জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বিবাহ পূর্বে প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলা ইসলামি-শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ নয়। ছেলে এবং মেয়ে দু’জনের মধ্যে ইসলামিকভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলার একটাই পদ্ধতি; বিয়ে। কেননা, ইসলামের বিধি-বিধান অনুযায়ী কোন পরনারী কোন পরপুরুষের সান্নিধ্যে আসতে পারেনা।
ইসলামি-শরিয়তের দৃষ্টিতে এগুলো একপ্রকার যিনা বা ব্যভিচার। এমনকি মনে মনে কল্পনা করে তৃপ্তি অনূভব করার দ্বারাও অন্তরের যিনা হয়। যা হারাম এবং কবিরা গুনাহ।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَلا تَقرَبُوا الزِّنى إِنَّهُ كانَ فاحِشَةً وَساءَ سَبيلًا
“আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।” (সূরা ইসরা ৩২)
রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন,
اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْككَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه
‘’দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, জিহবার ব্যভিচার হল, [পরনারীর সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (সহীহ মুসলিম ২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৮৯৩২)
★★শরীয়তের বিধান হলো কোন গোনাহের কাজের প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূর্ণ করা জায়েজ নয়। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিবাহ পূর্ব প্রেম ভালোবাসায় কৃত কোনো ওয়াদা পালন করাই জরুরি নয়। শরীয়ত বলে যে গোনাহের কর্মের কোন প্রতিশ্রুতিই পূর্ণ করা আবশ্যক নয়।
এমন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে কোনো গুনাহ হবেনা।
وَلَا تَجْعَلُوا اللَّهَ عُرْضَةً لِّأَيْمَانِكُمْ أَن تَبَرُّوا وَتَتَّقُوا وَتُصْلِحُوا بَيْنَ النَّاسِ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ [٢:٢٢٤
আর নিজেদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না মানুষের সাথে কোন আচার আচরণ থেকে পরহেযগারী থেকে এবং মানুষের মাঝে মীমাংসা করে দেয়া থেকে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ সবকিছুই শুনেন ও জানেন। {সূরা বাকারা-২২৪}
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم– « مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا فَلْيَأْتِ الَّذِى هُوَ خَيْرٌ وَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন কিছুর কসম খায়, তারপর এর বিপরীত কাজে কল্যাণ দেখে, তাহলে সে যেন উক্ত কল্যাণধর্মী কাজটি করে এবং স্বীয় কসমের কাফফারা প্রদান করে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৩৬২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৩৫২,৪৩৪৭, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-৫৯৩১, মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং-১৮২৫১, মুসনাদুশ শিহাব, হাদীস নং-৫১৬, মুসনাদে ইবনুফ জিদ, হাদীস নং-১৩৬, মুসনাদে তায়ারিসী, হাদীস নং-১৩৭০, মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১৪৫৭, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৩৪৫, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৪৭২৭, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৮৬৩৪, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২১০৮, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬২৪৭}
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার কোনো গুনাহ হবেনা।
তবে যদি তার কোনো হক নষ্ট করা হয়,তাহলে তার কাছ থেকে অবশ্যই ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে,নতুবা মহান আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেননা।
কারন এটি বান্দার হক।
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে দ্বীনদার স্বামীর আশায় থেকে সে যদি ওয়াদা না রাখে তাহলে সে মুনাফিক হয়ে যাবেনা।
বরং তার জন্য দ্বীনদার স্বামীর আশায় থাকাই উচিত।