بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
বিবাহ বহির্ভূত প্রেম পুরোপুরি নাজায়েজ ও হারাম।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ
করেনঃ
قُلْ
لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ
أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
মুমিনদেরকে বলুন,
তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের
যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ
তা অবহিত আছেন।
হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত,
فَالْعَيْنَانِ
زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ
زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا،
وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন,
চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের
জিনা হল, [গায়রে
মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল,
[গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক]
কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল,
[খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর
চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত
করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/3298/
দুনিয়ার আগুন শরীরের শুধু
বাহ্যিক অঙ্গ পোড়াতে পারে। পোড়াতে পারে না তা অভ্যন্তরীণ অঙ্গ। কিন্তু জাহান্নামের
আগুনের এমন পাওয়ার থাকবে যা জাহান্নামিদের শরীর পোড়ানোর পাশাপাশি তাদের হৃৎপিণ্ডও পুড়িয়ে
ছাই করে ফেলবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এটি আল্লাহর প্রজ্ব¡লিত অগ্নি, যা তাদের হৃদয়কে গ্রাস করে ফেলবে।’ (সূরা হুমাজা
: ৬-৭) দুনিয়ার আগুন লাল বর্ণের হয়ে থাকে। কিন্তু জাহান্নামের আগুন তীব্র উত্তপ্ত হওয়ার
দরুণ কালো বর্ণের হবে।
আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত।রাসূলুল্লাহ
সা: বলেন, ‘জাহান্নামের
আগুন এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। আবার এক হাজার বছর জ্বালানোর
পর তা সাদা বর্ণ হয়েছে। তারপর এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা কালো বর্ণ হয়েছে। এখন তা
গভীর অন্ধকার রাতের অন্ধকারের মতো কালো (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪৩২০)। ‘জাহান্নামিরা
যখন পিপাসায় ছটফট করবে তখন তাদেরকে গলিত পুঁজ পান করানো হবে,
যা সে এক এক ঢোক করে গিলবে’ (সূরা ইবরাহিম
: ১৬-১৭)।
রাসূলুল্লাহ সা: বলেন,
‘পুঁজ যখন তার মুখের নিকটে
নিয়ে আসা হবে, সে
তা অপছন্দ করবে। তারপর যখন আরো নিকটে নিয়ে আসা হবে, তখন তার মুখমণ্ডল পুড়ে যাবে এবং মাথার চামড়া গলে পড়ে যাবে।
তারপর সে যখন তা পান করবে তখন তার নাড়িভুঁড়ি গলে ছিন্নভিন্ন হয়ে মলদার দিয়ে বের হয়ে
যাবে।’ (জামে তিরমিজি :২৫৮৩)
ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত,
একদিন রাসূলুল্লাহ সা: এ আয়াত তিলাওয়াত
করলেন, অর্থাৎ
‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং পূর্ণ মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ তারপর প্রিয় নবী
সা: ইরশাদ করলেন, ‘যদি জাক্কুম গাছের একটা ফোঁটা এই দুনিয়ায় পড়ে তাহলে দুনিয়াবাসীর জীবনোপকরণ বিনষ্ট
হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় ওইসব লোকের কেমন দুর্দশা হবে এটা যাদের খাদ্য হবে?’
(জামে তিরমিজি : ২৫৮৫)
রাসূল সা: জাহান্নামের সবচেয়ে
সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘জাহান্নামিদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শাস্তি ওই ব্যক্তির হবে,
যাকে ফিতাসহ এক জোড়া জুতা পরিয়ে দেয়া হবে।
এতে তার মগজ এমনভাবে টগবগ করবে গরম পানির পাত্র যেমন টগবগ করে। সে ধারণা করবে তার থেকে
কঠিন আজাব আর কেউই ভোগ করছে না। অথচ সে হবে সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি। (সহিহ
মুসলিম : ৩৬৪)
প্রিয় পাঠক! জাহান্নামের সবচেয়ে
সহজ শাস্তির যদি হয় এমন পাওয়ার তাহলে কঠিন শাস্তির পাওয়ার কেমন হবে?
তা আমাদের ভাবতে হবে। প্রতিদিন কত গুনাহ
আমরা করে যাচ্ছি অহরহ। কখনো কি ভেবে দেখেছি, এর শাস্তি যদি আমাকে দেয়া হয় তাহলে কিভাবে সহ্য করব?
অথচ জাহান্নামে যাওয়ার জন্য একটি কবিরা
গুনাহ-ই যথেষ্ট। মহান আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের মাফ না করেন,
তাহলে আমাদের কী উপায় হবে?
আল্লাহ তায়ালা আমাদের জাহান্নামের ভয়াবহ
শাস্তি থেকে হিফাজত করুন।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নল্লিখিত ছুরতে
বিবাহ বহির্ভূত প্রেম ভালোবাসায় লিপ্ত হওয়া মারাত্নক গুনাহের কাজ এব্যাপারে কোন সন্দেহ
নেই। কিন্তু নিজের বৈবাহিক অবস্থা গোপন করা বা একাধিক মানুষের সাথে প্রেমে লিপ্ত হওয়া
আরো অধিক গুনাহের কাজ। সর্বপরি এমতাব্স্তায় তওবা ছাড়া ইন্তেকাল করলে অপেক্ষা করছে ভয়াবহ
শাস্তি। পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে খালেছ অন্তরে
তওবা করতে হবে। তওবা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত
জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/54144/?show=54144#q54144