ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাব
https://ifatwa.info/26170/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে
যে,
গোসলের ফরয ।
(১) মুখ ধৌত করা।
(২) নাক ধৌত করা।
(৩) সমস্ত শরীর একবার ধৌত করা।
গোসলের ফরয সাধারনত
এ তিনটিই। কেননা সমস্ত শরীরের মধ্যে পরবর্তী সবগুলাই ঢুকে গেছে। কিন্ত বিশেষ গুরুত্বের
ধরুণ কোনো কোনো কিতাবে পৃথক পৃথক করে গননা করা হয়।
(৪) খতনাবিহীন ব্যক্তির পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া যদি খুলতে
কষ্ট হয়, তবে তার ভেতরাংশ ধৌত
করা।
(৫) নাভি ধৌত করা।
(৬) শরীরের এরূপ ছিদ্রে পানি পৌঁছানো, যা বুঁজে যায়নি।
(৭) পুরুষের চুলের বেণীর ভেতরে পানি পৌঁছানো, এতে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছা বা না পৌঁছার কোন শর্ত নেই। তবে মহিলার
চুলের গোড়ায় যদি পানি পৌঁছে, তাহলে মহিলার চুলের বেণীর ভেতরে পানি পৌঁছানো ফরয নয়।
(৮) দাড়ির ভেতরস্থ চামড়া ধৌত করা।
(৯) গোঁফের ভেতরস্থ চামড়া ধৌত করা।
(১০) ভ্রুর ভেতরস্থ চামড়া ধৌত করা।
(১১) যোনি মুখবরনের বহিরাংশ ধৌত করা।
https://ifatwa.info/3604/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
★যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়ঃ
★এক. জাগ্রত বা ঘুমন্ত অবস্থায় উত্তেজনার সঙ্গে বীর্যপাত হওয়া।
ঘুমন্ত অবস্থায় উত্তেজনা অনুভব না হলেও গোসল ফরজ। কেননা ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে
মানুষ অনেক সময় টের পায় না। তাই কোনো ব্যক্তি ঘুম থেকে ওঠার পর যদি তার কাপড়ে নাপাকির
চিহ্ন দেখে, তাহলে তার স্বপ্নদোষ
বা বীর্যপাতের কথা স্মরণ থাকুক বা না থাকুক, সর্বাবস্থায় গোসল ফরজ হবে। (হেদায়া ১/৪৫, আন নুতাফ ফিল ফাতাওয়া পৃ. ২৯)
عن
علي رضي الله عنه قال : كنت رجلا مذاء فقال لي رسول صلي الله عليه وسلم الله إذا
رأيت المذي فاغسل ذكرك وتوضأ وضوءك للصلاة و إذا فضخت الماء فاغتسل .رواه النسائي
بسند صحيح (193)
যার সারমর্ম হলো যখন
পানি উত্তেজনার সাথে (টপকিয়ে) পড়বে তখন গোসল ফরজ হবে।
★দুই. স্ত্রী সহবাস করা। সহবাসের ক্ষেত্রে স্ত্রীর যৌনাঙ্গে পুরুষাঙ্গের
সর্বনিম্ন সুপারি পরিমাণ অংশ প্রবেশ করালেই উভয়ের ওপর গোসল ফরজ হয়ে যাবে, চাই বীর্যপাত হোক বা না হোক। (বুখারি, হা. ২৯১, মুসলিম, হা. ৩৪৩)
হাদীস শরীফে এসেছে
عن
أبي هريرة رضي الله عنه عن النبي صلي الله عليه وسلم قال : إذا جلس بين شعبها
الأربع وأجهد نفسه فقد وجب الغسل أنزل أو لم ينزل. رواه أحمد بسند صحيح
(8557)
রাসুল সাঃ বলেছেন
যে যখন পুরুষ মহিলার চারযানুর মাঝে বসে সহবাসের
চেষ্টা করবে,তখনই গোসল ফরজ হয়ে
যাবে, বির্যপাত হোক বা না
হোক।
★তিন. নারীদের হায়েয (ঋতুস্রাব) এবং নেফাস (সন্তান প্রসবোত্তর
স্রাব) বন্ধ হওয়ার পরও গোসল ফরজ। (রদ্দুল মুহতার ১/১৬৫)
★ফরজ গোসলের নিয়ম:
১. গোসলের জন্য মনে
মনে নিয়্যাত করতে হবে।
২. প্রথমে দুই হাত
কব্জি পর্যন্ত ৩ বার ধুতে হবে।
৩. এরপর ডানহাতে পানি
নিয়ে বাম হাত দিয়ে লজ্জাস্থান এবং তার আশপাশ ভালো করে ধুতে হবে। শরীরের অন্য কোন জায়গায়
বীর্য বা নাপাকি লেগে থাকলে সেটাও ধুতে হবে।
৪. এবার বাম হাতকে
ভালো করে ধুইয়ে ফেলতে হবে।
৫. এবার ওজুর নিয়মের
মত করে ওজু করতে হবে।
৬. ওজু শেষে মাথায়
তিনবার পানি ঢালতে হবে।
৭. এবার সমস্ত শরীর
ধোয়ার জন্য প্রথমে ৩ বার ডানে তারপরে ৩ বার বামে পানি ঢেলে ভালোভাবে ধুতে হবে, যেন শরীরের কোন অংশই বা কোন লোমও শুকনো না থাকে। নাভি, বগল ও অন্যান্য কুঁচকানো জায়গায় পানি দিয়ে ধুতে হবে।
৮. সবার শেষে একটু
অন্য জায়গায় সরে গিয়ে দুই পা ৩ বার ভালোভাবে ধুতে হবে।
মনে রাখতে হবে:
১. পুরুষের দাড়ি ও
মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে।
২. এই নিয়মে গোসলের
পর নতুন করে আর ওজুর দরকার নাই, যদি ওজু না ভাঙ্গে।
★
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী বোন!
আপনার যদি প্রবল
ধারণা এমন হয় যে, কানের ছিদ্রে আলাদা ভাবে পানি না পৌছালেও সেখানে সাধারণত পানি
পৌছে যায় তাহলে আপনার ফরজ গোসল হয়ে গিয়েছে এবং আপনার আদায়কৃত নামাজগুলোও সহীহ হয়েছে।
আর যদি আপনার
প্রবল ধারণা এমন হয় যে, কানের ছিদ্রে আলাদা ভাবে পানি না পৌছালে সেখানে সাধারণত
পানি পৌছে যায় না তাহলে আপনার ফরজ গোসল হয়নি এবং আপনার আদায়কৃত নামাজগুলোও সহীহ
হয়নি। সুতরাং এখন ঐ কানের ছিদ্রে আলাদা ভাবে পানি পৌছিয়ে দিলেও যথেষ্ট হবে (তবে
সতর্কতা মূলক পুনরায় ফরজ গোসলও করে নিতে পারেন।)। অর্থাৎ ফরজ গোসল আদায় হয়ে যাবে।
অতঃপর ঐ নামাজগুলো কাযা করে নিবেন।