بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
https://ifatwa.info/29946/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
রুকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত।
আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
وَ اَقِیْمُوا
الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ
تُرْحَمُوْنَ۵۶
‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা
অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-(সূরা নূর : ৫৬)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
وَ اَقِیْمُوا
الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ
تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ۱۱۰
‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা
যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা
যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। -(সূরা বাকারা : ১১০)
সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে
আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-
وَ الْمُقِیْمِیْنَ
الصَّلٰوةَ وَ الْمُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ
الْاٰخِرِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ سَنُؤْتِیْهِمْ اَجْرًا عَظِیْمًا۠۱۶۲
‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি
তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’
আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা
এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজনাতিরিক্ত একাধিক
বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার সমমূল্যের হয়ে যায় তাহলেও তার উপর জাকাত ফরজ হবে।
যেমন কারো নিকট কিছু স্বর্ণ ও কিছু টাকা আছে,
যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার মূল্যের সমান হয় তাহলে তার উপরও জাকাত
ফরজ হবে। -(রদ্দুল মুহতার: ৫/২১৯)
যদি কারো নিকট কিছু পরিমাণ
স্বর্ণ এবং কিছু পরিমাণ রৌপ্য বা কিছু পরিমাণ ব্যবসায়িক পণ্য ও কিছু পরিমাণ নগদ অর্থ
থাকে এবং এগুলো মিলে ৫২.৫ তোলা (৬১২.৩৬ গ্রাম) রৌপ্যের সমপরিমাণ মূল্যের হয়ে যায় তাহলেও তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। ( রদ্দুল মুহতার ২/২৯৭; আলবাহরুর রায়েক ২/২২৬, ২/২২৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/১০৫;
আদ্দুররুল মুখতার ২/২৭৩)
بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (ج:2، ص:41، و 53، ط:دار
الكتب العلمية):
’’و
لو تصدق عن غيره بغير أمره فإن تصدق بمال نفسه جازت الصدقة عن نفسه و لاتجوز عن
غيره
সারমর্মঃ-
কেহ যদি অন্যের পক্ষ থেকে
তার অনুমতি ছাড়াই সদকাহ করে,এক্ষেত্রে সে যদি নিজের সম্পদ হতে সদকাহ করে,সেক্ষেত্রে
তাহা নিজের পক্ষ থেকে সদকাহ আদায় হবে। অন্যের পক্ষ থেকে আদায় হবেনা।
অন্যের পক্ষ থেকে যাকাত আদায়
করতে হলে তার অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় সে ব্যক্তির পক্ষ থেকে যাকাত আদায় হবে না।
(রদ্দুল মুহতার ২/২৬৯)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী
ভাই/বোন!
যদি কারো কাছে স্বর্ণ বা রুপার
সাথে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সামান্য টাকাও থাকে তাহলে তা যাকাতের হিসাবে পরিগণিত হবে।
সুতরাং আপনার দুই লক্ষ টাকা এবং ৫ ভরি স্বর্ণের মূল্য স মিলিয়ে যত টাকা হবে,
সব টাকার ২.৫% যাকাত ওয়াজিব হবে। যদি আপনার মালিকানায় শুধু স্বর্ণ থাকত তাহলে সাড়ে সাত ভরি নেসাব
পূর্ণ হওয়া আবশ্যক ছিল। কিন্তু টাকার নেসাব পূর্ণ থাকায় স্বর্ণের মূল্য উক্ত নেসাবের
সাথে যুক্ত হবে।
আপনার স্বামী যদি আপনার পক্ষ থেকে
অনুমতি নিয়ে আপনার পক্ষ থেকে যাকাত আদায় করে, তাহলে আপনার পক্ষ
থেকে যাকাত আদায় হবে, অন্যথায় আপনার পক্ষ থেকে যাকাত আদায় হবেনা।
এখন হাতে টাকা না থাকলে বা কারো কাছে পাওনা থাকলে আপনি প্রয়োজনে ঋণ করে যাকাত দিবেন অথবা গহনা বা কোনো কিছু বিক্রি করে হলেও যাকাত করা আপনার উপর আবশ্যক। তাছাড়া আপনার কথা অনুযায়া আপনার নিকট ২লক্ষ
টাকা আছে আপনি তা থেকে যাকাত আদায় করতে পারেন।
বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর
যাকাত আদায়ে বিলম্ব করা যায় না। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَ
اَنْفِقُوْا مِنْ مَّا رَزَقْنٰكُمْ مِّنْ قَبْلِ اَنْ یَّاْتِیَ اَحَدَكُمُ
الْمَوْتُ فَیَقُوْلَ رَبِّ لَوْ لَاۤ اَخَّرْتَنِیْۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیْبٍ ۙ
فَاَصَّدَّقَ وَ اَكُنْ مِّنَ الصّٰلِحِیْنَ۱۰
আমি তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছি
তোমরা তা থেকে ব্যয় করবে তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে। অন্যথায় মৃত্যু এল সে
বলবে হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আরও কিছু কালের অবকাশ কেন দিলে না! তাহলে আমি সদাকা
করতাম এবং সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’-সূরা মুনাফিকূন : ১০
এক্ষেত্রে করণীয় হল,
নিসাবের মালিক হওয়ার সময়টি সামনে রাখা
এবং ঠিক তার এক বছর পর সেই সময়েই যাকাত আদায় করা। নির্দিষ্ট সময়টি জানা থাকা সত্ত্বেও
অন্য কোনো মাসের অপেক্ষায় বসে থাকা উচিত নয়।
তবে এক্ষেত্রে বিশেষ ওজর বশত যাকাত প্রদানে বিলম্ব হলে গুনাহ হবে না।
কাকে যাকাত দেওয়া যাবে? এসম্পর্কে বিস্তারিত
জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/79259/
https://ifatwa.info/74321/