আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
145 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
স্বামী তর্কের এক পর্যায়ে স্ত্রীকে আঘাত দিয়েছে(চর থাপ্পড়) পরে (স্ত্রী) ও তাকে গালি দিয়েছে এবং গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। রাগে দুইজন দুইজনার জামাও ছিড়ে ফেলেছে।

মাঝেমধ্যে এরকম হয়ে থাকে তাদের মধ্যে।পরে তাদের মিমাংশা হয়নি। পরে ভালোবাসা ও সংসার না হারানোর চিন্তায় আর হ্বক নষ্ট করার চিন্তায় ব্যক্তিটি তার নিজের ভুলত্রুটির জন্য অনুতপ্ত হয়ে  সবদোষ নিজের ঘাড়ে নিয়ে তার স্ত্রীর সাথে সংসার শুরু করার কথা বললে মেয়ে ও তার পরিবার রাজি হয়নি। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তালাক হয়েছে। দুইজনই কমবেশি অপরাধ করলেও উচ্চ তাকওয়া ও আল্লাহ ভীতির জন্য স্ত্রীর কাছে বারবার ক্ষমা চেয়েছে স্বামী।কিন্তু,তার স্ত্রী তাকে ঘৃনা করে এবং ক্ষমা চাওয়া এসব ভন্ডামি, মুনাফিকি ভেবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছিল।

প্রশ্ন:১/এইক্ষেত্রে স্বামীর ওই স্থানে বারবার ক্ষমা চাওয়া বা বিনয় প্রকাশ করলে অপমানিত তাচ্ছিল্য হতে হচ্ছে। তাই এখন সে নিজের ভুলত্রুটি এবং সকল কিছুর জন্য আল্লাহর কাছেই তাওবা ইস্তেগফার করলেই কি হবে? তার সাবেক স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করা বা বিনয় প্রকাশ করা এখন পারিবারিকভাবে অনুচিত।
২/স্বামীর পরিবারের মতনুযায়ী সেই মেয়েও অনেক খারাপ আচরণ, অনুমতি ছাড়াই ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়া রাগে বেয়াদবি স্বামীর সাথে করেছে কিন্তু মেয়ে ক্ষমা চাইনা কিন্তু তুমি স্বামী হিসেবে শাসন করেছে এবং চর দিয়েছ দুই/তিনদিন এতে এতো ভেংগে পড়ার দরকার নাই। মাফ আল্লাহর কাছে চাও এভাবে পরিবার বলছে। স্বামী নিজেও বুঝতে পারছে স্ত্রীজাতি কিছু উল্টোপাল্টা করলে তাকে বুঝিয়ে ঠিক করা  কিন্তু গালে আঘাত করা জায়েয নাই তাই সে কষ্ট পাচ্ছে এবং সংকিত যে এতে আল্লাহ নারাজ হয়ে গেলেন কিনা এমনকি তাদের তালাক ও হয়ে গেছে সবকিছু পরিস্থিতি মিলিয়ে?

1 Answer

0 votes
by (559,260 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


ক্ষমাশীল মানুষ সর্বোত্তম ব্যবহারকারী ও ধৈর্যশীল। যিনি উদারপ্রকৃতির, তিনিই ক্ষমাশীল। যাদের এ ধরনের গুণাগুণ রয়েছে, তারা আল্লাহ তাআলার বিশেষ নেয়ামতপ্রাপ্ত। ক্ষমাকারী ধৈর্যবান ও সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

মহান আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। যে অন্যকে ক্ষমা করে তাকেও ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ يُنفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ ۗ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ

‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সম্বরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৪)

জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ অন্যের রূঢ় বা কটু কথাবার্তা কিংবা অশোভনীয় আচার-আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকেন। ফলে একে অপরে মতবিরোধ তৈরি হয়। অনেক সময় মতবিরোধ ও মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আল্লাহ তাআলা মানুষকে আদেশ দিয়েছেন, যেন একে-অপরকে ক্ষমা করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,

إِن تُبْدُوا خَيْرًا أَوْ تُخْفُوهُ أَوْ تَعْفُوا عَن سُوءٍ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ عَفُوًّا قَدِيرًا

 ‘যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ করো কিংবা গোপন করো অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান। ’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১৪৯)

ক্ষমাকারীকে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে পুরস্কার দেবেন। পরস্পরের মধ্যে বিরোধ নিষ্পন্নকারীও আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَجَزَاءُ سَيِّئَةٍ سَيِّئَةٌ مِّثْلُهَا ۖ فَمَنْ عَفَا وَأَصْلَحَ فَأَجْرُهُ عَلَى اللَّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ

 ‘আর মন্দের প্রতিফল মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না। ’ (সুরা শুরা, আয়াত: ৪০)

ক্ষমা করলে কারও মর্যাদা কমে না। বরং বহু গুণে ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন করেছেন, সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে, তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (মুসলিম, হাদিস: ২৫৮৮)

উদারতা ও সহিষ্ণুতা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। কোমলতা ও হৃদয়ার্দ্রতা মুমিনদের বিশেষ একটি গুণ। আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন সাহাবি মুয়াজ  (রা.) ও মুসা (রা.) কে ইয়ামেনে প্রেরণ করেন ও আদেশ দেন, ‘লোকদের প্রতি কোমলতা করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুখবর দেবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না। ’ (বুখারি, হাদিস: ৩০৩৮)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি যেহেতু তার থেকে বারবার ক্ষমা চেয়েছেন,
এমতাস্থায় তার উচিত ছিলো আপনাকে ক্ষমা করা। এরপরও যেহেতু সে ক্ষমা করছেনা,বরং আপনাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে, সুতরাং এখন আপনি আল্লাহ তায়ালার নিকট বেশী বেশী ইস্তেগফার ও ক্ষমা চাইবেন, আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেন ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...