ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
শরীয়তের বিধান মতে সূদ দেওয়া,গ্রহন করা,তাতে সহযোগিতা করা সবই হারাম।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨]
হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮]
হাদিস শরিফে এসেছে-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.
আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)
দেশের বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামদের তাহকীক মতে বাংলাদেশে কোন ব্যাংকই সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামীক রুলস মেনে ব্যাংকিং করছে না।
তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে টাকা না রাখাই ভাল। কিন্তু প্রয়োজন হওয়ার কারণে কারেন্ট একাউন্ট খোলা জায়েজ। ডিপোজিট এ জাতীয় দীর্ঘমেয়াদী কোন একাউন্ট খোলা জায়েজ হবে না।
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
তবে যেহেতু বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকগুলো ছাড়া বাকি ব্যাংকগুলো আমভাবে সুদী কারবার করে থাকে। শরয়ী বিধানের কোন তোয়াক্কাই করে না। সেই হিসেবে ইসলামী ব্যাংকগুলো শরয়ী বিধান পালনের কিছুটা হলেও চেষ্টা করে থাকে। যদিও পূর্ণাঙ্গ শরয়ী রুলস তারাও অনুসরণ করে না বলেই আমরা জানি। কিন্তুর মন্দের ভাল অবশ্যই। তাই অন্য ব্যাংকে একাউন্ট খোলার তুলনায় ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা নিরাপদ বলেই মনে হয়। বাকি আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন।
আর যদি কারেন্ট একাউন্ট খোলা সম্ভব না হয়, তাহলে বাধ্য হলে ডিপোজিট ও দীর্ঘমেয়াদী একাউন্টও জায়েজ আছে। তবে ডিভিডেন্টটি সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবে।
فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ [٢:١٧٣
অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। (সূরা বাকারা-১৭৩)
আরো বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/4260/
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১-২: যেহেতু দেশের কোনো ব্যাংকই সঠিক ভাবে ইসলামী রুলস মেনে কাজ করছেনা,তাই টাকা রেখে লভ্যাংশ গ্রহন করা যাবেনা।
ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রেও সতর্কতামূলক লভ্যাংশ ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে। সুতরাং এই মাসে পাওয়া ফিক্সড এমাউন্টের টাকা সুদের অন্তর্ভুক্ত ধরা হবে। রুলস গুলো জানতে উপরোক্ত লিংক ভিজিট করুন।
৩. ব্যাংক একাউন্ট প্রতি বছরে একাউন্ট মেইন্টেনেন্স বাবদ নির্দিষ্ট পরিমান যে চার্জ নেয় এবং কার্ডের জন্য যে চার্জ নেয়, এটি আপনার উপর আবশ্যকীয় একটি চার্জ। যাহা আপনাকে দিতেই হবে। সুতরাং এটি আপনার খরচের খাত, আপনার জন্য যেহেতু এই সূদের টাকা নিজের কোনো খরচের খাতেই ব্যবহার করা জায়েজ নেই, তাই এই খাতেও ব্যবহার করা জায়েজ নেই।
অতএব প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাংক এর একাউন্ট বা কার্ড মেইন্টেনেন্স ফি হিসেবে সূদের টাকা দেওয়া জায়েজ হবেনা। সূদের টাকা পুরাটাই উত্তোলন করে তাহা গরিব মিসকিনকে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিতে হবে।
আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/24953/