আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (54 points)
আসসালামু আলাইকুম।  আমার শশুরবাড়িতে জয়েন্ট ফ্যামিলি। আমি ছাড়াও আরো দুই ছেলের বউ আছে। শশুর নেই,  শাশুড়ী আছেন। সমস্যা উনাকে নিয়েই। উনি ছেলের বউদের উপর বেশ মানসিক নির্যাতন করেন। কিছু হলেই বলেন তোমাদের বাবা মা তোমাদের কিছু শিখায় নাই। ছেলেদের কানে বউদের নামে অভিযোগ করে কান ভারী করেন। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথাও আমার হাজব্যান্ড এর কানে তুলেছেন, এরপর আমার হাজব্যান্ড আমার সাথে যা তা ব্যবহার করেছে। যদিও অভিযোগ টা বানানো ছিল।  উনি নানাবিধ খোটা দেন। যেমন বুয়াই তো সব কাজ করে দেয়,  আমাদের সময় আমরা কত কষ্ট করেছি তোমাদের তো কিছুই করা লাগে না। অথচ বাসায় ভোর হতে রান্না শুরু করে কাজের কমতি নাই। আমার নিজের কাপড় বাচ্চার কাপড় নিজেই ধুই।জয়েন্ট ফ্যামিলির এতগুলো মানুষের প্রতিদিনের রান্না,  তাও ৫-৬ পদের প্রতিদিনের রান্না,  অফিসএর রান্না,  বাচ্চা সামলানো, শাশুড়ী স্বামীর খেদমত,  মেহমান লেগেই থাকে সেসব মেহমানদারি সব আমরা বউরাই করি। তাও এত কথা শোনা লাগে। হাজব্যান্ড রা কখনো আমাদের ঘরের কাজে সাহায্য করতে আসলে তাদেরকেও বকাবকি করেন। এত খোটা দেন আর এত কথা শোনান। মাঝে মাঝে অসহ্য লাগে। দুই বউ কথা বললেও উনি সন্দেহ করেন আমরা উনার নামে বদনাম করছি এবং সেটা নিয়ে চার্জ ও করেন। উনি উনার ছেলেকে এটাও বলেছেন, ছেলের বউএর সামনেই, যে মা র চোখ থাকে ছেলের পেটের দিকে, আর বউএর নজর থাকে ছেলের পকেটের দিকে। এভাবে উনি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক বিষিয়ে তোলেন। উনার অনুমতি ছাড়া বাসার মনে হয় একটা ধুলাও নড়ানো যায় না। সবমিলিয়ে দমবন্ধকর পরিস্থিতি।
এখন মাঝে মাঝে অসহ্য হয়ে আমরা তিন বউ উনার করা এসব জুলুমের কথা নিজেরা আলোচনা করে দু:খের কথা একে অপরের সাথে শেয়ার করি। কারন আর কাউকে বলা যায়না। স্বামীরাও মা র কথা অন্ধের মত মানে,  উনার আজেবাজে কথা মিথ্যা কথাও সাপোর্ট করে। আর বাবার বাড়িতেও আমরা শশুরবাড়ির এসব কথা আলোচনা করিনা।
তাই একটু হালকা হতে আমরা তিন বউ উনার যুলুমের কথা নিজেদের মধ্যেই বলে চোখের পানি ফেলি।
এখন প্রশ্ন হল এসব যুলুমের কথা আলোচনা করলে কি গীবত হবে?
((এত বেশি মানসিক নির্যাতন করেন যে সহ্য করা যায় না মাঝে মাঝে। আবার ছেলেদের সামনে আরেক অভিনয় করেন,ছেলেরা সামনে থাকলে বউদের সাথে ভাল ব্যবহার করেন।))

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ  

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ [٤٩:١٢] 

মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। {সূরা হুজুরাত-১২}

عَنْ أَبِي سَعْدٍ، وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا “، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَكَيْفَ الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا؟ قَالَ: ” إِنَّ الرَّجُلَ لَيَزْنِي فَيَتُوبُ فَيَتُوبُ اللهُ عَلَيْهِ “وَفِي رِوَايَةِ حَمْزَةَ ” فَيَتُوبُ فَيَغْفِرُ لَهُ، وَإِنَّ صَاحِبَ الْغِيبَةِ لَا يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَغْفِرَهَا لَهُ صَاحِبُهُ  

হযরত আবু সাঈস এবং জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। উভয়ে বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ গীবত করা ব্যভিচার করার চেয়েও জঘন্য। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! গীবত করা ব্যভিচারের চেয়ে জঘন্য হয় কি করে? রাসূল সাঃ বললেনঃ নিশ্চয় ব্যভিচারকারী ব্যভিচার করে তওবা করে থাকে, ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, কিন্তু গীবতকারীকে ক্ষমা করা হয় না, যতক্ষণ না যার গীবত করেছে সে তাকে ক্ষমা করে। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬৩১৫, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫৯০}

ছয়টি কারণে গীবত করা জায়েজ আছে। 

 الأول: التظلم. يجوز للمظلوم أن يتظلم إلى السلطان والقاضي وغيرهما ممن له ولاية أو له قدرة على إنصافه من ظالمه، فيذكر أن فلانا ظلمني وفعل بي كذا وأخذ لي كذا ونحو ذلك. 

(এক) জালিমের জুলুম থেকে বাঁচতে বিচারকের নিকট জালিমের বিরুদ্ধে নালিশ/গিবত করা বৈধ।যেমন মজলুম ব্যক্তি বিচারকের নিকট গিয়ে বলল,অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম-নির্যাতন করেছে।এবং আমার সাথে সে এমন এমন ব্যবহার করেছে।আমার অমুক অমুক জিনিষ সে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

 الثاني: الاستعانة على تغيير المنكر ورد العاصي إلى الصواب. وبيانه أن يقول لمن يرجو قدرته على إزالة المنكر: فلان يعمل كذا فازجره عنه ونحو ذلك، ويكون مقصوده إزالة المنكر، فإن لم يقصد ذلك كان حراما. 

(দুই) মন্দকে পরিবর্তন করতে এবং গোনাহগারকে নেকির দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে কারো গীবত করা।যেমন এমন কারো কাছে গিয়ে গিবত করা,যে ব্যক্তি ঐ মন্দকাজ সম্পাদনকারীকে ধমক দিতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি।শর্ত এই যে, মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যই থাকতে হবে।উদ্দেশ্য যদি অন্য কিছু হয় তখন কিন্তু গীবত করা জায়েয হবে না বরং হারাম হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার শাশুড়ীকে যে ব্যাক্তি বুঝাতে পারে, ধমক দিতে পারে/সংশোধন এর চেষ্টা করতে পারে,মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যে তার কাছে এটি বলা জায়েজ আছে।
যেমন আপনার স্বামী বা আপনার অভিভাবক ইত্যাদি। 

নতুবা এমনিতেই নিজেদের (৩ বউদের) মাঝে এটি নিয়ে আলোচনা করা,যাতে কোনো ফায়দা নেই,এটি গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে।

এটি জায়েজ নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
উনাকে বুঝাবে এরকম কেউ নাই। উনার বাবা মা নাই। উনি উনার ভাইবোনদের মধ্যে সবার বড়। অন্য খালাম্মা বা মামাশশুর উনাকে এসব নিয়ে কিছু বললে উনি তো শুনবেনইনা বরঞ্চ তেড়েফুঁড়ে উলটা আমাদের সাথেই আবার ঝগড়া করবেন,  চার্জ করবেন। আর উনার ছেলেদের তো কিছু বলাই যাবেনা,  বললে বলবে বাসা থেকে বের হয়ে যাও। ইনফ্যাক্ট আমার দু ভাসুর উনাদের ওয়াইফদের এরকম বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলেছেও দুই বার করে। 
উনি যদি অন্যায় ও করেন উনার ছেলেরা সেটা স্বীকার ও করবেনা। আর ছেলেরা বউদের বিশ্বাস করেনা। আর উনি ছেলেদের সামনে এমন মধুর ব্যবহার করেন যে ছেলেদের বললেও বিশ্বাস করবে না।
উনাকে বুঝানোর মত কেউ নেই। 
তাহলে একা একা এসব কতটা হজম করা সম্ভব?  আমরাও তো মানুষ। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...