আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
109 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (48 points)

আসসালামু আলাইকুম হুজুর।  নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলে উপকৃত হতাম। 
 

১) আমি স্টক সাইটে ছবি বিক্রির কাজ করি। বর্তমানে যে ছবির চাহিদা বেশি থাকে সেই ছবি আপলোড দিলে ওই ছবি বিক্রির বেশি সম্ভাবনা থাকে। এখন স্টক ওয়েবসাইটে কোন ছবিগুলো বেশি বিক্রি হয় সেই ছবিগুলো থেকে আইডিয়া নিয়ে কি ছবি তৈরি করে বিক্রি করতে পারবো? (উল্লেখ্য স্টক ওয়েবসাইট থেকে স্বাভাবিকভাবেই বর্তমানে কোন ছবি গুলোর ডিমান্ড সবচেয়ে বেশি তা দেখা যায়। আর এগুলো মূলত কোন কোন সেলারের ছবি এই সপ্তাহে/মাসে বেশি বিক্রি হয়েছে তা দেখায়।)

 

১.১) এখানে টাইটেল আর কীওয়ার্ড দেয়া থাকে ছবির সাথে, যেগুলো পড়লে ছবিতে কি কি বস্তুু আছে তা আরও স্পষ্টভাবে বুঝা যায়। অনেক বস্তু হয়তো দেখে বুঝতে পারি যে এগুলো কি কিন্তু সেগুলোর আমি সঠিক নাম জানিনা। আর না পড়লে শুধু ছবি দেখে আইডিয়া করতে হবে। এখন টাইটেল ও কিওয়ার্ড দেখে আইডিয়া করা জায়েজ হবে? নাকি শুধু ছবি দেখেই আইডিয়া করব?

 

২) আমি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে ছবি তৈরি করি। ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে একটি কমান্ড দিতে হয় যেটা প্রোমট নামে পরিচিত। আবার সঙ্গে একটা ছবি দেওয়া যেতে পারে যেটা দেখে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অনুরূপভাবে ছবি তৈরি করার চেষ্টা করবে, এটা ইন্সপায়রেশন। তবে হুবহু এক হয়তো হবে না। এখন কোন সেলারের বিক্রিকৃত ছবি আমি ইন্সপায়রেশন হিসেবে ব্যবহার করতে পারব? আর ইন্সপারেশন হিসেবে ব্যবহার করার পর যদি ছবি হুবহু না হয় তাহলে কি সেই ছবিটা আমি বিক্রি করতে পারবো? 


 

৩) আমি যেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করি ছবি তৈরি করার জন্য, সেখানে কিছুদিন আগে আমি আমার নিজের জিমেইল দিয়ে লগআউট করি আর অন্য জিমেইল দিয়ে লগিন দিলে লগিন হয়ে যায়। এতে আমি আমার আইডিতে নতুন করে ফ্রি ডেইলি টুকেন পাই। নতুন জিমেইল দিয়ে লগিন দিলেও আগে যেই জিমেইল দিয়ে একাউন্ট করেছিলাম সেই জিমেইলের জেনারেটেড ছবিগুলো ওই আইডিতে তখনো রয়ে গিয়েছিল কিন্তু নতুন করে ডেইলি ফ্রী টোকেন যোগ হয়েছিল। এখন একইদিনে এভাবে ২-৩ দিন আমি ২ বার অন্য জিমেইল দিয়ে লগিন করে ছবি তৈরি করেছিলাম, যাতে আমি প্রতিদিনের ডেইলি ফ্রি টোকেন পাই। এখন আমি টুকেন ব্যবহার করে ছবি তৈরি করি। কিন্তুু আমি এভাবে দুই-তিন দিন পর তাদেরকে মেইল করে জানতে চাই তোমাদের কোম্পানি থেকে কি কোন নিষেধাজ্ঞা আছে একই সাথে একের অধিক  আইডি ব্যবহারে। তারা তখন উত্তরে বলে একাধিক আইডি তৈরি করা ফ্রি টোকেনের জন্য তাদের নিয়মের ভঙ্গন(Hello, it is a violation of Terms of Service to create multiple free accounts to abuse the free Token system.

Please do not create multiple accounts, we have systems in place to detect this form of abuse and will take immediate action)। একই সাথে তারা আরো বলে একাধিক আইডি তৈরি করলে তারা সেটা ধরে ফেলবে এবং ব্যবস্থা নিবে। তবে আমি তো একইসাথে একাধিক আইডি তৈরি করিনি বরং একাধিক আইডি লগিন করেছি। আর তখন আমি কিছু ছবি তৈরি করে পরবর্তীতে  যে সকল কাজ করতে হয় ছবি বিক্রির জন্য তাও করে ফেলেছিলাম। যেহেতু আমি মধ্যে অতিরিক্ত টুকেনের সুবিধা নিয়েছি তাই আমি গত ৩ দিন ছবি তৈরির সেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ওয়েবসাইট ব্যবহার করিনি। এখন ঐ ২-৩ দিন যখন একাধিক জিমেল আইডি একদিনে লগইন করেছিলাম এবং ফ্রি টুকেন অধিক পেয়ে অধিক তৈরি করা ছবি কি আমি এখন বিক্রি করতে পারব? যদিও এখানে ঠিক মনে নাই অন্য আইডি ব্যবহার করে কোন কোন ছবি তৈরি করেছিলাম ।


 

জাযাকাল্লাহু খাইরান। 

1 Answer

0 votes
by (559,260 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


সহিহ হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يُجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسٌ فَيُعَذِِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ

‘প্রত্যেক ছবিনির্মাতা জাহান্নামে যাবে, তার নির্মিত প্রতিটি ছবি পরিবর্তে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে, যা তাকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে।’ (বুখারী ২২২৫, ৫৯৬৩, মুসলিম ৫৬৬২)

ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে সব ইমাম ও ফিকহ বিশেষজ্ঞ ও সমকালীন মুফতিদের মতে হারাম। তবে পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট তৈরি বা এজাতীয় বিশেষ প্রয়োজনে ফটো তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা যায়। (ফিকহি মাকালাত; তকি উসমানী : ৪/১২৩)

বিনা প্রয়োজনে কোন প্রাণীর ছবি প্রস্তুত করার পর প্রস্তুতকারীর জন্য যেমন তার মূল্য নেয়া নাজায়িয তেমনি ক্রয়কারীর জন্য তার মূল্য দেয়াও নাজায়িয, এজন্য স্টুডিও ইত্যাদিতে ছবি বানানোর কাজে চাকুরী করাও নাজায়িয। তবে চিত্রকর ছবি বানাতে যে রং ইত্যাদি ব্যয় করেছে তার মূল্য দিয়ে দিবে। (শামী ১/৬৫১)

এ বিষয়ে আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা উত্তর দিয়েছেন,
تصوير ذوات الأرواح حرام والكسب حرام

‘প্রাণীর ছবি বানানো হারাম এবং এর উপার্জনও হারাম।’ (ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা লিল বুহুসিল ইলমিয়্যা ওয়াল ইফতা, ফাতওয়া নং ৬৪০২)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

ছবি ভিডিও শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম।হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
عن ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ :( ﻣﻦ ﺻَﻮَّﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛُﻠِّﻒ ﺃﻥ ﻳَﻨْﻔُﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮُّﻭﺡ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ )
তরজমাঃ- ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, আমি নবী কারীম সাঃ কে বলতে শুনেছি, যে তিনি বলেছেন,
যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন(জানোয়ারের) ছবি আকবে,কিয়ামতের দিন তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে,সে যেন উক্ত ছবির ভিতরে রূহ প্রদান করে, অথচ রূহ প্রদান করা তার জন্য কস্মিনকালে ও সম্ভব হবে না(অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে আযাব প্রদান করা হবে)(সহীহ বুখারী -৫৬১৮)

ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪ
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ কে এক ব্যক্তি ছবি আকার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি উত্তরে বললেনঃযদি তোমার ছবি একে উপার্জন করতেই হয় তাহলে তুমি গাছের ছবি আকো বা এমন ছবি আকো যাতে কোনো প্রাণীর ছবি নেই।(সহীহ বুখারী- ২২২৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/2253

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রাণীর ফটো বিক্রি করা কখনো জায়েয হবে না।তবে আপনি প্রকৃতির ফটো বিক্রয় করতে পারবেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(০১)
এট যদি প্রানীর ছবি না হয়,সেক্ষেত্রে সেই ছবিগুলো থেকে আইডিয়া নিয়ে ছবি তৈরি করে বিক্রি করতে পারবেন।
তবে ছবি গুলো যেনো হুবহু মিলে না যায়।

তবে সেই ছবি গুলি হতে আইডিয়া নেয়া নিষেধ থাকলে আইডিয়া নেয়া জায়েজ হবেনা। 
বিক্রয়ও জায়েজ হবেনা। 

১.১
টাইটেল ও কিওয়ার্ড দেখে আইডিয়া করা জায়েজ হবে। শুধু ছবি দেখেও আইডিয়া করা যাবে। তবে শর্ত হলো যেই ওয়েবসাইট থেকে আপনি আইডিয়া নিবেন,তাদের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা না থাকা।

(০২)
কোন সেলারের বিক্রিকৃত ছবি ইন্সপায়রেশন হিসেবে ব্যবহার করতে  চাইলে তার থেকে অনুমতি নিতে হবে।

নতুবা জায়েজ হবেনা। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
প্রকৃতির ছবি হলে তাহা বিক্রয় করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...