আসসালামু আলাইকুম ওলী উল্লাহ হুজুর,
১. আমি একজন ছেলে। বিয়ের আগে রিলেশনে থাকার সময় আমার মা একদিন আমাকে বলেছিল, "ওই মেয়ের সাথে রিলেশন বাদ দে"। আমার মা খুব জোড়াজুড়ি করছিল। তাই তাকে মিথ্যা কথা বলি। আমি বলি যে, "আজ থেকে আর রিলেশন করব না"। আমার মা যেন আমার কথা বিশ্বাস করে সেজন্য তাকে আরও বলি যে, "এখন কি কোরআন শরীফ নিয়ে আসবে নাকি?" (প্রশ্নটির দ্বারা বুঝিয়েছি যে, আমাকে কি কোরআন ছুঁয়ে বলতে হবে যে আমি ওর সাথে আর রিলেশন করব না? প্রশ্নটি করি যাতে করে আমার মা মনে করে যে আমি যেহেতু কোরআন শরীফের কথা বলছি সেহেতু সত্য বলছি। মানে তার বিশ্বাস অর্জনের জন্য বলি।)
=> অথবা বলেছি, "আমার কথা বিশ্বাস না হলে কোরআন শরীফ নিয়ে আসো" (যাতে আমার মা মনে করে যে, আমি সত্য বলছি)
আমি পরে গোপনে রিলেশনশীপে ছিলাম এবং বিয়ে করি ওকে।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় -
ক) আমার ওই ভুলের কারণে কি আমার ওয়াইফ মারা যাবে? আল্লাহ কি পরিক্ষা নিবেন আমাদের?
খ) আমাদের সম্পর্কে ক্ষতি হতে পারে ওই ভুলের কারণে?
গ) আমি যদি আমার মায়ের কাছে ক্ষমা নাও চাই তাহলে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো ক্ষতি করবেন আল্লাহ তায়ালা? বা আমার ওয়াইফ মারা যাবে?
ঘ) আমার যতোটা মনে পড়ে আমার মাকে কোরআন শরীফ আনতে বলার সময় আমার ভিতরে ভিতরে নিয়ত ছিল যে, কোরআন আনলে আমি ছুঁয়ে মিথ্যা বলব না। ক), খ), গ) তে বলা প্রশ্নগুলো অনুযায়ী কোনো সমস্যা হবে?
ঙ) আমাকে বা আমাদেরকে কোনো কাফফারা দিতে হবে?
চ) আমি যদি আমার মাকে বলি, "আমার সব দোষ মাফ করে দাও" তাহলে কি ওই ভুলটার জন্যও আলাদা করে ক্ষমা চাইতে হবে? সব দোষ বলতে আমি সারা জীবনের সব দোষ ক্ষমা চাওয়ার কথা বুঝিয়েছি (যদিও আমার মা কি বুঝবে জানি না)। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছি।
হুজুর আলাদা আলাদা করে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েন প্লিজ
২. হুজুর
https://ifatwa.info/81123/ লিংকের ৪ নং প্রশ্নটি দেখুন আরেকবার প্লিজ।
ক) গত বৃহস্পতিবার মনে হয় লোকটা (ভিক্ষুক) আসছিল মার্কেটে। সব দোকান থেকে ২, ১ টাকা করে নেওয়ার জন্য। আমি তখন আমার দোকান খোলা রেখে পাশের দোকানের সামনে ছিলাম। লোকটা মনে হয় আমার দোকানে আসছিল তবে আমাকে না পেয়ে চলে গেছে। আমি পাশের দোকানে ছিলাম আর লোকটাও পাশের দোকানে গেছে টাকা নিতে। লোকটা আমার সামনে ছিল। আমার কাছে টাকা চায় নি। আমিও টাকা দেই নি। আমার মনে হচ্ছিল যে, লোকটাকে টাকা না দিলে আল্লাহ আমার ব্যবসা নষ্ট করে দিবেন কি? ভয় হচ্ছিল এসব ভেবে। পরে মনে করলাম বা মনে হলো যে, আমি তো আর আমার দোকানে নেই। তাছাড়া লোকটাতো আমার থেকে টাকা চায় নি। এসব ভেবে তাকে আর টাকা দেই নি।
আল্লাহ কি আমার ব্যবসা নষ্ট করে দিবেন?
খ) ক নং প্রশ্নে বলেছি বৃহস্পতিবারের কথা। আমার ঠিক মনে নেই। শুক্রবার যদি ঘটনাটি ঘটে থাকে তাহলে কি আল্লাহ পাক আমার ব্যবসা নষ্ট করে দিবেন?
গ) আজ রবিবার লোকটা আসছিল। আমি তাকে ২ টাকা দিয়ে বলেছি যে আর তাকে টাকা দিব না। আমি আজকের ১ টাকা আর গতদিনের (ক নং প্রশ্ন বলেছি) ১ টাকা হিসেবে নিয়ত করে ২ টাকা দিয়েছি যাতে করে আল্লাহ পাক আমার ব্যবসায় কোনো ক্ষতি না দেন। আপনি কি বলবেন?
হুজুর আলাদা আলাদা করে সব প্রশ্নর উত্তর দিয়েন প্লিজ
৩) হুজুর
https://ifatwa.info/81123/ লিংকের ১৩ নং আমি আমার স্ত্রীকে দোয়া করতে বলেছিলাম। সে যদি দোয়া করে থাকে এবং আমি যদি তাকে এবং আমার বোনকে ব্রেসলেট না বানিয়ে দেই তাহলে কি ব্যবসা হারাম হবে বা ব্যবসা নষ্ট হবে?
৪) হুজুর
https://ifatwa.info/81123/ লিংকের ৫ নং প্রশ্নে আমি যদি ওয়াদা করে থাকি বা যদি বলে থাকি যে, "আল্লাহ তোমার সন্তুষ্টির জন্য এখানে দোকান চালাব সামনের ইদ পর্যন্ত"। তারপরেও নতুন দোকান নেওয়ার চেষ্টা করেছি এটা বাদ দিয়ে। তবে পাই নি।
ক) ওভাবে ওয়াদা করার পরেও যদি দোকান না করি এখানে। তাহলে কি ব্যবসা হারাম বা নষ্ট হবে?
খ) ওয়াদা করার পরেও দোকান বাদ দিয়ে নতুন দোকান নেবার চেষ্টা করেছি সেহেতু ব্যবসা হারাম বা নষ্ট করে দিতে পারেন আল্লাহ তায়া'লা?
গ) আসলে আমি একজন ওয়াসওয়াসার রোগী। সব বিষয়েই ওয়াসওয়াসা আসে। মানে যে বিষয়টা বেশি করে চাই সেটাতেই ওয়াসওয়াসা আসে। মনে হয় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় বা হচ্ছে বা হবে। মানে যেটা পেতে চাই বা পেলেও ধরে রাখতে চাই সেটাই না পাবার বা হারাবার ব্যাপারে ওয়াসওয়াসা আসে।
ঘ) আমার মনে হয় আমি ওয়াদা করি নি। তারপরেও মনে হচ্ছে যদি ওয়াদা করে থাকি তাহলে দোকান নষ্ট হবে না তো? ব্যবসা হারাম হবে না তো?
ঙ) মানুষ দোকান করে আবার নামাজও পড়ে না। আমার মনে হয়, আমি নামাজ পড়লাম না। মানে নামাজের থেকে দোকানকে বেশি গুরুত্ব দিলাম। এজন্য আল্লাহ হয়ত আমার ব্যবসা নষ্ট করে দিবেন। এই টাইপের বিষয়গুলো নিয়ে সমস্যায় আছি। বা কথার কথা যদি এখানেই সামনের ইদ পর্যন্ত দোকান চালানোর জন্য ওয়াদা করে থাকি এবং তারপরেও নতুন দোকান নেওয়ার চেষ্টা করছি। এজন্য কি আল্লাহ ব্যবসা নষ্ট করে দিবেন বা ইনকাম হারাম হবে? যদি ওয়াদা করে থাকি তারপরেও দোকান চেঞ্জ করি তাহলে তো দোকানকে বেশি গুরুত্ব দিলাম সেজন্য কি ব্যবসা নষ্ট করে দিবেন আল্লাহ পাক? বা ইনকাম হারাম হবে? এখন নতুন দোকান খুঁজি মাঝে মাঝে। ওয়াদা করার পরেও নতুন দোকান খুঁজলে আল্লাহ কি ব্যবসা ব্যবসা নষ্ট করে দিবেন বা ইনকাম হারাম হবে?
চ) ওয়াদা করার পরেও কাফফারা না দিলে ব্যবসা নষ্ট হয়ে যাবে বা ইনকাম হারাম হবে?
হুজুর দয়া করে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েন প্লিজ
৫)
ক) আমি ওয়াদা করেছিলাম আল্লাহর কসম করে যে, আমি আমার স্যারের বাসায় মিষ্টি নিয়ে যাব রেজাল্টের পর। রেজাল্ট পার হয়েছে ৫ বছর আগে। এখন যদি কাফফারা না দেই তাহলে কি আমি জীবনে হালাল চাকরি পাব? বা চাকরি পেলেও ইনকাম হালাল হবে?
খ) চাকরি হারানোর কোনো ঝুঁকি থাকবে? সব আল্লাহর হাতে আমি এই বিশ্বাস করি৷ মানে আল্লাহ কি চাকরিচ্যুত করে দিবেন আমাকে?
গ) অনেকগুলো কাফফারা বাকি থাকে সবগুলোর আলাদা করে কাফফারা আদায় করতে হবে নাকি একটি আদায় করলেই হবে?
ঘ) কোনো বিষয়ে মানত বা কসম করে তা আদায় না করলে বা কাফফারা না দিলে সেই জিনিসটি হারানোর আশংকা থাক?
৬)
আমি বিয়ের আগে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলাম যে, "আল্লাহ আমাদেরকে এক করে দাও (বিয়ের জন্য দোয়া)। মানত করি নি। তবে তখন মনে করেছিলাম এবং বলেছিলাম যে, "আল্লাহ আমরা এক হলে ইবাদত ভালো হবে, জেনা করার পথ বন্ধ হবে"। তবে আমার জানা মতে আমি মানত করে দোয়া করি নি যে, "আল্লাহ আমাদেরকে এক করে দাও তাহলে ইবাদত ভালো করে করব বা জেনা করব না"।
আমি ভেবেছি যে, "নামাজ ভালো হবে এবং জেনা হবে না"। তাই আল্লাহর সাহায্য চেয়ে দোয়া করেছি। এবং আল্লাহ তায়া'লা অসাধ্যকে সাধন করে অনেক সমস্যার মাঝেও আমাদেরকে এক করে দিয়েছেন। যেখানে আমাদের এক হওয়ার পথই ছিল না বলা চলে।
এখন আমি যদি মোবাইলে জেনা করি এবং নামাজে গাফিলতি করি বা না পড়ি তাহলে কি আমার স্ত্রী মারা যাবে বা আমাদের কোনো সমস্যা হবে? অবশ্যই সব আল্লাহ পাকের ইচ্ছাই হয়। আমাদেরকে উনি কি সমস্যা দেবেন?