আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
164 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited by
উল্লেখ্য তাদের এই বিয়ের ব্যাপার এ তাদের কিছু বান্ধবী ছাড়া আর কেউ জানে নাহ,,তারা যে একে অপরকে পছন্দ করে তা তাদের বাবা মা কে জানানো হয়েছে,,পরিবার থেকে তাদের পছন্দকে মেনে নিয়েছে,,কিছুদিনের মধ্যেই পারিবারিক ভাবে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে,,এখন কি তারা একে অপরের সাথে কথা বলতে পারবে নাকি,,নাকি তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দিবে,,তাদের আসলে করণীয় কি,,তারা খুবই অনুতপ্ত তাদের এই পাপ কাজের জন্য,,তারা আসলে কিভাবে আল্লাহর এর কাছে মাফ চাইতে পারে।।।

1 Answer

0 votes
by (57,120 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/31550/ নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যেশরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না

রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)! (সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

সুতরাং আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে যাবে। যদিও আপনাদের পরিবার কিছুই না জানে বা রাজি না থাকে। কিংবা তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কাজি বা হুজুরের কোনো প্রয়োজন নেই।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ

হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}

2469 حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: ” أَنَّ جَارِيَةً بِكْرًا أَتَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَذَكَرَتْ أَنَّ أبَاهَا زَوَّجَهَا وَهِيَ كَارِهَةٌ فَخَيَّرَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

إسناده صحيح على شرط البخاري.

 

وأخرجه أبو داود (2096) ، وابن ماجه (1875) ، والنسائي في “الكبرى” (5387) ، وأبو يعلى (2526) ، والطحاوي 4/365، والدارقطني 3/234-235، والبيهقي 7/117 من طريق حسين بن محمد المروذي، بهذا الإسناد.

وأخرجه ابن ماجه (1875) ، والنسائي (5389) ، والدارقطني 3/235 من طريق مُعمر بن سليمان، عن زيد بن حبان، والدارقطني 3/235 من طريق أيوب بن سويد، عن سفيان الثوري، كلاهما عن أيوب السختياني، به.

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। কুমারী মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমার অপছন্দ সত্বেও বিয়ে দিয়েছে, তখন রাসূল সাঃ সে মেয়েকে অধিকার দিলেন, [যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে বা এ বিয়ে রাখতেও পারে]। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৬৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৬, সুনানুল কুবরা নাসায়ী, হাদীস নং-৫৩৬৬, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৬৬}

عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: جَاءَتْ فَتَاةٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: ” إِنَّ أَبِي زَوَّجَنِي ابْنَ أَخِيهِ، لِيَرْفَعَ بِي خَسِيسَتَهُ، قَالَ: فَجَعَلَ الْأَمْرَ إِلَيْهَا، فَقَالَتْ: قَدْ أَجَزْتُ مَا صَنَعَ أَبِي، وَلَكِنْ أَرَدْتُ أَنْ تَعْلَمَ النِّسَاءُ أَنْ لَيْسَ إِلَى الْآبَاءِ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ

হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, [অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে] তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের [চূড়ান্ত] মতের অধিকার নেই্ {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫}

উল্লেখিত হাদীস ছাড়াও আরো এমন অনেক হাদীস রয়েছে, যা স্পষ্ট ভাষায় প্রমাণ করে যে, বিয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবক নয়, প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে পিতা বা অভিভাবকের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই / বোন!

কোন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা মহিলা অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করলে তা সম্পন্ন হয়ে যাবে। সুতরাং তারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় কমপক্ষে দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করেন, তাহলে তাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে যাবে। যদিও তাদের পরিবার কিছুই না জানে বা রাজি না থাকে। তবে মা বাবাকে না জানিয়ে উক্ত বিয়ে করাটা তাদের জন্য মোটেও উচিত হয়নি। তাদেরকে জানিয়েই বিয়ে করাই উচিত ছিল।

সুতরাং পূর্বের বিবাহ সহিহ হয়ে থাকলে তাদের পরস্পরে কথা বলা জায়েয আছে। কারণ, তারা স্বামী স্ত্রী। যদিও সকলে তা জানে না । এখন পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে নবায়ন করা হচ্ছে যা শরীয়তে স্বীকৃত বিষয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...