আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
80 views
in সাওম (Fasting) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।
শায়েখ আমার ২টি প্রশ্ন
১নং ঃ  একজন  মৃত ব্যাক্তি  যার ৪ টা রোযা নস্ট হয়েছে, ২টা কামনায়, তবে সহবাশ হয়নি কারণ  স্ত্রীর নিফাস চলছিল,  আর ২টা অপারেশন এর জন্য ডাক্তার রাখতে  দেইনি।
কোনটারই ক্বাজা করা  হয়নি সেক্ষেত্রে কাফফারা কত কিভাবে দেব?  আপাতত কোনো আয়ের উৎস নেই।৷ পাওনা টাকা দিয়ে সংসার চলছে!।

 ২ নং ঃ আমার ৪ সন্তান,  ১ম সন্তানের বয়স হতো ২১+ সে জন্মের দিন মারা যায়, সে সময়ের নিফাসের জন্য বাদ দেয়া রোযা সহ বাকি সন্তানদের বেলাতেও বেশ কিছু রোযা বাদ গেছে।

শেষ সন্তানের বয়স ৬ মাস, ওর জন্মের পরেও নিফাসের জন্য কিছু আর দুধ পান করানোর জন্য কিছু রোযা বাদ গেছে কারণ আমি জীবনের অধিকাংশ সময়ই রক্ত শুণ্যতায়  ভুগি। সব মিলিয়ে হয়তো বাদ যাওয়া রোযা২মাস+ হবে,  এখন  আমি কিভাবে এর কাফফারা করবো? উল্লেখ্য এত রোযা কাজা তুলে দেয়ার অবস্থা নেই কারণ আমি ২/৩ রোযা গ্যাপ দিয়ে করলেও অসুস্থ হয়ে যাই তার উপর বাচ্চা দুধ পান করে, আর আমার আয়েরও কোনো উৎস আপাতত নেই,  আমার কি কাজা তুলে দিতেই হবে নাকি শুধু কাফফারা করলেই হবে,?  আর কাফফারা কত নির্ধারিত হবে?  জাঝাকাল্লাহ খাইরান !!

1 Answer

0 votes
by (676,480 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَمَا أَهْلَكَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: «صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا»

অনুবাদ- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। রাসূল সাঃ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী সাঃ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন রাসূল সাঃ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}

★★রোযার কাফফারা আদায় করার পদ্ধতিঃ 

আপনি যদি শারিরিকভাবে শক্ত সামর্থ হয়ে থাকেন। তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। মাঝখানে রোযা ভাঙ্গা যাবে না। যদি মাঝখানে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে আবার প্রথম থেকে ৬০ দিন গণনা করতে হবে। এভাবে ষাট দিন রোযা রাখলে আপনার রোযা ভঙ্গের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আর যদি লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হন, তাহলে প্রতি রোযার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবদের দান করে দেয়া আবশ্যক। তথা ষাট রোযার জন্য ষাটটি সদকায়ে ফিতির পরিমাণ অর্থ দান করা আবশ্যক।
প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া । 
 যেমন সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা যদি ৬০ টাকা হয়। তাহলে আপনার তিন হাজার ছয়শত টাকা দান করা আবশ্যক। কিন্তু মনে রাখতে হবে রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
“সহবাস ছাড়া অন্য কারণে রোযা ভঙ্গ করলে এক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্য যেমন একটি কাফফারা যথেষ্ট। তেমনি একাধিক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্যও একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে। একাধিক কাফফারা আদায় করা জরুরী নয়। 

কিন্তু যদি সহবাসের দ্বারা রোযা ভঙ্গ করে থাকে, তাহলে এক রমজানে যদি একাধিক রোযা ভঙ্গ করে থাকে সহবাস করে তাহলে এক কাফফারা আদায় করলেই সকল রোযা ভঙ্গের কাফফারা হয়ে যাবে। একাধিক আদায় করা জরুরী নয়।

কিন্তু যদি দুই রমজানে সহবাসের দ্বারা রোযা ভঙ্গ করে থাকে, তাহলে দুই রমজানের জন্য আলাদা দুইটি কাফফারা আদায় করতে হবে। এক কাফফারা আদায় যথেষ্ট হবে না”।
(ইমদাদুল ফাতাওয়া-২/১৩৪-১৩৬।) 

ولو تكرر فطره ولم يكفر للأول يكفيه واحدة ولو في رمضانين عند محمد وعليه الاعتماد بزازية ومجتبى وغيرهما واختار بعضهم للفتوى أن الفطر بغير الجماع تداخل وإلا لا (رد المحتار، كتاب الصوم، مطلب فى الكفارة-3/391، مراقى الفلاح، فصل فى الكفارة-552، البحر الرائق-2/277)
সারমর্মঃ
যদি একাধিক রোযা ভেঙ্গে ফেলে,প্রথমটির যদি কাফফারা আদায় না করে থাকে,তাহলে একটি কাফফারাই যথেষ্ট। 
যদিও দুই রমজানে হোক।
সহবাস ব্যাতিত রোযা  ভেঙ্গে ফেললে কাফফারা একটির মধ্যে অন্যটি প্রবেশ করলে (একটি দ্বারাই আদায় হয়ে যাবে।)  

বিস্তারিত জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে একটি রোযার কাফফারা আদায় করতে হবে।
৬০ টি সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

এখন ব্যাক্তি যেহেতু জীবিত নেই,আর কাফফারা আদায়ের অছিয়তও করে যায়নি,তাই তার ওয়ারিশদের উপর কাফফারা আদায় আবশ্যক নয়।

হ্যাঁ যদি তারা ৬০ টি সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা গরিব মিসকিনকে দান করে মাইয়্যিতের পক্ষ হতে কাফফারা আদায় করে দিতে চায়,সেক্ষেত্রে তাহা দয়া ও অনুগ্রহ বলে বিবেচিত হবে।

(০২)
বাচ্চা যখন আর দুধ পান করবেনা,আপনি যখন শারীরিক ভাবে এসব রোযার কাজা আদায়ে সক্ষম হবেন,তখন আস্তে-ধীরে এসব রোযার কাজা আদায় করে নিবেন।

এসব রোযার কাফফারা নেই।
সব রোযা আপনাকে কাজা আদায় করতেই হবে।

হ্যাঁ জীবনের শেষ সময়ে যদি আপনি এমন অসুস্থ হোন যে আর সুস্থতা লাভের আশা না করা যায়, সেক্ষেত্রে বাদ পড়া রোযা প্রত্যেকটি রোযার জন্য ফিদইয়াহ আদায় করতে হবে।

জীবদ্দশায় ফিদইয়াহ আদায় করতে না পারলে সেক্ষেত্রে অছিয়ত করে যেতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 162 views
...