হয়ে যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর পূর্বে অসুস্থ্যতার সময় বসে সাহাবায়ে কেরামগণকে নামায পড়িয়েছেন।


কিন্তু ইমাম যদি সিজদা ইশারায় করেন। তাহলে তার জন্য ক্বিয়াম ও রুকু-সিজদায় সক্ষম ব্যক্তিদের ইমামতি করা জায়েয নয়। 

সুতরাং চেয়ারে বসে ইশারায় রুকু সিজদা আদায়কারী ইমামের পিছনে  রুকু-সিজদায় সক্ষম ব্যক্তিদের ইক্বতিদা করা জায়েয নেই। (আলজামেউস সাগীর, পৃষ্ঠা: ৭৬, আলবাহরুর রায়েক, খন্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৩৬৫, আদ্দুররুল মুখতার, খন্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৫৭৯)

আরো বিস্তারিত জানতে : https://ifatwa.info/5490/



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (27 points)
রুকু সিজদায়ে অক্ষম ব্যাক্তিদের ইমামতি করতে পারবেন?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...