আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
257 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (67 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
1. https://ifatwa.info/82712/ এখানে বলেছিলাম যে বাবা মা রাজি না, ভাই রাজি। আমি শেষ পর্যন্ত ওনাকে মেইল দিয়েছিলাম যা ভাই ভাবীর সাথে শেয়ার করেছি। আমার ভাই ভাবী বিদেশে থাকেন আর দেশে থাকলেও এভাবে ওনাদের বাসায় যেতে রাজি হতেন না। আমাদের বাড়ি এক জেলায় হলেও আমরা ঢাকায় থাকি যেখানে এভাবে আসা যাওয়া কল্পনাও করা যায় না আর গেলেও ভাইয়া চান আমি নিজে আগে কথা বলি ছেলের সাথে এরপর পছন্দ হলে ভাইয়া কথা বলবেন। মেইলের রিপ্লাইয়ে উনি বলেছিলেন যে উনি ওনার বাবা মা ও বড় বোনের সাথে আমার ব্যাপারে কথা বলেছেন। ওনারাও তাকে বলেছেন যে আমার সাথে সামনাসামনি ওনাকে আগে কথা বলে দেখতে যে আমরা একজন আরেকজনের যোগ্য কিনা। কথা প্রসঙ্গে বলে রাখি আমি হানাফী মাজহাবের আর উনি হাম্বলি মাজহাবের(ওনার পরিবারের বাকি সবাই হানাফী)। ওনাকে বলেছিলাম যে মাহরাম ছাড়া এভাবে দেখা করাটা ঠিক হবে কিনা। উনি জানিয়েছিলেন যে ছেলেদের তো মাহরাম বা ওয়ালি জরুরি না। আমাকেই বললেন বোন/ভাবী/বান্ধবী এরকম কাউকে মাহরাম হিসেবে আনতে। আমি কি আমার বান্ধবীকে মাহরাম বানিয়ে ওনার সাথে দেখা করতে পারব? নাকি ওনাকেই পুশ করা উচিত মাহরাম আনার ব্যাপারে? আর হানাফী ও হাম্বলী এই দুই মাজহাবের পাত্র পাত্রীর কি কোন সমস্যা হতে পারে ভবিষ্যতে?

2. বাসায় জায়নামাজ ধুয়ে দেওয়া হয়েছে বা নেই অথবা কোন কারণ ছাড়াই বিছানা বা সোফায় কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করা যাবে?

3. এক মহিলা তার স্বামী দ্বারা নির্যাতনের শিকার। তার বাবা মা বেঁচে নেই, ভাইয়েরা অনেক দূরে থাকেন যেই দূরত্বে মাহরাম ছাড়া সফর করা জায়েজ নেই। এখন তিনি কি স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে ভাইদের কাছে আসতে পারবেন?

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
https://ifatwa.info/2898/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়,তাহলে ঐ মহিলাকে দেখতে পারবে।কথা বলতে পারবে।

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)


হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে।

(সহীহ মুসলিম-১৪২৪)


" يَجُوزُ تَكْرَارُ النَّظَرِ إِنِ احْتَاجَ إِلَيْهِ لِيَتَبَيَّنَ هيئتها ، فَلاَ يَنْدَمُ بَعْدَ النِّكَاحِ ، إِذْ لاَ يَحْصُل الْغَرَضُ غَالِبًا بِأَوَّل نَظْرَةٍ ".

বারংবার দৃষ্টি দেয়া জায়েয।যাতেকরে পাত্রীর পূর্ণ অবয়ব পরিস্কার ভাবে ফুটে উঠে।এবং যাতেকরে বিয়ে পরবর্তী লজ্জিত হতে না হয়।কেননা একবারের দৃষ্টি অধিকাংশ সময়ে যথেষ্ট নাও হতে পারে।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২২/১৭)

পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-

(১)খালওয়াত হতে পারবে না।

(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না

(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।

(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।

(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে

(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।

যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
পাত্রের বাবা মায়ের সম্মতিতে পাত্রের বাসায় উপরে উল্লেখিত সমস্ত শর্ত মেনে এভাবে দেখা করলে যদিও গুনাহ হবেনা।
,
তবে এভাবে বাবা মাকে না জানিয়ে বান্ধবীর সাথে গিয়ে পাত্রের সাথে দেখা করার অনুমতি আমরা দিতে পারিনা।

হানাফি,সালাফির বিবাহের ক্ষেত্রে শরীয়তের দিক হতে কোনো সমস্যা হবে কিনা,এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(০২)
হ্যাঁ, উক্ত বিছানা/সোফা পাক থাকলে তার উপর সালাত আদায় করা যাবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে করনীয় হলো তার ভাইয়েরা তার বাসায় আসবে,অথবা আপনার এলাকার নিকটে আপনাকে নিয়ে যাবে।

আপনার ভাইয়েরা ছাড়া এভাবে সফরের দূরত্ব পরিমান মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর আপনার জন্য জায়েজ হবেনা।

তবে কোনো ক্রমেই যদি তার ভাইয়েরা তার বাসায় বা তার এলাকার নিকটে তাকে নিতে না আসে,এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে মেয়েটি যদি দিনের বেলা ভাইয়ের বাসায় চলে যায়,সেক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে তওবা করে নিবে।
আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করবেন,ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (67 points)
বাবা মা সম্মত না, কিন্তু ভাই তো সম্মত এক্ষেত্রেও কি দেখা করা যাবে না? 
by (573,660 points)
উপরে উল্লেখিত সমস্ত শর্ত মেনে এভাবে দেখা করলে গুনাহ হবেনা।
by
Jazakallahu Khair 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...