ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাব
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَلَا
تَأْكُلُوا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ ۗ
وَإِنَّ الشَّيَاطِينَ لَيُوحُونَ إِلَىٰ أَوْلِيَائِهِمْ لِيُجَادِلُوكُمْ ۖ
وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ
যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় না, সেগুলো থেকে
ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গোনাহ। নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে প্রত্যাদেশ
করে-যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরেক
হয়ে যাবে। (সূরা আন'আম-১২১)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা বুঝা যায় যে,
সকল প্রকার অমুসলিমের জবাইকৃত প্রাণীই হারাম। চায় ইহুদী হোক
বা খৃষ্টান হোক।
https://www.ifatwa.info/880 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
শরীয়ত সম্মত জবাইয়ের পদ্ধতি হল, প্রতিটা প্রানী
জবাইয়ের পূর্বে আলাদা আলাদা ভাবে বিসমিল্লাহ বলা ওয়াজিব।
এ প্রসঙ্গে কুরআনের কারীমের ঘোষনা হলঃ
ولا
تأكلوا مما لم يذكر اسم اللّٰه عليه ،
তোমরা খেওনা (ঐ সব পশু)যাতে (জবাইকালে) আল্লাহর নাম নেয়া হয়
নাই। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, প্রত্যেক প্রানী জবাইকালে 'বিসমিল্লাহ 'এবং বিসমিল্লাহ
পড়ার সঙ্গে জবাই করা জরুরী। এরই ওপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম নিম্নোক্ত মাসাইল উদঘাটন
করেছেন, যা আমাদের আলোচিত মাসআলার সাথে সম্পৃক্ত। এই আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলা
বুঝে নিলে আমাদের মূল মাসআলা বুঝতে সুবিধা হবে।
যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছেঃ
وَأَمَّا
الَّذِي يَرْجِعُ إلَى مَحَلِّ الذَّكَاةِ: (فَمِنْهَا) تَعْيِينُ الْمَحَلِّ
بِالتَّسْمِيَةِ فِي الذَّكَاةِ الِاخْتِيَارِيَّةِ، وَعَلَى هَذَا يَخْرُجُ مَا
إذَا ذَبَحَ وَسَمَّى، ثُمَّ ذَبَحَ أُخْرَى يَظُنُّ أَنَّ التَّسْمِيَةَ
الْأُولَى تُجْزِئُ عَنْهُمَا لَمْ تُؤْكَلْ فَلَا بُدَّ أَنْ يُجَدِّدَ لِكُلِّ
ذَبِيحَةٍ تَسْمِيَةً عَلَى حِدَةٍ.
তরজমা-সুতরাং ওই শর্তাবলী যা জবাইর স্থলের সাথে সম্পৃক্ত, তার মধ্যে থেকে
একটি শর্ত হল, ইচ্ছাকৃতভাবে জবাইকালে বিসমিল্লাহর সঙ্গে সঙ্গে বিসমিল্লাহরর
স্থানটিও নির্দিষ্ট করে নেয়া। সুতরাং এই শর্তের কারণে নিম্নোক্ত পদ্ধতিটি বৈধতার সীমারেখা
থেকে বাদ পড়ে যাবে যে, এক ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলে একটি পশু জবাই করল, অতঃপর একটি পশু
এই ধারণায় (বিসমিল্লাহ না বলে) জবাই করে নিল যে, প্রথমটির বিসমিল্লাহ'ই দ্বিতীয়টির
জন্য যতেষ্ট, এই অবস্থাতে তার দ্বিতীয় পশুটি খাওয়া যাবে না। সুতরাং প্রত্যেক
প্রানী জবাইকালে পৃথক পৃথকভাবে নতুন 'বিসমিল্লাহ'পড়া জরুরী।-৫/২৮৬
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-
قُل
لَّا أَجِدُ فِي مَا أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَىٰ طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلَّا
أَن يَكُونَ مَيْتَةً أَوْ دَمًا مَّسْفُوحًا أَوْ لَحْمَ خِنزِيرٍ فَإِنَّهُ
رِجْسٌ أَوْ فِسْقًا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللَّهِ بِهِ ۚ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ
بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَإِنَّ رَبَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আপনি বলে দিনঃ যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি
কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত অথবা
প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস এটা অপবিত্র অথবা অবৈধ; যবেহ করা জন্তু
যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়। অতপর যে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে এমতাবস্থায়
যে অবাধ্যতা করে না এবং সীমালঙ্গন করে না, নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু। (সূরা আন'আম-১৪৫)
★
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই!
যেহুতু অমুসলিমদের জবাইকৃত পশুর গোশত খাওয়া জায়েজ নেই তাই
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি রাশিয়ায় গিয়ে অমুসলিমদের হোটেলে, বাসায় বা অফিসে তাদের
জবাইকৃত মুরগী বা গরুর গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এবং হালাল খাবার ও শাক সবজি
দিয়ে খাবার গ্রহণ করবেন। তবে যদি সেখানে কোনো মুসলিম হোটেল পান বা মুসলমান দ্বারা
জবাইকৃত মুরগী বা গরুর গোশত সংগ্রহ করতে পারেন তখন তা দ্বারাও খেতে পারেন।