بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
হজরত আবু জর (রা.) বর্ণনা
করেন, নবীজি (সা.) বলেছেন,
‘জমজমের পানি বরকতময়, স্বাদ অন্বেষণকারীর খাদ্য।’
-(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৪৭৩)
মুসনাদে তায়ালুসিতে এই হাদিসের
একটি বর্ধিত অংশ উদ্ধৃত হয়েছে, ‘এবং রোগীর ওষুধ।’ আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ
(সা.) নিজের সঙ্গে পাত্রে ও মশকে করে জমজমের পানি বহন করতেন। তা অসুস্থদের ওপর ছিটিয়ে
দিতেন এবং তাদের পান করাতেন। (সুনানে তিরমিজি)
এ বর্ণনা থেকে এ কথাও জানা
যায় যে জমজমের পানি বহন করা জায়েজ। আর যারা জমজম কূপের কাছে নয়, তাদের পান করানো রাসূল সা. এর সুন্নাত।
জমজম থেকে পানি পানকারী ব্যক্তির
জন্য সুন্নত হলো পুরোপুরিভাবে পরিতৃপ্ত হয়ে পান করা। ফকিহগণ জমজমের পানি পানের কিছু
আদব উল্লেখ করেছেন, যেমন- কিবলামুখী
হওয়া, বিসমিল্লাহ বলা, তিন শ্বাসে পান করা,
পরিতৃপ্ত হওয়া, শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা ইত্যাদি। জমজমের পানি পান করার সময় একটি বড় কাজ হলো দোয়া
করা।
এ জন্য আমরা পূর্বসূরি মনীষীদের
জীবনেতিহাসে দেখতে পাই, তারা জমজমের
পানি পানের সময় বিভিন্ন দোয়া করতেন। এখানে কয়েকজন মনীষীর উদ্ধৃতি দেয়া হলো-
আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি
(রহ.) বলেন, হাফিজ ইবনে
হাজার আসকালানি (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জমজমের পানি পান করেছিলাম স্মৃতিশক্তিতে হাফিজ শামসুদ্দিন জাহাবি (রহ.)
এর স্তরে পৌঁছার নিয়তে। সুয়ুতি বলেন, ইবনে হাজার ওই স্তরে পৌঁছেছিলেন;
বরং তার স্মৃতিশক্তি আরো অধিক প্রখর হয়েছিল। (তাবাকাতুল হুফফাজ : ১/৫২২)
জমজমের পানি রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তাই জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম মনে
করা হয়। তবে এভাবে জমজমের পানি পান করা জরুরি নয়।
তবে স্বাভাবিক অবস্থায় অন্যান্য
পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে মাকরূহে তানজিহী। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দাঁড়িয়ে পানি পান করাতে নিষেধ করেছেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম নিজে এবং তার কিছু সাহাবির দাঁড়িয়ে পানি করা সম্পর্কিত হাদীস পাওয়া যায়।
যা প্রমাণ করে দাঁড়িয়ে পানি পান করা হারাম বা মাকরূহে তাহরীমি নয়।
হজরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে
বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। (সহীহ
মুসলিম, হাদীস নং-২০২৭)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই
/ বোন!
সাধারণত একটি নিয়তে পান করার
বর্ণনা পাওয়া গেলেও একাধিক নিয়তে জমজমের পানি পান করতে কোন বাধা নেই। এটি জায়েয আছে।