আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
149 views
in খাদ্য ও পানীয় (Food & Drink) by (7 points)
আমাদের প্রতিবেশীদের পারিবারিক কবরস্থানে বেশ কিছু ওষুধি গাছ আছে , উনারা পরিবারসহ ঢাকায় থাকেন।  যেকারণে ব্যবহার করার মতো কেউ নেই বলে ঐ গাছগুলোর ফুল ও পাতা এমনিতেই ঝড়ে পড়ে নষ্ট হয়।
আমাদের সাথে উনাদের সম্পর্কটা এমন যে আমরা ওগুলো থেকে উপকৃত হওয়ার অনুমতি চাইলে উনারা মানা করবেন না। কিন্তু যেহেতু আমাদের যোগাযোগ খুব একটা হয়না তাই শুধুমাত্র যখন তখন এই ফুল, পাতা নেওয়ার জন্য ফোন দিয়ে অনুমতি নেওয়াটা  আমাদের এবং উনাদের জন্য একটু বিব্রতকর।
এক্ষেত্রে কি আমি অনুমতি নেওয়াটা বাধ্যতামুলক? অনুমতি ছাড়া কি ব্যবহার করতে পারবো, যেহেতু ব্যবহার না করলেও এগুলো ঝড়ে পড়ে অপচয়ই হচ্ছে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ

তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা-২৯)

এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,

عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم

  " ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "

নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না। (তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)

আরো জানুন- https://www.ifatwa.info/3747

  যদি মালিকের পক্ষ থেকে যদি ফল কুড়িয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রকার বাধা বা নিষেধ করা না হয়, তাহলে আপনার জন্য ওইসব গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল কুড়িয়ে খাওয়া জায়েয হয়েছে। অবশ্য কখনো যদি এ ব্যাপারে মালিকের অসম্মতি বা অসন্তুষ্টি বোঝা যায়, তখন পড়ে থাকা ফলও কুড়িয়ে নেওয়া জায়েয হবে না। (আদ্দুররুল মুখতার : ৪/২৮৪; ফাতাওয়া খানিয়া : ৩/৩৯১; আলমুহিতুল বুরহানি : ৮/৫৪; আন-নাহরুল ফায়েক : ৩/২৮৪)

কোনো অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি এমন ফল খেতে পারবে কিনা এ সংক্রান্ত হাদিসে এসেছে- আমর ইবনে শোয়াইব তার পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.)- কে গাছে ঝুলন্ত ফলের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি (সা.) বললেন, যদি কোনো অভাবগ্রস্ত তা থেকে কিছু খায়, তাতে কিছুই নেই; যদি আঁচলে ভরে কিছু না নিয়ে যায়। হ্যাঁ, যদি কিছু নিয়ে যায়, তাহলে তার ওপর দুই গুণ দণ্ড বর্তাবে, তারপর শাস্তিও হবে। আর শস্য মাড়াইয়ের স্থানে বা শস্য উঠান শুকানোর জন্য রাখার পর যে সেখান থেকে একটি ঢাল পরিমাণ মূল্যের কিছু চুরি করবে, তার হাত কাটা যাবে। উল্লেখ্য যে, আমর (রা.)-এর দাদা হারানো উট ও ছাগলের বর্ণনা করেন, যেভাবে অন্যরা উল্লেখ করেছেন।

তিনি আরও বলেছেন যে, আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে হারানো জিনিস সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করা হলো। তখন তিনি (সা.) বললেন, যা চলমান পথে-ঘাটে অথবা ঘনবসতি এলাকায় পাওয়া যায়, তবে তার জন্য সে এক বছর প্রচার করবে। তারপর যদি তার মালিক পাওয়া যায়, তবে তো তা তাকে দিয়ে দেবে। আর যদি এর মালিক না আসে, তবে তা তোমার (অধিকার) হবে। আর যা জনমানবহীন জায়গায় পাওয়া যায়, তখন সেটা এবং মাটিতে প্রোথিত গুপ্তধনের এক-পঞ্চমাংশ বায়তুল মালে (সরকারি কোষাগারে) দিতে হবে। (আর অবশিষ্টটা তোমার হবে)। [আবু দাঊদ, হাদিস : ১৭১০, সহিহ আল-জামি, হাদিস : ৫৬৫৮, নাসায়ি, হাদিস : ৪৯৫৮]

 গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল মালিকের অনুমতি ছাড়া খাওয়া বৈধ হবে না। যদি মালিকের পক্ষ থেকে অনুমতি থাকে, তাহলে খাওয়া বৈধ হবে। চাই অনুমতি প্রত্যক্ষভাবে থাকুক বা পরোক্ষভাবে থাকুক। (রদ্দুল মুহতার : ৬/৪৪৪; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ৫/৩৯৩; মাজমাউল আনহুর : ২/২৫৬, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ২৩/৩৭৯)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

অন্য কারো সামান্যতম জিনিসও তার অনুমোদন ব্যতিত ব্যবহার করা জায়েয হবে না। তবে কোনো জিনিস সম্পর্কে কারো মৌন অনুমোদন থাকলে, তখন অবশ্যই সেই জিনিস ব্যবহার করা জায়েয হবে। প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, আপনি প্রতিবেশী মালিক পক্ষ থেকে কমপক্ষে একবার এমন ভাবে স্পষ্ট আকারে অনুমতি নিবেন যে, পরবর্তীতে যেন পুনরায় অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন না পড়ে। অর্থাৎ পরবর্তিতে যখনই আপনাদের প্রয়োজন পড়বে আপনারা যেন তা ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে প্রত্যেক বার অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...