আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
127 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার কয়েকটি প্রশ্ন রয়েছে।

১. আমি একসময় হারাম সম্পর্কে জড়িয় ছিলাম। অনেকদিন হলো এসব থেকে বিরত এবং সেই মেয়ের সঙ্গে সকলপ্রকার যোগাযোগ অফ করে দিয়েছি। কিন্তু সমস্যা হলো সে যেহেতু আমার ফোন/বিকাশ নম্বর জানতো, সে এখনো হটাৎ হটাৎ ঈদ উপলক্ষে/ আমার জন্মদিন উপলক্ষে বিকাশে হাদিয়া পাঠায়। আমি টাকা আবার রিটার্ন করে দেই বিকাশে, কিন্তু তারপরও মাঝে মাঝে টাকা পাঠায়। এখন আমার এইসব হাদিয়া গ্রহণ করা কি জায়েজ হবে নাকি আমি ফেরত দিয়ে দিব? হাদিয়া ফেরত দেওয়া কি গুণাহ?

২. আমার সাধারণত নামাজ কাযা হয় না আলহামদুলিল্লাহ।  হটাৎ কোনো অসুস্থতা অথবা অন্য কোনো খুবই জরুরতের কারণে কাযা হয়ে যায়। আমার গতকাল জ্বরের কারণে খারাপ লাগায়, আমি মাগরিবের নামাজ না পরে ঘুমিয়ে গিয়েছে, এবং এশার ওয়াক্তে মাগরিব পরেছি। এতে কি আমার গুণাহ হয়েছে?

৩. ফজরের সুন্নত নামাজ শুরু করার পর যদি দেখি জামাতের নামাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন সুন্নত ছেড়ে দিয়ে জামাতে অংশ নিলে কি গুণাহ হবে?

ধন্যবাদ

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

শরীয়তের বিধান হলো  জন্মদিন (Birthday) পালন করা এবং এ উপলক্ষে কাউকে হ্যাপি বার্থডে বলে উইশ (wish) করা বা গিফট লেনদেন করা। কারণ তা অমুসলিমদের সংস্কৃতি। আর ইসলামে অমুসলিমদের অনুসরণ-অনুকরণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ-চাই তা ইবাদতের ক্ষেত্রে হোক অথবা আচার-আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, রীতি-নীতি বা কৃষ্টি-কালচারের ক্ষেত্রে হোক। কেননা হাদিসে এসেছে:

 আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।” [সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: পোশাক-পরিচ্ছেদ হা/৪০৩১-]

 সাহাবী আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«لَتَتَّبِعُنَّ سَنَنَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حذو القذة بالقذة حَتَّى لَوْ دخلوا جُحْرَ ضَبٍّ لَدخلتتُمُوهُ قالوا: يَا رسول الله الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى. قَالَ: فَمَنْ؟»

‘‘তোমরা অবশ্যই পূর্ববর্তী উম্মতদের অভ্যাস ও রীতি-নীতির ঠিক ঐ রকম অনুসরণ করবে, যেমন এক তীরের ফলা অন্য এক তীরের ফলার সমান হয়। অর্থাৎ তোমরা পদে পদে তাদের অনুসরণ করে চলবে। এমনকি তারা যদি শাণ্ডা (মরুভূমিতে বসবাসকারী গুই সাপের ন্যায় এক ধরণের জন্তু বিশেষ) এর গর্তে প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও সেখানে প্রবেশ করবে।”

সাহাবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! পূর্ববর্তী উম্মত দ্বারা আপনি কি ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বোঝাচ্ছেন?

তিনি বললেন: তবে আর কারা?

[বুখারী, অধ্যায়: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী: ”তোমরা অবশ্যই পূর্ববর্তী লোকদের রীতি-নীতির অনুসরণ করবে।” তবে বুখারীর বর্ণনায় حذو القذة بالقذة এই শব্দসমূহ নেই। তার স্থলে شبرا بشبر وذراعا بذراع শব্দগুলো রয়েছে। অর্থাৎ এক হাতের বিঘত যেমন অন্য হাতের বিঘতের সমান হয় এবং এক হাতের বাহু অন্য হাতের বাহুর সমান হয়।]

যা হোক, ইসলামে যেহেতু জন্ম-মৃত্যু দিবস পালন করার অস্তিত্ব নেই সেহেতু অমুসলিমদের সাদৃশ্য অবলম্বনে জন্মদিবস (Birth Day) পালন করার সুযোগ নাই।

সুতরাং এ উপলক্ষে কাউকে হ্যাপি বার্থডে বলে উইশ (wish) করা, শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো, গিফট দেয়া, কেক কাটা, মোমবাতি জ্বালানো বা ফুঁ দিয়ে নিভানো, বিশেষ খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা, জন্ম দিনের পার্টি করা সবই হারাম।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই / বোন!

১. প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তার সাথে ফিতনার আশংকা হতে পারে। কারণ আপনি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও সে আপনাকে এখনো মিস করে। সুতরায় তার দেওয়া হাদিয়া গ্রহণ বা ব্যবহার করা নাজায়েজ। তবে ফেতনার আশংকা না হলেও উল্লেখিত গিফট কোনো গরিব মিসকিনকে দিয়ে দেওয়াই উত্তম হবে যদি সে ফেরত না নেয়।

২. জ্বী মাগরীবের নামাজ এশার ওয়াক্তে পড়লে তা কাযা নামাজ হিসেবে সহীহ হয়ে যাবে। তবে নামাজ কাযা হওয়ার গুনাহ হবে। অতএব যত ব্যস্ততায় থাক না কেন! কমপক্ষে ফরজ সালাতটুকু হলেও ওয়াক্তমত আদায় করার চেষ্টা করতে হবে।

৩. মসজিদে গিয়ে যদি দেখা যায় জামা'আত দাড়িয়ে গিয়েছে, তাহলে দেখতে হবে যে যদি ইমামের সাথে শেষ বৈঠকে শরীক হওয়ার আশা থাকে, তাহলে এক্ষেত্রে আগে সুন্নাত পড়বে, তারপর জামা'আতে শরিক হবে । যদি শেষ বৈঠকে শরীক হওয়ার আশা না থাকে, বরং জামা'আত শেষ হওয়ার আশংকা থাকে,তাহলে আগে সুন্নাত পড়বেনা। বরং জামাতে শরীক হবেন। আরো বিস্তারিত জানুন: https://ifatwa.info/36581/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...