আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
227 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম

(প্রশ্নটা আগেও করেছিলাম কিন্তু প্রশ্নে হয়ত ঠিক ভাবে করতে পারিনি , তাই আবার উদাহরণ সহ দিলাম)

কিছু শয়তান মাঝে মাঝে প্রশ্ন করে যে - "মাদানি যুগে কিছু কিছু সামরিক অভিযান চালানো হয়েছিল যেগুলো কোন হত্যার বদলা বা অন্য কোন কারণে হয়নি এবং সেই সামরিক অভিযানে অনেক পশু হাকিয়ে আনা হয় এবং অনেককে আটক করে দাস বানানো হয়*** , এখানে বিনা কারণে সামরিক অভিযানে অনেক পশু হাকিয়ে আনা এবং ডাকাতির মধ্যে পার্থক্য কি ? "

***এখানে বদরের দিকে ইঙ্গিত করে নাই ,করেছে - সারিয়্যা গামার ,সারিয়্যা জামুম,সারিয়্যা কাতাবা ইবনে আমের ... এর দিকে

(আস্তাগফিরুল্লাহ)

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
সারিয়া বলা হয়,সেই সমস্ত যুদ্ধকে যেগুলোকে রাসূলুল্লাহ সাঃ নিজে যাননি।বরং বিভিন্ন সাহাবির নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।

সারিয়া কাতাবাহ ইবনে আমর ইবনে হাদীদ সহ অারো অন্যান্য সারিয়া-কে রাসূলুল্লাহ সাঃ ইসলাম প্রচার ও ইসলাম প্রচারে বাধা দিলে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠিয়েছিলেন।

যুদ্ধের রীতি হল,
যখন এক পক্ষ্য অন্য পক্ষ্যের উপর বিজয় লাভ করবে,তখন বিজিত দল, পরাজিত দলের সহায় সম্পত্তির মালিক হবে।

এ সমস্ত সারিয়া যেহেতু একটি যুদ্ধ ছিল,এবং এ সমস্ত সারিয়াতে আল্লাহর খাস রহমত ও বরকতে মুসলমানগণ বিজয় লাভ করেন, তাই এই সমস্ত যুদ্ধে পরাজিত দলের সহায় সম্পত্তি যুদ্ধের নীতি অনুসারে মুসলমানগণ মালিক হন।সে হিসেবে মুসলমানগণ ঐ সমস্ত পরাজিত কওমের পশুকে হাকিয়ে নিয়ে যান।

ঐ সমস্ত পরাজিত দলের লোকজনকে কেন বন্ধি করলেন বা দাস বানালেন?
এই প্রশ্নের জবাব হল,

যুদ্ধ বন্দী সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻓَﺈِﺫﺍ ﻟَﻘِﻴﺘُﻢُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻓَﻀَﺮْﺏَ ﺍﻟﺮِّﻗَﺎﺏِ ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺛْﺨَﻨﺘُﻤُﻮﻫُﻢْ ﻓَﺸُﺪُّﻭﺍ ﺍﻟْﻮَﺛَﺎﻕَ ﻓَﺈِﻣَّﺎ ﻣَﻨًّﺎ ﺑَﻌْﺪُ ﻭَﺇِﻣَّﺎ ﻓِﺪَﺍﺀ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻀَﻊَ ﺍﻟْﺤَﺮْﺏُ ﺃَﻭْﺯَﺍﺭَﻫَﺎ ﺫَﻟِﻚَ ﻭَﻟَﻮْ ﻳَﺸَﺎﺀ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﺎﻧﺘَﺼَﺮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻭَﻟَﻜِﻦ ﻟِّﻴَﺒْﻠُﻮَ ﺑَﻌْﻀَﻜُﻢ ﺑِﺒَﻌْﺾٍ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻗُﺘِﻠُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﻦ ﻳُﻀِﻞَّ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟَﻬُﻢْ
তরজমাঃ-অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দার মার, অবশেষে যখন তাদরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না।(সূরা-মুহাম্মদ,০৪)
 
অত্র আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফতী শফী রাহ যুদ্ধ বন্দী সম্পর্কে ইসলামের মানবাধিকারপূর্ণ যৌক্তিক ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেনঃ

★এখন প্রশ্ন থেকে যায় যে,ইসলাম মানবাধিকারের সর্ববৃহৎ ধারক-বাহক হয়ে দাসত্বের অনুমতি কিরূপে প্রদাণ করল?
★প্রকৃতপক্ষে ইসলামের বৈধকৃত দাসত্বকে জগতের অন্যান্য ধর্ম ও জাতির দাসত্বের অনুরূপ মনে করে নেয়ার কারণেই এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।অথচ ইসলাম দাসদেরকে যেসব অধিকার দান করেছে এবং সমাজে তাদেরকে যে মর্যাদা দান করেছে এরপর তারা কেবল নামেই দাস রয়ে গেছে।
নতুবা তারা প্রকৃতপক্ষে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেছে।বিষয়টির প্রকৃত স্বরূপ দৃষ্টির সামনে তুলে ধরলে দেখা যায় যে,অনেক অবস্থায় যুদ্ধবন্দীদের সাথে এর চাইতে উত্তম ব্যবহার অদ্য সম্ভবপর নয়।

পাশ্চাত্যের খ্যাতনামা প্রাচ্য শিক্ষাবিশারদ "মসিও গোস্তাও লিবান" তদীয় "আরবের তমদ্দুন "গ্রন্থে লিখেনঃ
..........বিগত ত্রিশ বছর সময়ের মধ্যে লিখিত আমেরিকার বই-পুস্তক পাঠে অভ্যস্ত কোন ইউরোপীয় ব্যক্তির সামনে যদি 'দাস' শব্দটি উচ্ছারণ করা হয় তবে তার মনসপটে এমন অসহায়  একদল মানুষের চিত্র ভেসে উঠে যাদেরকে শিকল দ্বারা আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখা হয়েছে,গলায় বেড়ি পরানো এবং বেত মেরে মেরে হাঁকানো হচ্ছে।
তাদের খোরাক প্রাণটা কোনরূপে দেহে আটকে রাখার জন্যও যথেষ্ট নয়।বসবাসের জন্য অন্ধকারময় কক্ষ ছাড়া তারা আর কিছুই পায় না।আমি এখানে কিছু বলতে চাই না যে,এই চিত্র কতটুকু সঠিক এবং ইংরেজরা বিগত বছরগুলোতে আমেরিকায় যা কিছু করেছে তা এই চিত্রের অনুরূপ কি না?
------কিন্তু এটা নিশ্চিত সত্য যে, মুসলমানদের কাছে দাসের যে চিত্র তা খৃষ্টানদের চিত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
(ফরীদ ওয়াজদী প্রণীত দায়েরাতুল মা-আরেফ থেকে উদ্ধৃত।৪/১৭৯)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (25 points)
jazalakahu khairan
আমি ইসলামের দাস প্রথা + যুদ্ধ বন্দির ব্যাপারে আগে থেকেই ক্লিয়ার আছি ।

আপনার এই একটা লাইন আমি চাচ্ছিলাম  ( "সারিয়া কাতাবাহ ইবনে আমর ইবনে হাদীদ সহ অারো অন্যান্য সারিয়া-কে রাসূলুল্লাহ সাঃ ইসলাম প্রচার ও ইসলাম প্রচারে বাধা দিলে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠিয়েছিলেন " )

আসলে সিরাত গ্রন্থে অন্যান্য সারিয়ার কারণ পেলেও এই সারিয়ার কারণ পাইনি তাই শয়তানটাকে উত্তরও দিতে পারছিলামনা ।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...