আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
70 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়খ।

আমার একটি প্রশ্ন আছে।
আমাদের ভার্সিটি তে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। খেলার নিয়ম টা হচ্ছে প্রথমে 150 টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা লাগবে। যারা যারা করবে তাদের নিয়ে টিম গঠন করা হবে।

তারপর যারা জিতবে তাদের ট্রফি + মেডেল দেয়া হবে
আমার প্রশ্নটি হলো  এইযে আমি 150 টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলাম এটা কি জুয়ার মধ্যে পড়ে? এখানে জা টাকা উঠে ওই টাকা দিয়ে লাইট, বল, ব্যাট, স্কচটেপ, স্ট্যাম্প, জা জা লাগে, মেডেল, ট্রফি , মানে জা জা লাগে সব কেনা হয়।এবং কোনো খেলোয়াড় কে কোনো রকম টাকা দেয়া হয় না।

এটা কি হারাম?

1 Answer

0 votes
by (63,440 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/28106/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, খেলা-ধুলা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এর উদ্দেশ্য সাময়িক শরীর চর্চা। যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বয়স ভেদে মানুষের শরীর চর্চার ধরনের পরিবর্তন হয়। কিন্তু সাময়িক শরীর চর্চার বদলে যদি তা কেবল সময়ের অপচয় হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়, যদি ঐ ব্যক্তি দ্বীন থেকে গাফেল হয়, দায়িত্ব বিস্মৃত হয় বা তাতে জুয়া মিশ্রিত হয়, তখন ঐ খেলা হারামে পরিণত হয়।

একদিন দু’জন আনছার ছাহাবী তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা করছিলেন। হঠাৎ একজন বসে পড়লেন। তখন অপরজন বিস্মিত হয়ে বললেন, কি ব্যাপার। কষ্ট হয়ে গেল নাকি? জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক বস্ত্ত যা আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, সেটাই অনর্থক (لَهْو) (নাসাঈ, ছহীহাহ হা/৩১৫)।

এতে বুঝা যায় যে, বৈধ খেলাও যদি আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, তবে সেটাও জায়েয হবে না। ইমাম বুখারী (রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘প্রত্যেক খেলা-ধুলা (لَهْو) বাতিল, যদি তা আল্লাহর আনুগত্য থেকে উদাসীন করে দেয়’ (ফাৎহুলবারী ‘অনুমতি গ্রহণ’ অধ্যায় ৭৯, অনুচ্ছেদ ৫২; ১১/৯৪ পৃঃ)।

হাদীস শরীফে এসেছে 

عن أبي ہریرۃ رضي اللّٰہ عنہ قال: قال رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: من حسن إسلام المرء ترکہ ما لا یعنیہ۔ (سنن الترمذي، أبواب الزہد / باب ما جاء من تکلّم بالکلمۃ لیضحک الناس ۲؍۵۸ رقم: ۲۲۱۷، شعب الإیمان للبیہقي ۴؍۲۵۵، المعجم الکبیر ۳؍۱۲۸ رقم: ۲۸۸۶)

রাসুল সাঃ বলেন যে ইসলামের সৌন্দর্যতা হলো অনর্থক কাজ করা থেকে বিরত থাকা।

قال العلامۃ الحصکفي: کل ما أدی إلی ما لا یجوز؛ لا یجوز۔ (الدر المختار، کتاب الحظر والإباحۃ / فصل في اللبس ۶؍۳۶۰ دار الفکر بیروت)

যেই কাজ নাজায়েজ দিকে ধাপিত করে,সেটাও নাজায়েজ হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/3102/

যেসমস্ত খেলা শরীয়তে নাজায়েজ  বলা হয়নি, এমন খেলা যদি নামায বা ফরয ইবাদত ও লেখাপড়াকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, তাতে যদি বাদ্য-বাজনা না থাকে, হারাম কিছু (জুয়া,ছতর খোলা) না থাকে, গায়রে মাহরাম মহিলারা যদি সেখানে না থাকেতাহলে এ খেলার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। এবং উক্ত খেলাগুলি যদি জুয়া হিসেবে খেলা না হয়, বরং তৃতীয় পক্ষ থেকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয় যাতে

  উভয় পক্ষের প্লেয়ার বা তাদের কর্তৃপক্ষের কোনো টাকা ইত্যাদি না দিতে হয় এবং উপরোক্ত শর্ত গুলো  পুরোপুরি মানা হয়, তাহলে জায়েজ আছে

খেলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/673

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনাদের ভার্সিটি কর্তৃক আয়োজিত খেলা ধুলায় যদি উপরোক্ত শর্ত সমূহ পরিপূর্ণ মান্য করে প্রতিযোগিদের/প্লেয়ারদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা না নিয়ে থার্ড পারসন থেকে পুরস্কার দেওয়া হয় তাহলে তা জায়েয আছে। কিন্তু আপনার প্রশ্ন থেকে স্পষ্ট যে, এখানে জুয়া থাকার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কারণ, আপনাদের রেজিস্ট্রেশনের ফি দিয়েই সব কিছু করা হচ্ছে এমনকি মেডেল ট্রফিও সেই টাকা থেকেই ক্রয় করা হচ্ছে। সুতরাং উক্ত টুনামেন্টে অংশগ্রহণ করা হারাম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...