بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
https://ifatwa.info/4200/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন
প্রকার:
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে
দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।
২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো
হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ
ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর
দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান
মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে
জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়।
৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ
মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়।
হাদীস শরীফে এসেছে
خَالِدُ بْنُ
مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا
رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ
مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو
سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا
هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.
আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে
হয়, আর
মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা
তার কাছে খারাপ লাগে, তা
হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয়
চায়। কেননা, তা
হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন
এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়,
তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই
করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭]
অন্য এক হাদীসে এসেছে
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ
سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ
رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ
عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ،
فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ
يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে
বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন,
যেখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে,
যা সে পছন্দ করে,
তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন
এ জন্য আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয়
কিছু দেখে, তাহলে
তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর ক্ষতি থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন
তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না। ( বুখারী ৬৯৮৫,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৪)
উপরোক্ত হাদীসের আলোকে দুঃস্বপ্ন
দেখলে আমাদের যা যা করতে হবেঃ
১) দুঃস্বপ্নের ক্ষতি ও অনিষ্ট
থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এভাবে সকল প্রকার ক্ষতি থেকে আল্লাহ
তাআলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত।
২) শয়তানের অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা
থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এবং এর জন্য আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম পড়তে
হবে। কারণ, খারাপ
স্বপ্ন শয়তানের কুপ্রভাবে হয়ে থাকে।
৩) ঘুম ভাঙার পর বাঁ দিকে
তিনবার থুথু নিক্ষেপ করতে হবে। এটা করতে হবে শয়তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ ও তার চক্রান্তকে
অপমান করার জন্য।
৪) যে দিক ফিরে দুঃস্বপ্ন
দেখেছে তা পরিবর্তন করে অন্য দিক ফিরে ঘুমাতে হবে। অবস্থাকে বদলে দেয়ার ইঙ্গিত স্বরূপ
এটা করতে বলা হয়েছে।
৫) খারাপ স্বপ্ন দেখলে কারো
কাছে বলা যাবে না। আর নিজেও এর ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
হাদিসে এসেছে,
নবী করিম সা. এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল,
ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে দেখেছি,
আমার মাথা কেটে ফেলা হয়েছে। এ কথা শুনে
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে ফেললেন। আর বললেন,
ঘুমের মধ্যে শয়তান তোমাদের কারো সাথে যদি
দুষ্টুমি করে, তবে
তা মানুষের কাছে বলবে না। (মুসলিম শরীফ-২২৬৮)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী
ভাই/বোন!
প্রশ্নে
উল্লেখিত ছুরতে ঐ বোন তার স্বপ্নের
কথা কাহারো কাছে বলবেন না।
আল্লাহর কাছে উক্ত বিষয় থেকে পানাহ চাইবেন
ও উপরে উল্লেখিত নির্দেশনাগুলো মেনে চলবেন। ৫
ওয়াক্ত নামাজ, যিকির-আযকার ও নেক আমলের উপর গুরুত্ব দিবেন। স্বপ্নের ক্ষতি থেকে আল্লাহ তায়ালা তাকে ও তার মেয়েকে হেফাজত
করবেন ইনশাআল্লাহ।