আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
155 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১. একজনের একটা পোষা বিড়াল আছে। বিড়ালটি ঘনঘন বাচ্চা প্রসব করে। এতে তাদের পরিবারে বেশ অসুবিধা দেখা দেয়। বিড়ালের যত্ন নেওয়া এবং পাক নাপাক সংক্রান্ত অসুবিধার জন্য তারা চাচ্ছেন বিড়ালটিকে অপারেশন করাতে যাতে ভবিষ্যতে আর বাচ্চা না দেয়। এটা কি জায়েজ হবে কি না?


২. যে সকল পাখি বা প্রাণী খাওয়া হালাল নয় সেগুলো শুধু পোষার উদ্দেশ্যে ক্রয় বিক্রয় করা কি হালাল হবে?
৩. খাঁচায় রেখে বাজ্রিগর পাখি পোষা কি হালাল? তার জন্য নতুন খাঁচা কিনা, খেলনা কিনা, এসব কি হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (57,120 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

১. বিনা প্রয়োজনে বিড়ালকে খাসি বানানো যাবে না, এটি জায়েয হবে না। বিড়ালটিকে আপনি তাড়িয়ে দিতে পারেন। তাকে ঘরে লালন পালন করার জন্য তো আপনার উপর কারো পক্ষ থেকে প্রেশার নেই। তাকে তার মত ছেড়ে দিন। তার রিযিকের ব্যবস্থা আল্লাহ করবেন ইনশাআল্লাহ

 প্রাণী লালন-পালন কয়েকটি শর্তে ভিত্তিতে জায়েয।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/4980

https://ifatwa.info/29946/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

২. বিড়ালের ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে উলামদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।

«- اخْتَلَفَ الْفُقَهَاءُ فِي جَوَازِ بَيْعِ الْهِرَّةِ.

فَذَهَبَ جُمْهُورُ الْفُقَهَاءِ مِنَ الْحَنَفِيَّةِ وَالْمَالِكِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ وَالْحَنَابِلَةِ إِلَى أَنَّ بَيْعَ الْهِرَّةِ جَائِزٌ؛ لأَِنَّهَا طَاهِرَةٌ وَمُنْتَفَعٌ بِهَا وَوُجِدَ فِيهَا جَمِيعُ شُرُوطِ الْبَيْعِ، فَجَازَ بَيْعُهَا كَالْحِمَارِ وَالْبَغْل،» - «الموسوعة الفقهية الكويتية» (42/ 266)

হানাফি, শাফেয়ী,মালিকি,হাম্বলী মাযহাবের সমস্ত উলামায়ে কেরামের মতে বিড়ালের ক্রয় বিক্রয় জায়েয। কেননা, বিড়াল পবিত্র। এবং তা দ্বারা বৈধ ফায়াদ গ্রহণ করা সম্ভব। এবং তার মধ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের সমস্ত শর্ত বিদ্যমান রয়েছে। সুতরাং গাদা এবং খচ্ছরের মত তার ক্রয়-বিক্রয়ও জায়েযই হবে। ( আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-৪২/২৬৬)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

وَيَجُوزُ بَيْعُ جَمِيعِ الْحَيَوَانَاتِ سِوَى الْخِنْزِيرِ وَهُوَ الْمُخْتَارُ كَذَا فِي جَوَاهِرِ الْأَخْلَاطِيِّ.

খিনযির ব্যতীত সকলপ্রকার প্রাণীর ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। এবং এটাই বিশুদ্ধ মাযহাব। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৩/১১৪)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/645

 

৩. https://ifatwa.info/3237/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সৌর্ন্দয্য বর্ধনে বা শখের বশে বাসা কিংবা অফিসে খাঁচায় পাখি পোষা ইসলামি শরিয়তে নিষেধ নয়।

সাহাবায়ে কেরামও সৌখিনতা ও শখের বশে বিভিন্ন বৈধ প্রাণী পুষেছেন বলে বিভিন্ন কিতাবে বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে সেসবের প্রয়োজনীয় পরিচর্যা প্রয়োজন। যেমন: নিয়মিত খাবার দেয়া, পানি বদলে দেয়া, রোদ কিংবা তাপে তারা যেন কষ্ট না পায়, সেটা নিশ্চিত করা। তবে এমনিতে অধিক অর্থ ব্যয় করে এসব ক্রয় করা অনর্থক খরচ। যা মাকরূহ।

তব সবচে’ উত্তম হল বন্য পাখিদের আটকে না রেখে তাদের মুক্ত করে দেয়া।

عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحْسَنَ النَّاسِ خُلُقًا، وَكَانَ لِي أَخٌ يُقَالُ لَهُ أَبُو عُمَيْرٍ – قَالَ: أَحْسِبُهُ – فَطِيمًا، وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَالَ: «يَا أَبَا عُمَيْرٍ، مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ» نُغَرٌ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ، فَرُبَّمَا حَضَرَ الصَّلاَةَ وَهُوَ فِي بَيْتِنَا، فَيَأْمُرُ بِالْبِسَاطِ الَّذِي تَحْتَهُ فَيُكْنَسُ وَيُنْضَحُ، ثُمَّ يَقُومُ وَنَقُومُ خَلْفَهُ فَيُصَلِّي بِنَا

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাঃ সবার চেয়ে বেশি সদাচারী ছিলেন। আমার একজন  ভাই ছিল। তাকে আবু উমায়ের ডাকা হতো। আমার অনুমান যে, সে তখন মায়ে দুধ খেতো না। যখনি সে তার নিকট আসতো, তিনি বলতেন, হে আবু উমায়ের! তোমার নুগায়ের কি করছে? সে নুগায়ের পাখিটা নিয়ে খেলতো। আর প্রায়ই যখন নামাযের সময় হতো, আর তিনি আমাদের ঘরে থাকতেন, তখন তার নিচে যে বিছানা থাকতো, সামান্য পানি ছিটিয়ে ঝেরে দেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দিতেন। তারপর তিনি নামাযের জন্য দাড়াতেন। এবং আমরাও তার পেছনে দাড়াতাম। আর তিনি আমাদের নিয়ে নামায আদায় করতেন। {বুখারী, হাদীস নং-৬২০৩}

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। সাহাবায়ে কেরাম রাঃ রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করেন-

قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَإِنَّ لَنَا فِي البَهَائِمِ أَجْرًا؟ قَالَ: «فِي كُلِّ كَبِدٍ رَطْبَةٍ أَجْرٌ

হে আল্লাহর রাসূল! জীব জন্তুর জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীদের জন্য পুরস্কার আছে। {বুখারী, হাদীস নং-২৩৬৩}

আর যথাযথভাবে খাদ্য প্রদান, পরিচর্যা ও যত্ন না নিতে পারলে এসব পালন ও পোষা জায়েজ হবে না।

এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য শাস্তি দেয়া হয়েছে। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল এবং অবশেষে সে মারা গিয়েছিল, পরিণতিতে মহিলা তারই কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করল। সে যখন তাকে বেঁধে রেখেছিল, তখন তাকে আহার ও পানি দিত না এবং তাকে ছেড়েও দিত না যে, সে কীট-পতঙ্গ ধরে খাবে। -সহিহ বোখারি: ২৩৬৫

সুতরাং উপরোক্ত নীতি মানতে না পালে পাখি বন্দি না রেখে ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...