بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
মুসলিম শিশু মারা গেলে সে
জান্নাতে যাবে এই কথার সাথে জুমহুর ওলামা একমত। কিন্তু অমুসলিম নাবালক ও নাবালিকা সন্তানদের
ক্ষেত্রে মতভেদ পাওয়া যায়। কাফের-মুশরিকদের নাবালেগ মৃত শিশু-সন্তান সম্পর্কে আলেমদের
মাঝে সাধারনত ৪টি মাযহাব পাওয়া যায়। গ্রহনযোগ্যতার ক্রমানুসারে সেগুলো হলোঃ তারা জান্নাতে যাবে। তাদেরকে
পরীক্ষা করা হবে আখিরাতে। তাদের সম্পর্কে কোন মন্তব্য না করে আল্লাহর উপর ছেড়ে দেওয়া।
তারা জাহান্নামে যাবে। সবগুলোর পক্ষেই মোটামুটি দলিল রয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি গ্রহনযোগ্য
হচ্ছে ১ম মত, তারপর
২য়, তারপর
৩য়, তারপর
৪র্থ। ৪র্থ মতের পক্ষের আলিমদের সংখ্যা সবচেয়ে কম।
(তাফসীর ইবনে কাসীর ৩/২৯-৩৩;
শারহে সুনানে আবি দাউদ ৭/৮৩;
আত তাযকিরাহ ২/৩২৮;
আত-তাদকিরাহ ২/৩২৮;
শরহ মুসলিম ১৬/২০৭,
২০৮; ফাতহুল বারী ৩/২৪৫;)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حديث ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ
أَوْلاَدِ الْمُشْرِكِينَ فَقَالَ: اللهُ، إِذْ خَلَقَهُمْ، أَعْلَمُ بِمَا
كَانُوا عَامِلِينَ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মুশরিকদের শিশু সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করা হলে তিনি বলেন, আল্লাহ্
তাদের সৃষ্টি লগ্নেই তাদের ভবিষ্যৎ আমল সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
(সহীহুল বুখারী,
পর্ব ২৩: জানাযা,
অধ্যায় ৯২,
হাঃ ১৩৮৩;
মুসলিম, পর্ব ৪৬: কাদর বা ভাগ্য,
অধ্যায়, অধ্যায় ৬, হাঃ ২৬৬০)
وقال القرطبي
: إن قول أنهم في الجنة هو قول الأكثر ، وقال : وقد أنكر بعض العلماء الخلاف فيهم.
" التذكرة " (2/328) সারমর্মঃ
তারা জান্নাতে যাবে,
এটিই বেশিরভাগ উলামায়ে কেরামদের মত। (মা'আরেফুল
কোরআন ৫/৪৫৭) এবং ফতোয়ায়ে
দারুল উলুম দেওবন্দ ১২/২১১ তে আছে যে
কুরআন শরীফে এসেছেঃ
وَلَا تَزِرُ
وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ ۚ
আল্লাহ তায়ালা কাহারো গুনাহের বোঝা অন্যের উপর চাপিয়ে দিবেননা। (সুরা ফাতির ১৮)
সুতরাং কাফের মুশরিকদের নাবালেগ
সন্তান যদি বালেগ হওয়ার পূর্বেই মারা যায়,
তাহলে তাদের শাস্তি হবেনা। কেননা মা বাবার কুফুরির কারনে
সে শাস্তির উপযুক্ত হবেনা।
জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের
143607200012 নং
ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
শিশুরা নিরপরাধ। ইসলামি শরিয়তমতে,
মুসলিম-অমুসলিম যার ঔরসেই সন্তানের জন্ম
হোক, নাবালেগ
অবস্থায় সে একজন মুসলমান। পরে বড় হলে পিতা-মাতা ও পরিবেশ তাকে ইহুদি খ্রিস্টান বা মুশরিক
বানায়। এ সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে
- كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ
يُهَوِّدَانِهِ، أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ، كَمَثَلِ البَهِيمَةِ
تُنْتَجُ البَهِيمَةَ هَلْ تَرَى فِيهَا جَدْعَاءَ
‘রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন,
প্রত্যেক নবজাতক ফিতরাতের ওপর (মুমিন হিসেবে)
জন্মগ্রহণ করে। এরপর তার মাতাপিতা তাকে ইহুদি বা খ্রিস্টান বা অগ্নি উপাসক বানায়। যেমন
চতুষ্পদ জন্তু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাকে (জন্মগত) কানকাটা দেখেছ?
(বুখারি: ১৩৮৫)
অতএব,
অমুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া সন্তান যদি
নাবালেগ অবস্থায় মারা যায়, তাহলে
সে জান্নাতি হবে এবং তার কোনো শাস্তি নেই। সহিহ বুখারিতে মেরাজের ঘটনা সংক্রান্ত এক
দীর্ঘ হাদিসের এক পর্যায়ে এসেছে-‘আমরা চলতে চলতে একটি সবুজ বাগানে উপস্থিত হলাম। এতে
একটি বড় গাছ ছিল। গাছটির গোড়ায় একজন বয়োবৃদ্ধ লোক ও বেশ কিছু বালক বালিকা ছিল..।’ এই
হাদিসের পরের অংশেই বলা হয়েছে- গাছের গোড়ায় যে বৃদ্ধ ছিলেন,
তিনি ইবরাহিম (আ.) এবং তাঁর চারপাশের বালক-বালিকারা
ছিল আওলাদুন্নাস বা মানুষের সন্তান। (সহিহ বুখারি: ১৩৮৬,
ইফাবা-১৩০৩)
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা হলো, জান্নাতীদের সেবক-সেবিকা হবে ৷
২. এটি এমন কোনো বিষয় নয়,
যা জানার উপর শরীয়তের কোনো আমল নির্ভরশীল
এবং আকীদাগত কোন বিষয়ও নয়, যা
জানা জরুরি ৷ তাই এ জাতীয় বিষয় নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া ঠিক নয়।
কাফের-মুশরিকদের নাবালেগ সন্তান
মারা গেলে তাদের সাথে কি আচরণ করা হবে এ বিষয়ে বিভিন্ন মত আছে। যেমন কেউ বলেন জান্নাতে
যাবে ৷ কেউ বলে জাহান্নামে যাবে ৷ কেউ বলে আ’রাফে থাকবে ৷ কেউ বলে জান্নাতীদের সেবক-সেবিকা
হবে ৷ তবে জান্নাত যাবে- এ মতটি অধিক শক্তিশালী। এর সঠিক
ফয়সালা আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। (লামিউদ দারারী ২/১৩৭;
তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৫/৫০২;
রদ্দুল মুহতার ২/১৯২;
ফাতাওয়া উসমানী ১/৫২ )
ইমাম আবু হানিফা রহঃ এই বিষয়ে
তাওক্কুফ করেছেন। জান্নাত
জাহান্নাম কোনো মতের দিকে যাননি।
وقال القرطبي
: إن قول أنهم في الجنة هو قول الأكثر ، وقال : وقد أنكر بعض العلماء الخلاف فيهم.
" التذكرة " (2/328)
সারমর্মঃ তারা জান্নাতে যাবে,
এটিই বেশিরভাগ উলামায়ে কেরামদের মত।
বিস্তারিত জানুনঃ- https://ifatwa.info/12149/