আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
128 views
in সালাত(Prayer) by (17 points)
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমি দেশের বাহিরে আছি। ( একটি নন মুসলিম কান্ট্রিতে) । আমার আশে পাশে কোনো মসজিদ নেই। তাই আমাকে ঘরেই নামায পড়তে হয়।কিন্তু শুক্রবার এ মসজিদ এ গেলে বা অন্যদিন মসজিদ এ গেলে কোনো ইম হানাফি মাযহাব অনুযায়ী নামায পড়ান কেও কেও অন্য মাযহাব অনুযায়ী। আমি এখন উনাদের পিছনে কিভাবে নামায পড়ব?  মানে কোন মাযহাব অনুসরণ করব?
আর এটা আমার যতটুকু মনে হল শায়েফী মাযহাব প্রবন দেশ। এখন আমি আসরের নামায কোন ওয়াক্তে পড়ব?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/30323/ নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে, আসরের ওয়াক্তের বিষয়ে আমাদের ইমামদের মাঝেই মতভেদ হয়ে গেছে। তাই ফক্বীহগণ বলেন, উত্তম ও সতর্কতা এটাই যে, বস্তুর ছাড়া দ্বিগুণ হওয়ার আগে আসরের নামায পড়বে না। তবে যদি কেউ পড়ে নেয়, তাহলে মতভেদ থাকার কারণে নামাযকে বাতিল বলা যাবে না। বরং সহীহ হয়ে গেছে বলেই ধতব্য হবে। তাই ফিতনার আশংকা না হলে আলাদা পড়া উত্তম। তবে ফিতনার শংকা হলে এক সাথে পড়া যাবে।

হাদীস শরীফে এসেছে

قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: أَنَا أُخْبِرُكَ، صَلِّ الظُّهْرَ، إِذَا كَانَ ظِلُّكَ مِثْلَكَ.وَالْعَصْرَ، إِذَا كَانَ ظِلُّكَ مِثْلَيْكَ.

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ বলেন, আমি তোমাদের জানাচ্ছি যে, যখন তোমার ছায়া তোমার সমান হয়, তখন যোহরের নামায পড়, আর যখন তা দ্বিগুণ হয়, তখন আসরের নামায পড়। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-১২, , মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-২০৪১, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২১৭৩৪}

قال المشائخ: ينبغى أن لا يصلى العصر حتى يبلغ المثلين، ولا يؤخر الظهر إلى أن يبلغ المثل ليخرج من الخلاف فيها، (الحلبى الكبير، كتاب الصلاة، بحث فروع فى شرح الطحاوى-227، رد المحتار، كتاب الصلاة-1/359، البحر الرائق، كتاب الصلاة-1/425-426، حاشية الطحطاوى على الدر المختار، كتاب الصلاة-1/173)

যার সারমর্ম হলো ২ মিছিল হওয়ার পর আছরের নামাজ পড়বে,এক মিছিল পর্যন্ত জোহরের নামাজ দেড়ি করবেনা। যাতে ইমামদের ইখতিলাফ থেকে বাঁচা যায়।

বিস্তারিত  জানুন :https://www.ifatwa.info/705

প্রত্যেক মুসলমানের উপর নির্দিষ্ট সময়ে সালাত আদায় করা ফরয,নির্দিষ্ট সময় মানে প্রত্যেক নামাযের নির্দিষ্ট ওয়াক্ত,আর নামাযের ওয়াক্ত সূর্যের সাথে সম্পর্কিত।সূর্যের নড়াচড়াই নামাযের সময়কে নির্ধারণ করে অর্থাৎ সূর্যের পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকের গতিবিধিকে কেন্দ্র করে নামাযের ওয়াক্ত নির্ণয়  করা হয়,তাই ওয়াক্তের পূর্বে নামায নাময আদায় হবেনা,এর থেকে বিরত থাকা সবার উচিৎ ।

হানাফি মাযহাবে গ্রহণযোগ্য মতানুসারে আসর দুই মিছিলের পর পড়া মুস্তাহাব। তবে এক মিছিলের পর যদি কেউ পড়ে নেয় তাহলেও আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু সাধারণত উত্তম হচ্ছে আসরকে দুই মিছিলের পর পড়া। (আহসানুল ফাতাওয়া ২/১১৩)

**মৌলিকভাবে অন্য মাজহাবের ইমামের পেছনে ইক্তেদা করতে কোনো অসুবিধা নাই। তবে এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় সেটা হলো অজু ভঙ্গের কারণ নিয়ে দ্বিমত হওয়া। হানাফি মাজহাব মতে শরীরের কোনো স্থান থেকে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে অজু ভেঙ্গে যায়।পক্ষান্তরে শাফেঈ মাজহাব মতে এর কারণে অজু ভঙ্গ হয় না। কাজেই শাফেঈ মাজহাবের ইমাম যদি উপরোক্ত কারণে অজু না করেই ইমামতি করেন তাহলে এমন ইমামের পেছনে হানাফি মাজহাবের মুসল্লীর নামাজ সহিহ হবে না। কেননা হানাফি মাজহাব মতে ওই ইমাম অজুবিহীণ নামাজ পড়িয়েছেন।

সুতরাং যদি ভিন্ন মাজহাবের ইমামের ব্যাপারে সুনিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, তিনি নামাজের ফরজসমূহের ক্ষেত্রে হানাফী মাজহাবের বিধিবিধানের প্রতিও লক্ষ রাখেন তাহলে তার পেছনে ইক্তেদা করতে কোনো অসুবিধা নাই। আর যদি তার ব্যাপারে জানা থাকে যে, তিনি নামাজের ফরজসমূহের ক্ষেত্রেও অন্য মাজহাবের প্রতি লক্ষ রাখেন না বরং তিনি কেবল নিজ মাজহাবকেই ফলো করেন তাহলে পেছনে ইক্তিদা করা যাবে না।

উল্লেখ্য, বিতির নামাজে অতিরিক্ত একটি শর্ত আছে। তাহলো ইমাম সাহেবের তৃতীয় রাকাতের আগে সালাম না ফেরানো। অর্থাৎ ইমাম যদি দ্বিতীয় রাকাতের মাথায় সালাম ফেরায় (যেমনটি কেউ কেউ করে) তবে তার পেছনে ইকতিদা করা জায়েজ হবে না।

প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই! আপনি প্রয়োজনে নামাজের আগে পরে ব্যক্তিগতভাব ওই ইমামের সাথে এই বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে নিতে পারেন। তাহলে আর কোনে সংশয় থাকবে না। আর এটার করা অসম্ভবও নয়।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আসরের নামাজের ক্ষেত্রে শাফেঈ ওয়াক্ত অনুসারে শাফেঈ ইমামের পেছনে আসরের নামাজ আদায় না করাই উত্তম। বরং আপনি হানাফি মাজহাব অনুসারে আসরের ওয়াক্ত হওয়ার পর যদি সাথে কাউকে পান তাহলে তাকে সাথে নিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করবেন। তা নাহলে একাকীই নামাজ আদায় করবেন। উল্লেখ্য হঠাৎ কখনো যদি শাফেঈ ওয়াক্ত মতো পড়ার পরিস্থিতি সামনে এসে যায় তাহলে পড়া যেতে পারে। তবে নিয়মিত পড়া যাবে না।

এই মাসআলা সম্পর্কে দারুল উলুম দেওবন্দের ফাতওয়া দেখতে ভিজিট করতে পারেন: https://darulifta-deoband.com/home/ur/salah-prayer/26363


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (17 points)
জাযাকাল্লাহ খাইরান 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 104 views
...