আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
105 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্।
আমি কিছু স্টুডেন্ট পড়াই। যাদেরকে মাঝে মাঝে বকাবাদ্য করি। এতে তাঁরা মন খারাপ করে, (কান্নাও করে)। পরে নিজের কাছেই খারাপ লাগে। মনে হয় হক নষ্ট করে ফেললাম কিনা। মাথায় প্রশ্ন আসে - যদি সেদিন আমি মারা যাই, আর আমার উপর তাঁর কষ্ট থাকলো তাহলে কি আমাকে গুনাহগার হতে হবে?
শিক্ষকের আদব সম্পর্কে বিস্তারিত বললে উপকৃত হতাম, ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (58,500 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَلَمْ يُوَقِّرْ كَبِيرَنَا وَيَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদেরকে অনুগ্রহ করে না, আমাদের বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না, ভালো কাজের আদেশ করে না এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে না, সে আমাদের দলের নয়। (তিরমিযী ১৯২১, য‘ঈফ আত্ তারগীব ১৩৯৩, য‘ঈফুল জামি‘ ৪৯৩৮।)

 

আল্লাহপাক বলেন, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, এতিম ও দরিদ্রদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার তথা সুন্দর আচরণ করবে এবং মানুষকে সুন্দর কথা বলবে। (সূরা বাকারা : আয়াত : ৮৩)

 

রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।’ (সুনানে তিরমিজি) তিনি আরও বলেন, ‘ভালো কথা সদকাস্বরূপ’ (সুনানে বায়হাকি)

 

রাসূল (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সুন্দর আচরণের চেয়ে অধিক ভারী আমল আর কিছুই হবে না। যে ব্যক্তি অশ্লীল ও কটু কথা বলে বা অশোভন আচরণ করে, তাকে আল্লাহতায়ালা ঘৃণা করেন। আর যার ব্যবহার সুন্দর, সে তার ব্যবহারের কারণে নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের সওয়াব লাভ করবে।’ (সুনানে তিরমিজি)

 

তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে তা হলো আল্লাহতায়ালার ভয় ও সুন্দর আচরণ। আর সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে তা হলো মুখ এবং লজ্জাস্থান।’ (সুনানে তিরমিজি) তিনি আরও বলেন, ‘সুন্দর আচরণই নেক আমল। (সহিহ মুসলিম)

 

ভালো কাজ বলতে যা বোঝায় তা হলো সব কল্যাণকর কাজ। চাই কাজটি নিজের হোক কিংবা পরের হোক। ইসলামে যে কোনো ভালো কাজকে সদকা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এ প্রসঙ্গে রাসূল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক ভালো কাজই সদকা’ (সহিহ বুখারি : হাদিস : ৬০২১, সুনানে তিরমিজি : হাদিস : ১৯৭০)

 

সব মানুষকে ভালো কাজ করার প্রতি উৎসাহ দিয়ে রাসূল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলিমের ওপর সদকা করা কর্তব্য। সাহাবিরা বললেন, যদি তার (আর্থিক) সামর্থ্য না থাকে। নবি করিম (সা.) বললেন, তাহলে সে নিজ কর্মের মাধ্যমে নিজের এবং অপরের সাহায্য করবে। তারা বললেন, যদি সে এটি করতে সক্ষম না হয় বা না করে। তিনি (সা.) বললেন, তাহলে সে অসহায় মুখাপেক্ষীকে সাহায্য করবে। তারা বললেন, যদি সে তা না করে। তিনি (সা.) বললেন, তাহলে সে অন্যকে ভালো কাজের আদেশ করবে। তারা বললেন, যদি সে তা না করে। তিনি (সা.) বললেন, তাহলে সে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকবে, এটিই তার জন্য সদকাস্বরূপ।’ (সহিহ বুখারি)

 

গণমানুষের কল্যাণে অনেক মহৎপ্রাণ ব্যক্তি এমন কিছু কাজ করেন, যা কেবল পার্থিব জগতেই নয় বরং পরকালেও এর প্রতিদান পাওয়া যায়। মানুষের এমন সব কাজ সদকা হিসাবে বিবেচিত হবে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুমিনের ইন্তেকালের পরও তার যেসব নেক ‘আমল ও নেক কাজের সাওয়াব তার কাছে সব সময় পৌঁছতে থাকবে, তার মধ্যে-(১) ‘ইলম বা জ্ঞান-যা সে শিখেছে এবং প্রচার করেছে; (২) নেক সন্তান যাকে সে দুনিয়ায় রেখে গেছে; (৩) কুরআন যা সে উত্তরাধিকারীদের জন্য রেখে গেছে; (৪) মসজিদ যা সে নির্মাণ করে গেছে; (৫) মুসাফিরখানা যা সে পথিক মুসাফিরদের জন্য নির্মাণ করে গেছে; (৬) কূপ বা ঝরনা যা সে খনন করে গেছে মানুষের পানি ব্যবহার করার জন্য এবং (৭) দান-খয়রাত যা সুস্থ ও জীবিতাবস্থায় তার ধন-সম্পদ থেকে দান করে গেছে। মৃত্যুর পর এসব নেক কাজের সাওয়াব তার কাছে পৌঁছতে থাকবে। (সুনানে ইবনু মাজাহ : হাদিস : ২৪২, সহিহ তারগিব : হাদিস : ৭৭)

 

পরিশেষে মহান আল্লাহপাক আমাদের ভালো কাজ ও সুন্দর আচরণের মাধ্যমে প্রাত্যহিক ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। (কপি)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি তাদেরকে উত্তম আখলাকের সাথে পড়ানোর চেষ্টা করবেন। তাদেরকে মারধর, খুব বেশী বকা, ভয় দেখানো ইত্যাদি থেকে বিরত থাকবেন। তবে পড়ানোর জন্য হালকা বকা (তবে এতো বেশী বকা দেওয়াও যাবে না যাতে করে তারা কান্না কাটি করে বা শারিরিক ও মানসিক চাপে থাকে) দিতে পারবেন বা প্রয়োজনে তাদের পিতা মাতাকে জানিয়ে তাদের মাধ্যমেও কিছু করতে পারেন যাতে করে তারা নিয়মিত পড়া দেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...