আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
প্রিয় মুফতি সাহেব,

একটু ধর্য্য সহকারে কথা গুলো শুনবেন। আমি জেনারেল শিক্ষিত। আমার বর্তমান বয়স ২৫ বছর। আমি অবিবাহিত। মানুশিক অশান্তি/অস্থিরতা /শয়তানের ওয়াসওয়াসা যে কি কষ্টের সেটা যে ভুগে সে বুঝতে পারে। ২০১৮/২০১৯ সালে (তখনো আমি ইসলামিক বুঝ ঠিক মত পাই নি) আমার মনের মধ্যে বারবার দুনিয়া ভিত্তিক বাজে চিন্তা আসতো। যেমন, রাস্তায় গেলে ডাকতে ধরবে, পরীক্ষার হলে কাউকে না দেখালে আমাকে মারবে, আমি ভালো কোথাও চান্স পেলে (সরকারি মেডিকেল কলেজে) কিছু মানুষ আমার সাথে শত্রুতা করবে, অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারী মারবে ইত্যাদি। অর্থাৎ সব ধরনের খারাপ চিন্তা। যার ফলে আমি একটা বছর ভালো করে পড়তে পারিনি। মানুষিক যন্ত্রনায় আমার জীবন দুর্বিসহ হয়ে গিয়েছিলো। আর হয়তো তারকারণেই আমি কোথাও চান্স পাই নি। ২০২০ সাল থেকে মুটামুটি ইসলামের বুঝ আসে। বর্তমানে দুনিয়া ভিত্তিক খারাপ চিন্তা না আসলেও শরীয়হ ভিত্তিক বাজে চিন্তা আসে। যেমন ধরুন : তালাক, ঈমান হারা ইত্যাদি। এখন মূল প্রশ্নে আসি

১) আমার মনে বারবার এমন বিষয় আসে যে, আমি কি এমন কথা বললাম কিনা যে বিয়ের পরে আমার স্ত্রী তালাক হয়ে যেতে পারে। এখন আমি কি করবো?

২) বালেগ হবার পর থেকে তালাক রিলেটেড কোনো কথা বলেছি কিনা আমি শিউর জানি না বিশেষ করে তালাকের মাসালা জানার পরে। আর এটা অনুসন্ধান করে দেখাও সম্ভব না। এমতা অবস্থাই আমার বিয়ে করতে কোন সমস্যা আছে কিনা?

৩) মানুষিক প্রশান্তি লাভের উপায় কি?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
আপনাকে এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবেন।
বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন। 
,
প্রশ্নে উল্লেখিত দুশ্চিন্তা মাথায় আসতেই দিবেননা। যেখানে গেলে বা যেসব কাজ করলে এহেন দুশ্চিন্তা আসবে,সেসব জায়গা/কাজ পরিহার করতে হবে।

এহেন দুশ্চিন্তার মাথায় আসলেই 
لا حول ولا قوة الا بالله العلي العظيم 
أعوذ بالله من الشيطان الرجيم 
বেশি পাঠ করবেন।

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার বিবাহ করতে সমস্যা নেই।

(০৩)
ইহ-পরকালীন সকল বিষয়ে ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার হুকুম প্রদান করা হয়েছে। 

সুতরাং আপনি ধৈর্য ধারন করবেন,ও ফরজ নামাজের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল নামাজ পড়বেন।

মহান আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اسْتَعِينُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ، 
‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে থাকেন’ (বাক্বারাহ ২/১৫৩)। 

অনুরূপ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ)-কে আদেশ করেন, ‘জেনে রেখো অবশ্যই সাহায্য ধৈর্যের সাথে রয়েছে’।

ইসতিক্বামাত তথা দ্বীনের উপর অটল থাকার ব্যাপারে ধৈর্য বিশেষ গুরুত্ব রাখে। ছাহাবায়ে কেরাম যে ঈমান ও আমলের ক্ষেত্রে দ্বীনের উপর অটল থাকতে সক্ষম হয়েছিলেন, তার বড় কারণ ছিল ধৈর্য।

মহান আল্লাহ বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اصْبِرُوْا وَصَابِرُوْا وَرَابِطُوْا وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ، 

‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ধৈর্যধারণ কর। পরস্পরে দৃঢ় থাক এবং সদা প্রস্ত্তত থাক। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (আলে ইমরান ৩/২০০)।

বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করবেন। 
বেশি বেশি যিকির করবেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ تَطۡمَئِنُّ قُلُوۡبُہُمۡ بِذِکۡرِ اللّٰہِ ؕ اَلَا بِذِکۡرِ اللّٰہِ تَطۡمَئِنُّ الۡقُلُوۡبُ ﴿ؕ۲۸﴾ 

যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের মন প্রশান্ত হয়; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকিরেই মন প্রশান্ত হয়।
(সুরা রা'দ ২৮)

তবে যিকির করার সময় কিছু নিয়ম মেইনটেইন করতে হবে।

যিকিরের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কয়েকটি শর্ত পূরণ করা অত্যাবশ্যক। যথা : ১. লোক দেখানোর উদ্দেশ্য থেকে মুক্ত হওয়া।

 ২. কোনো ব্যক্তির নামাযে বা অন্য কোনো ইবাদতে বিঘ্ন না ঘটানো। 

৩. কোনো ব্যক্তির বিশ্রামে সমস্যা না হওয়া।

 ৪. আওয়াজ স্বাভাবিক হওয়া, চিৎকার করে বা অতিরিক্ত উঁচু আওয়াজে না হওয়া।

৫. সাধারণভাবে এবং সহীহ-শুদ্ধ করে যিকির করা। 
,
শায়েখ মাশায়েখ গন বলেছেনঃ
প্রথমে উযূ করে নিতে হবে। তারপর অতি উত্তম পোশাক পরিধান করে, শরীরে সুগন্ধি মেখে, দুই জানু হয়ে নামাযের সুরতে কিবলামুখী হয়ে বসতে হবে। 

 এখন দুই চোখ বন্ধ করে যিকিরের নিয়্যাত করে ক্বলবের দিকে মনোযোগের সাথে ধ্যান করতে হবে। 

হালকা আলো বা অন্ধকারে যিকির করা ভাল। তাতে মন (mind) ও একাগ্রতা (concentration) ভালভাবে চলে আসে। যথাসম্ভব কোলাহলমুক্ত নিরিবিলি পরিবেশ যিকিরের জন্য উত্তম।
,
যিকির করার সময় অমনোযোগী হওয়া যাবে না। অন্তরে খেয়াল করতে হবে যে, আমি আল্লাহ তায়ালাকে দেখতে পাচ্ছি। যদি এ খেয়াল না আসে তাহলে অন্তত মনে করতে হবে, আল্লাহ তায়ালা আমাকে দেখছেন। তিনি আমার যিকির শুনছেন।

হক্কানি শায়েখদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। অসৎ সঙ্গ নয় বরং সৎ সঙ্গ লাভের চেষ্টা করবেন। 

দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...