بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
১. বিনা প্রয়োজনে বিড়ালকে
খাসি বানানো যাবে না, এটি জায়েয হবে না। বিড়ালটিকে আপনি তাড়িয়ে দিতে পারেন। তাকে ঘরে লালন
পালন করার জন্য তো আপনার উপর কারো পক্ষ থেকে
প্রেশার নেই। তাকে তার মত ছেড়ে দিন। তার রিযিকের
ব্যবস্থা আল্লাহ করবেন ইনশাআল্লাহ।
প্রাণী লালন-পালন কয়েকটি শর্তে ভিত্তিতে
জায়েয।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/4980
https://ifatwa.info/29946/ নং
ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
২. বিড়ালের ক্রয়-বিক্রয়
নিয়ে উলামদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
«-
اخْتَلَفَ الْفُقَهَاءُ فِي جَوَازِ بَيْعِ الْهِرَّةِ.
فَذَهَبَ
جُمْهُورُ الْفُقَهَاءِ مِنَ الْحَنَفِيَّةِ وَالْمَالِكِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ
وَالْحَنَابِلَةِ إِلَى أَنَّ بَيْعَ الْهِرَّةِ جَائِزٌ؛ لأَِنَّهَا طَاهِرَةٌ
وَمُنْتَفَعٌ بِهَا وَوُجِدَ فِيهَا جَمِيعُ شُرُوطِ الْبَيْعِ، فَجَازَ بَيْعُهَا
كَالْحِمَارِ وَالْبَغْل،» - «الموسوعة الفقهية الكويتية» (42/
266)
হানাফি,
শাফেয়ী,মালিকি,হাম্বলী মাযহাবের সমস্ত উলামায়ে কেরামের মতে বিড়ালের ক্রয় বিক্রয়
জায়েয। কেননা, বিড়াল
পবিত্র। এবং তা দ্বারা বৈধ ফায়াদ গ্রহণ করা সম্ভব। এবং তার মধ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের সমস্ত
শর্ত বিদ্যমান রয়েছে। সুতরাং গাদা এবং খচ্ছরের মত তার ক্রয়-বিক্রয়ও জায়েযই হবে। ( আল-মাওসুআতুল
ফেকহিয়্যাহ-৪২/২৬৬)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত
রয়েছে,
وَيَجُوزُ
بَيْعُ جَمِيعِ الْحَيَوَانَاتِ سِوَى الْخِنْزِيرِ وَهُوَ الْمُخْتَارُ كَذَا فِي
جَوَاهِرِ الْأَخْلَاطِيِّ.
খিনযির ব্যতীত সকলপ্রকার প্রাণীর
ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। এবং এটাই বিশুদ্ধ মাযহাব। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৩/১১৪)বিস্তারিত
জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/645
৩. https://ifatwa.info/3237/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
সৌর্ন্দয্য বর্ধনে বা শখের বশে বাসা কিংবা
অফিসে খাঁচায় পাখি পোষা ইসলামি শরিয়তে নিষেধ নয়।
সাহাবায়ে কেরামও সৌখিনতা ও
শখের বশে বিভিন্ন বৈধ প্রাণী পুষেছেন বলে বিভিন্ন কিতাবে বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে সেসবের
প্রয়োজনীয় পরিচর্যা প্রয়োজন। যেমন: নিয়মিত খাবার দেয়া,
পানি বদলে দেয়া,
রোদ কিংবা তাপে তারা যেন কষ্ট না পায়,
সেটা নিশ্চিত করা। তবে এমনিতে অধিক অর্থ
ব্যয় করে এসব ক্রয় করা অনর্থক খরচ। যা মাকরূহ।
তব সবচে’ উত্তম হল বন্য পাখিদের
আটকে না রেখে তাদের মুক্ত করে দেয়া।
عَنْ أَنَسٍ،
قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحْسَنَ النَّاسِ
خُلُقًا، وَكَانَ لِي أَخٌ يُقَالُ لَهُ أَبُو عُمَيْرٍ – قَالَ: أَحْسِبُهُ –
فَطِيمًا، وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَالَ: «يَا أَبَا عُمَيْرٍ، مَا فَعَلَ
النُّغَيْرُ» نُغَرٌ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ، فَرُبَّمَا حَضَرَ الصَّلاَةَ وَهُوَ
فِي بَيْتِنَا، فَيَأْمُرُ بِالْبِسَاطِ الَّذِي تَحْتَهُ فَيُكْنَسُ وَيُنْضَحُ،
ثُمَّ يَقُومُ وَنَقُومُ خَلْفَهُ فَيُصَلِّي بِنَا
হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত
যে, রাসূল
সাঃ সবার চেয়ে বেশি সদাচারী ছিলেন। আমার একজন
ভাই ছিল। তাকে আবু উমায়ের ডাকা হতো। আমার অনুমান যে,
সে তখন মায়ে দুধ খেতো না। যখনি সে তার
নিকট আসতো, তিনি
বলতেন, হে
আবু উমায়ের! তোমার নুগায়ের কি করছে? সে নুগায়ের পাখিটা নিয়ে খেলতো। আর প্রায়ই যখন নামাযের
সময় হতো, আর
তিনি আমাদের ঘরে থাকতেন, তখন
তার নিচে যে বিছানা থাকতো, সামান্য
পানি ছিটিয়ে ঝেরে দেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দিতেন। তারপর তিনি নামাযের জন্য দাড়াতেন।
এবং আমরাও তার পেছনে দাড়াতাম। আর তিনি আমাদের নিয়ে নামায আদায় করতেন। {বুখারী, হাদীস নং-৬২০৩}
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে
বর্ণিত। সাহাবায়ে কেরাম রাঃ রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করেন-
قَالُوا: يَا
رَسُولَ اللَّهِ، وَإِنَّ لَنَا فِي البَهَائِمِ أَجْرًا؟ قَالَ: «فِي كُلِّ
كَبِدٍ رَطْبَةٍ أَجْرٌ
হে আল্লাহর রাসূল! জীব জন্তুর
জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীদের জন্য পুরস্কার আছে।
{বুখারী,
হাদীস নং-২৩৬৩}
আর যথাযথভাবে খাদ্য প্রদান,
পরিচর্যা ও যত্ন না নিতে পারলে এসব পালন
ও পোষা জায়েজ হবে না।
এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে,
হজরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,
এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য শাস্তি দেয়া
হয়েছে। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল এবং অবশেষে সে মারা গিয়েছিল,
পরিণতিতে মহিলা তারই কারণে জাহান্নামে
প্রবেশ করল। সে যখন তাকে বেঁধে রেখেছিল, তখন তাকে আহার ও পানি দিত না এবং তাকে ছেড়েও
দিত না যে, সে
কীট-পতঙ্গ ধরে খাবে। -সহিহ বোখারি: ২৩৬৫
সুতরাং উপরোক্ত নীতি মানতে
না পারলে পাখি বন্দি না
রেখে ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয়।