আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,164 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
reopened by
অনেকেই ফেসবুকে নিজের ছবি দেন। আমি যতদূর জানি সেটাইয় কোন সমস্যা হয় নাহ যতদূর নাহ কোন গায়রে-মাহরামের চোখে পরে ওটি(ফ্রেন্ড লিস্টে থাকলে অথবা প্রাইভেসিতে অ্যালাও করা থাকলে)।

কিন্ত যদি একই সাথে নিজে বউয়ের ছবিও দেয়া হয়, তাহলে সেটা কি জায়েজ হবে? এখানে বলে রাখা দরকার, বউয়ের শুধু মুখ এবং হাত-পা দেখা  যায়। বাকি সবকিছু পর্দা অনুযায়ী(বোরকা) ।

এখানে অনেকেই বলেন যে মেয়েদের তোহ মুখ ঢাকার কোন নিয়ম অথবা দলিল নাই, তাই এরকম ছবি দিলে কোন সমস্যা হবে নাহ।

এই বিষয়টা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছিলাম।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


ইসলামের মৌলিক বিধান হচ্ছে, জড়বস্তুর ছবি তোলা ও আঁকায় শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। আর প্রাণীর ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা হারাম।  

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলা, কম্পিউটার ও মোবাইলে সংরক্ষিত ছবিও ‘নিষিদ্ধ ছবি’র অন্তর্ভুক্ত বিধায় এটিও হারাম। 
তাই তাদের মতে ফেসবুক,টুইটার ইত্যাদিতে ছবি আপলোড করাও ও হারাম।

হযরত সাঈদ ইবনে আবিল হাসান রাহ, থেকে বর্ণিত,

 ﻋَﻦْ ﺳَﻌِﻴﺪِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﺭَﺟُﻞٌ ﺃُﺻَﻮِّﺭُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺼُّﻮَﺭَ، ﻓَﺄَﻓْﺘِﻨِﻲ ﻓِﻴﻬَﺎ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﻣِﻨْﻪُ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﺣَﺘَّﻰَ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﻋَﻠَﻰَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃُﻧَﺒُّﺌُﻚَ ﺑِﻤَﺎ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - . ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻳَﻘُﻮﻝُ : " ﻛُﻞُّ ﻣُﺼَﻮِّﺭٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ، ﻳَﺠْﻌَﻞُ ﻟَﻪُ ﺑِﻜُﻞِّ ﺻُﻮﺭَﺓٍ ﺻَﻮَّﺭَﻫَﺎ ﻧَﻔْﺴﺎً ، ﻓَﺘُﻌَﺬِّﺑُﻪُ ﻓِﻲ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ . " ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪُ ، ﻓَﺄَﻗَﺮَّ ﺑِﻪِ ﻧَﺼْﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﻠِﻲٍّ .
 ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 2225 ) ، ﻭﻣﺴﻠﻢ ﻭﺍﺍﻟﻔﻆ ﻟﻪ

জনৈক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রা.) এর নিকট এসে বলল, আমি এসব ছবি অঙ্কন করে থাকি; তাই এ ব্যাপারে আপনি আমাকে ফাতাওয়া দিন। তিনি বললেন, তুমি আমার কাছে এসো। সে তার নিকটে এলে তিনি বললেন, (আরও) নিকটে এসো। সে (আরও) নিকটে এলো। পরিশেষে তিনি তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যা শুনেছি, তাই তোমাকে বলব। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি - প্রত্যেক ছবি প্রস্তুতকারী জাহান্নামের অধিবাসী হবে। তার তৈরিকৃত প্রতিটি ছবিতে জীবন দেয়া হবে, সে সময় জাহান্নামে তাকে ঐগুলো আযাব দিতে থাকবে। তিনি আরও বললেন, তোমাকে একান্তই যদি (তা) করতে হয়, তাহলে গাছ (পালা) এবং প্রাণহীন বস্তুর (ছবি) প্রস্তুত করো।

[ইমাম মুসলিম (রহঃ) এ হাদীস পড়ে শুনালে] নাসর ইবনু আলী (রহঃ) তার অনুমতি দিলেন। 
সহীহ বুখারী-[২২২৫]সহীহ মুসলিম [৫৪৩৩]
,
আরো জানুনঃ 
,
তবে অন্যান্য ইসলামি স্কলারদের মত হলো ফেসবুক,টুইটার ইত্যাদিতে       
মহিলাদের ছবি হলে আপলোড করা বৈধ নয়। 

পুরুষদের ছবি জায়েজ পদ্ধতিতে প্রদর্শিত হলে জায়েজ আছে। তবে উত্তম নয়। বিশেষ করে সমাজের পথিকৃত যেমন উলামায়ে কেরামগণকে এ কর্ম থেকে বিরত থাকাই তাক্বওয়ার দাবী। কিন্তু এসব ছবি প্রিন্ট করা জায়েজ নয়। (তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম-৪/১৬৪)

বর্তমানে ফেসবুক,ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব ছবি আপলোড দেয়া হয়, যেহেতু এগুলোর অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয়,তাই ঢালাওভাবে এগুলোর অনুমোদন দেয়া যায় না। একান্ত প্রয়োজনে ব্যবহার করা শরয়ী দৃষ্টিতে আপত্তিকর নয়। দ্বীনি প্রয়োজনে বর্তমান বিশ্বের গবেষক উলামারা এটাকে হারাম ছবির অন্তর্ভূক্ত মনে করেন না তাদের ফাতাওয়া অনুযায়ী আমল করার অবকাশ রয়েছে। সর্বাবস্থায় একেবারে হালাল মনে করে প্রয়োজন অপ্রয়োজনে এসব ছবির ছড়াছড়ি শরয়ী দৃষ্টিতে গ্রহনযোগ্য নয়। অন্তরে আল্লাহর ভয় বিদ্যমান রেখে সে অনুযায়ী আমল করা দরকার।
,
মহিলাদের হিজাব পড়ে চেহারা ঢেকে সেই ছবি ফেসবুক ইত্যাদিতে আপলোড করাও জায়েজ নেই।
  
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

المرأةُ عورةٌ فإذا خرجتْ اسْتَشْرَفَها الشيطانُ وأقربُ ما تكونُ مِن وَجْهِ ربِّها وهي في قَعْرِ بيتها

নারী গোপনজিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে চুপিসারে দেখে। নারী নিজ প্রভুর সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে। (তিরমিযি ১১৭৩)

লক্ষণীয় বিষয় হল, রাসূলুল্লাহ ﷺ উক্ত কথাটি সাহাবিদের উদ্দেশ্যে যেই সময়ে বলেছেন সেই সময়ে নিশ্চয় নারী-সাহাবিরা হিজাববিহীন বের হতেন না! সুতরাং, নারীদের সব ধরনের পোশাক ও সৌন্দর্য পরপুরুষের সামনে থেকে আড়ালে রাখাটাই হল মূল। 

★গায়রে মাহরাম পুরুষের সামনে  মহিলাদের চেহারা ঢেকে যেতে হবে।
চেহারার পর্দা অবশ্যই করতে হবে।

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ইহরাম অবস্থায় ছিলাম তখন আমাদের পাশ দিয়ে অনেক কাফেলা অতিক্রম করত। তারা যখন আমাদের সামনাসামনি চলে আসত তখন আমাদের সকলেই চেহারার ওপর ওড়না টেনে দিতাম। তারা চলে গেলে আবার তা সরিয়ে নিতাম।-মুসনাদে আহমাদ ৬/৩০; ইবনে মাজাহ,
হাদীস: ২৯৩৫

এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখা আবশ্যক।

আরো জানুনঃ
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  নিজের ছবির  সহিত নিজ স্ত্রীর ছবি আপলোড দেওয়া কোনো ভাবেই  জায়েজ হবেনা।
এটি স্পষ্ট নাজায়েজ।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...