বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَاللَّاتِي يَأْتِينَ الْفَاحِشَةَ مِنْ نِسَائِكُمْ فَاسْتَشْهِدُوا عَلَيْهِنَّ أَرْبَعَةً مِنْكُمْ
অর্থঃ “তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচার করে তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য হতে চারজন সাক্ষী তলব কর।” ((সূরা নিসা, আয়াত-১৫।))
হযরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণীত একটি হাদীসে
سعد بن عبادة قال لرسول الله صلى الله عليه وسلم: يا رسول الله، أرأيت إن وجدت مع امرأتي رجلا، أمهل حتى آتي بأربعة شهداء؟ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “نعم”
হযরত সা’দ ইবনে উবাদাহ রাঃ রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন , হে আল্লাহর রাসূল সাঃ আমি যদি আমার স্ত্রীর সাথে কাউকে দেখি তাহলে আমি কি চারজন সাক্ষী উপস্থিত করা পর্যন্ত ছেড়ে দিব? উত্তরে রাসূল সাঃ বললেন : হা। শায়েখ শুয়াইব আরনাউত বলেন; হাদীসের সনদটি সহীহ। ((সহী ইবনে হিব্বান , তাহকীক, শুয়াইব আরনাউত, হাদীস নং ৪৪০৯। ” মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ১৪৯৮।))
খলীফা উমার রাঃ আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাঃ কে বলেন:
لَوْ رَأَيْتَ رَجُلاً عَلَى حَدٍّ زِنًا ، أَوْ سَرِقَةٍ وَأَنْتَ أَمِيرٌ فَقَالَ شَهَادَتُكَ شَهَادَةُ رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ قَالَ صَدَقْتَ
অর্থঃ আপনি শাসক থাকা অবস্থায় যদি কাউক ব্যভিচারের অপরাধে বা চুরির অপরাধে রত দেখতে পান তাহলে তার বিচারের বিধান কী? (নিজের দেখাতেই কি বিচার করতে পারবেন?) ” আব্দুর রহমান রাঃ বললেন, “আপনার সাক্ষ্যও একজন সাধারন মুসলিমের সাক্ষ্যের সমান।” উমার রাঃ বলেন,“আপনি ঠিকই বলেছেন।”((বুখারী আস-সহীহ , কিতাবুল ফিতান, বাব, আশ্ শাহাাদাত তাকুনু ইনদাল হাকীম।))
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিবাহিত নারী পুরুষের ক্ষেত্রে যিনা ব্যভিচারের শাস্তি হল মৃত্যুদণ্ড। আর অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে ১০০টি বেত্রাঘাত। মানুষের জীবন অতি মূল্যবান। তাই যে কারো উপর যিনার অপবাদ দিয়ে দুয়েকজনের সাক্ষীর বিত্তিতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ইসলাম দেয়নি। ইসলামের ইতিহাসে এ যাবৎ যিনার সাক্ষীর বিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড হয়নি,যে ক'জনের হয়েছে, তা স্বীকারোক্তির মাধ্যমেই হয়েছে। যদি কোনো নারী কোনো পুরুষের ব্যাপারে যিনার/ধর্ষণের অপবাদ দেয়, তাহলে পুরুষকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে স্বীকারোক্তি প্রদাণের যাবতীয় চেষ্টাপ্রচেষ্টা চালানো আইনশৃংখলা বাহিনীর একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। এভাবেই ধর্ষককে তার প্রাপ্য শাস্তির উপযুক্ত করে তুলা প্রশাসনের দায়িত্ব। তারপরও যদি সে মুখ না খুলে, তাহলে তাকে মৃত্যুদণ্ড ব্যতিত অন্যান্য ভয়ানক শাস্তি রাস্ট্রীয় আইনে প্রদান করা হবে।যাকে শরীয়তে তা'যির বলা হয়।
আলকামা ইবনু ওয়াইল কিন্দী তার পিতা ওয়াইল কিন্দী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,
عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ الْكِنْدِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ امْرَأَةً، خَرَجَتْ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تُرِيدُ الصَّلاَةَ فَتَلَقَّاهَا رَجُلٌ فَتَجَلَّلَهَا فَقَضَى حَاجَتَهُ مِنْهَا فَصَاحَتْ فَانْطَلَقَ وَمَرَّ عَلَيْهَا رَجُلٌ فَقَالَتْ إِنَّ ذَاكَ الرَّجُلَ فَعَلَ بِي كَذَا وَكَذَا . وَمَرَّتْ بِعِصَابَةٍ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ فَقَالَتْ إِنَّ ذَاكَ الرَّجُلَ فَعَلَ بِي كَذَا وَكَذَا . فَانْطَلَقُوا فَأَخَذُوا الرَّجُلَ الَّذِي ظَنَّتْ أَنَّهُ وَقَعَ عَلَيْهَا وَأَتَوْهَا فَقَالَتْ نَعَمْ هُوَ هَذَا . فَأَتَوْا بِهِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أَمَرَ بِهِ لِيُرْجَمَ قَامَ صَاحِبُهَا الَّذِي وَقَعَ عَلَيْهَا فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَا صَاحِبُهَا . فَقَالَ لَهَا " اذْهَبِي فَقَدْ غَفَرَ اللَّهُ لَكِ " . وَقَالَ لِلرَّجُلِ قَوْلاً حَسَنًا وَقَالَ لِلرَّجُلِ الَّذِي وَقَعَ عَلَيْهَا " ارْجُمُوهُ " . وَقَالَ " لَقَدْ تَابَ تَوْبَةً لَوْ تَابَهَا أَهْلُ الْمَدِينَةِ لَقُبِلَ مِنْهُمْ "
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে জনৈক মহিলা সালাতের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়েছিল। পথে তাকে এক ব্যক্তি স্বীয় কাপড় দিয়ে ঢেকে ফেলে এবং তার প্রয়োজন পূরণ করে। মহিলাটি চিৎকার করলে লোকটি চলে যায়। এই সময় মহিলাটির পাশ দিয়ে আরেক ব্যক্তি যাচ্ছিল। মহিলাটি বলতে লাগল এই পুরুষটাই তার সাথে এমন এমন করেছে। তখন একদল মুহাজির সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। মহিলাটি বলল, এই লোকটাই আমার সঙ্গে এমন এমন করেছে। তখন তারা এই লোকটিকে নিয়ে এলে মহিলাটি বলল, এ-ই সেই লোক। তখন তারা এই লোকটিকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। তিনি তাকে ’রজম’ এর নির্দেশ দিলেন। এই সময় যে লোকটি প্রকৃত পক্ষে উপগত হয়েছিল সেই লোকটি উঠে দাঁড়াল। বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আসলে আমি অপরাধী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাটিকে বললেন, যাও, আল্লাহ তোমাকে মাফ করে দিয়েছেন। ধৃত পুরুষটি সম্পর্কে ভাল মন্তব্য করলেন। আর প্রকৃত পক্ষে যে লোকটি উপগত হয়েছিল তাকে রজম-এর নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, সে এমন তওবা করেছে যে, সমগ্র মদীনাবাসী যদি তা করে তবে তাদের তওবাও কবুল হয়ে যাবে।
হাসান, তাকে রজম করা বাক্য ব্যাতীত। সঠিক বক্তব্য হল তাকে রজম করা হয় নাই।(সুনানে তিরমিযি-১৪৬০,
মিশকাত ৩৫৭২, সহীহাহ ৯০০, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৪৫৪ [আল মাদানী প্রকাশনী]
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
রাসূলুল্লাহ সা: সংবাদ শুনে প্রথমেই কোনো একটা হুকুম দিতে যাবেন, এমন মুহূর্তে একজন স্বীকার করে নিলো। রাবী বা উপস্থিত ব্যক্তি বুঝে নিয়েছিলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ রজমের হুকুম দিয়েছিলেন।অথচ বাস্তবে সেটা ছিল না। কেননা রজম বাস্তবায়নের কোনো দলীল প্রমাণ তখন ছিলনা। তাই এখানের বিবরণ হল, রাবীর ব্যক্তিগত বুঝ।যা তিনি বুঝেছেন, সেটাই বর্ণনা করেছেন।
في عون المعبود
( فلما أمر به ) : أي بإقامة الحد عليه . زاد في رواية الترمذي ليرجم ، ولا يخفى أنه بظاهره مشكل إذ لا يستقيم الأمر بالرجم من غير إقرار ولا بينة ، وقول المرأة لا يصلح بينة بل هي التي تستحق أن تحد حد القذف فلعل المراد فلما قارب أن يأمر به وذلك قاله الراوي نظرا إلى ظاهر الأمر حيث إنهم أحضروه في المحكم عند الإمام والإمام اشتغل بالتفتيش عن حاله والله تعالى أعلم .