হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَيْنَ الْعَبْدِ وَبَيْنَ الْكُفْرِ ترك الصَّلَاة» . رَوَاهُ مُسلم
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মু’মিন) বান্দা ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করা।
সহীহ : মুসলিম ৮২, আবূ দাঊদ ৪৬৭৮, নাসায়ী ৪৬৪, তিরমিযী ২৬২০, ইবনু মাজাহ্ ১০৭৮।
এই হাদীসের ব্যখ্যাঃ-
উপরোক্ত হাদীসটি দৃঢ়তার সাথে প্রমাণ করে যে, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বর্জন কুফরীকে অনিবার্য করে দেয়। সকল মুসলিম মনীষীর ঐকমত্যে, বিশ্বাস সহকারে কেউ সালাত বর্জন করলে সে কাফির হয়ে যাবে। তবে সালাত আদায় ওয়াজিব মনে করে ও অলসতাবশত কেউ সালাত বর্জন করলে তার কুফরীর ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে।
★কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে ঐ ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবে।
তবে অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের বক্তব্য হল, এমন ব্যক্তি কাফের হবে না। তাকে ফাসেক বলা হবে। তাদের দলিল হল, হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
‘আল্লাহ তাআলা তো এমন ব্যক্তির প্রতি জাহান্নাম হারাম করে দিয়েছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২৫]
উক্ত হাদিসে বলা হয়েছে, শুধু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললেই মানুষ কোনো এক সময় জান্নাতে যেতে পারবে। নামাজের কথা এই হাদিসে বলা হয়নি। সুতরাং নামাজ না পড়লে যদি ব্যক্তি কাফেরই হয়ে যায় তাহলে সে তো জান্নাতে যেতে পারত না।
আরেক হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে পালন করবে, আর অবহেলাহেতু এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা (যথাযথভাবে) আদায় করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৪২০]
এই হাদিস থেকেও বুঝা যাচ্ছে, নামাজ না পড়লে ব্যক্তি কাফের হবে না। যদি কাফের হয়ে যেত তাহলে নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নামে পাঠাবেন। জান্নাতে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। অথচ হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করলে তাকে জাহান্নামে দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
সুতরাং নামাজ অস্বীকারকারী নয় এমন ব্যক্তি নামাজ না পড়লে কাফের হবে না।
হানাফি মাযহাব মতে ইচ্ছাকৃত নামাজ ত্যাগ করলে সে কাফের হয়ে যায়না। তার বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকবে। সুতরাং পুনরায় ঈমান আনতে হবেনা। বিবাহ পুনরায় দোহরাতে হবেনা।