আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
98 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (13 points)

বিদেশে এসে প্রথমদিকে একটা বাসায় উঠেছিলাম, বাংলাদেশী যে লোক উঠিয়েছিল সে দুর্নীতি করেছে আমাদের সাথে। প্রাপ‍্যের চাইতে বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে । আমরা একপর্যায়ে প্রতারণা বুঝতে পারি এবং ঐ বাসা থেকে চলে আসি। চলে আসার সময় আমার মুরব্বিরা সে বাসার প্লেট প্রিছ এসব কিছু নিয়ে আসে। আমি ও আমার বোন তৎক্ষণাৎ বাধা দিয়েছিলাম চুরি করা হবে। তখন বলল যে আমরা  সামান্য কিছু জিনিস নিয়েছি।যা হারিয়েছিতারচেয়ে নগণ্য। হিসাব করে দেখাল এতটাকা বেশি নিয়েছে আমরা বড়জোর নিএছি এতটাকার মত জিনিস।এরপর নতুন যে বাসায় উঠি ওখানেও ব‍্যয় সংকুলান না হওয়ায় আলেকটা কম দামি বাসায় উঠি। তো এবারো তারা একি ঘটনার পুনরাবৃত্তি করল। আমি আবার বললাম চুরির বিষয়টা। তখন বলল এই বাসায় তো কিছুই নাই। এগুলো কিনবে কে? খরচই চলেনা। আর আমরা তো সাময়িক ব‍্যবহারের জন্য নিচ্ছি। ওদের দেশের জিনিস ওদের দেশেই ফেলে যাব আমাদের নিজেদের জিনিস বানিয়ে তো নিচ্ছিনা। বিদেশ আসতে গিয়ে যে পরিমাণ প্রতারণার শিকার হয়েছি এতটুকুতেকিছু হবেনা। আল্লাহ্ মাফ করে দিবেন। 

উল্লিখিত পরিস্থিতিতে  প্রতারণা হলে কি চুরি বৈধ হয়ে যাবে? 

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

ifatwa.info/46246/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

কারোর নিকট বান্দার হক পাওনা থাকলে,প্রথমে উক্ত হক পরিশোধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে। সাধ্যমত চেষ্টা করার পরও যদি সেই হককে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত প্রাপ্য হক্বকে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবে এবং আল্লাহ তা'আলার নিকট খালিছ নিয়তে তাওবাহ করবে। আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ্য থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০,

ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

 

ifatwa.info/8668   নং ফাতাওয়াতে বলেছি যে,

অন্যর মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত কারো জন্য হালাল হয় না। বিদায় এসব পরিত্যাজ্য।

 

কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ

তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা-২৯)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাসা থেকে ঐ জিনিসগুলো নেওয়া জায়েজ হয়নি। বরং ঐগুলো চুরি করার হুকুমে হবে এবং আপনাদের মধ্যে (যিনি নিয়েছেন তার) গোনাহ হবে।  আর যারা আপনাদের সাথে প্রতারণা করেছে অবশ্যই তাদের গোনাহ হবে। তাই বলে ঐ জিনিসগুলো নেওয়া জায়েজ হয়নি।

সুতরাং যাদের যাদের হক নষ্ট করা হয়েছে বা চুরি করা হয়েছে তা হিসেব করে করে তাদের সবার নিকট ঐ জিনিসগুলো বা তার মূল্য পৌছিয়ে দিতে হবে। আর লজ্জাবোধ করলে হাদিয়া নামে হলেও তাদেরকে দিতে হবে। পৌছিয়ে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করার পরও যদি পৌছানো সম্ভব না হয়, তাহলে তখন তাদের নামে উক্ত জিনিসগুলো বা তার মূল্য গরীবদেরকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকাহ করে দিতে হবে। পাশা পাশি তওবাও করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 127 views
...