আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in সালাত(Prayer) by (23 points)
edited by
নামাযের মধ্যে বায়ু নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে -

সে যেন শব্দ শুনা কিংবা গন্ধ পাওয়া ছাড়া নামায না ছাড়ে। (সহিহ বুখারী ১৩৭ সহিহ মুসলিম ৩৬১)

আমার প্রশ্ন হচ্ছে,
১. একাকী বাসায় নামায পড়ার ক্ষেত্রেও এই হাদিস প্রযোজ্য হবে কী না..

২. এমন কিছু হওয়ার পর চলমান নামায না ছেড়ে সম্পন্ন করা হলো; তারপর আবার যদি অন্য নামায (সুন্নাত/নফল) পড়তে হয় সেক্ষেত্রে কী পুনরায় ওযু করতে হবে?

পূর্বের প্রশ্নের সাথে আর দুটি প্রশ্নের উত্তর পেলে খুবই উপকৃত হব জনাব। ওয়াসওয়াসজনিত প্রশ্ন করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবুও করছি, কেননা আমার পরীক্ষা চলে। এমতাবস্থায় কোর্সটা করতে পারছি না।

* ফরয গোসলের পূর্বে বালতিতে নাপাক কাপড় ধুয়েছি। ধোয়ার পর বালতির ভেতরের ওই নাপাক পানির সামান্য অংশ আমার শরীরে লেগেছিলো। ওটুকু আর আলাদাভাবে ধুতে মনে ছিলো না। গোসলের সময় মগে করে পানি ঢেলেছি শরীরে। এখন আমার মনে হচ্ছে, শরীর থেকে পানির ছিটা বালতির মধ্যেও পড়েছে হয়তো। আর শরীরে তো ওই অল্প পরিমাণ নাপাক পানি লেগে ছিলো।

৩. তাহলে কী বালতির পানি অপবিত্র হয়ে গেছে? ফরয গোসল আদায় হয় নি?

৪. আমি গামছা (পাক) পরিহিত অবস্থায় ছিলাম। শরীরে পানি ঢালার পর ওই পানি তো গামছাতেও লেগেছে। এক্ষেত্রে গামছাও কী অপবিত্র হয়ে গেছে?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by


              বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 

জবাব,

নামাজের মাঝে বায়ু বের হলে সাথে সাথে অযু করে এসে বাকি নামাজ শেষ করতে হবে। 

 এ সম্পর্কে জানুনঃ 

https://ifatwa.info/9888/

ওয়াক্ত চলে গেলে পূর্ণ নামাজের কাজা আদায় করতে হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেহেতু নিশ্চিত যে আপনার বায়ু বের হয়েছে,এটি সন্দেহের ভিত্তিতে বলেননি।

তাই কোনো শব্দ বা গন্ধ পাওয়ার প্রয়োজন নেই,আপনার অযু ভেঙ্গে গিয়েছে।       

অযু ছাড়া এহেন পরিস্থিতিতেও নামাজ পড়ার কোনো সুযোগ নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح 

 ‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম,আবু দাউদ ১৭৬।

এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হল- অযু ভাঙ্গার ব্যাপারে পরিপূর্ণ নিশ্চিত হওয়া ছাড়া আপনি এটাই মনে করবেন যে, আপনার অযু ভাঙ্গে নি। যেহেতু  অযু ভাঙ্গে নি সুতরাং ওই নামায আবার পড়তে হবে না। আর যদি আপনি পরিপূর্ণ নিশ্চিত হন যে, আপনার অযু ভেঙ্গে গিয়েছিল তাহলে যে নামায আপনি অযু ছাড়া পড়েছেন তা পুনরায় পড়ে নিতে হবে।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেহেতু নিশ্চিত যে আপনার বায়ু বের হয়েছে,এটি সন্দেহের ভিত্তিতে বলেননি।

তাই কোনো শব্দ বা গন্ধ পাওয়ার প্রয়োজন নেই,আপনার অযু ভেঙ্গে গিয়েছে।       

★★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 

আপনি যদি মা'যুর হোন, তাহলে বিধান ভিন্ন।

সেই ছুরতে এক অযু দিয়ে ঐ ওয়াক্তে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন,বায়ু জনিত উক্ত সমস্যার কারনে তখন কোনো সমস্যা হবেনা। 

কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

কোনো ব্যাক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়,বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়,তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।   

সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা তথা বায়ুজনিত সমস্যা  বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট ছুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 

আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন

(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)

পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন 

আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়,তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

  বিস্তারিত জানুনঃ  

https://ifatwa.info/3954/

মা'যুরের বিধান ইস্তেহাজা ওয়ালা মহিলার ন্যায়। 

আবু দাউদ শরীফের ১৮০ নং হাদীসে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَخْلَدٍ الطَّالْقَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ مَغْرَاءَ - حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، أَخْبَرَنَا أَصْحَابٌ، لَنَا عَنْ عُرْوَةَ الْمُزَنِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، بِهَذَا الْحَدِيثِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ لِرَجُلٍ احْكِ عَنِّي أَنَّ هَذَيْنِ - يَعْنِي حَدِيثَ الأَعْمَشِ هَذَا عَنْ حَبِيبٍ وَحَدِيثَهُ بِهَذَا الإِسْنَادِ فِي الْمُسْتَحَاضَةِ أَنَّهَا تَتَوَضَّأُ لِكُلِّ صَلَاةٍ 

উরওয়াহ আল-মুযানী ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, ইয়াহ্ইয়াহ্ ইবনু সাঈদ আল-কাত্তান এক ব্যক্তিকে এ মর্মে আদেশ দেন, আমার সূত্রে ঐ হাদীস দু’টি বর্ণনা কর। অর্থাৎ আ‘মাশের হাদীস এবং একই সানাদে ইস্তিহাযা রোগিনী’’ সম্পর্কে বর্ণিত তার ঐ হাদীস যাতে রয়েছে, ‘ইস্তিহাযা রোগিনী প্রত্যেক সলাতের জন্যই অযু করবে।’ 

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/12398/

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই / বোন!

১-২.  প্রশ্নে উল্লখিত হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য বায়ু নির্গত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া। সুতরাং যখন আপনি নিশ্চিত হবেন যে আপনার বায়ু নির্গত হয়েছে তাত্ক্ষণিকভাবে আপনার অজু ভেঙে যাবে। শব্দ হোক বা না হোক। গন্ধ ছড়িয়ে যাক বা না যাক। বাসায় পড়েন বা মসজিদে। সর্বাবস্থায় একই হুকুম। 

৩. যেহেতু আপনি গোসলের সময় উক্ত নাপাকির স্থান ধৌত করেছেন বিধায় আপনার শরীর পবিত্র হয়েছে বলে আশা করা যায়। 

৪. গোসল শেষে তিন বার গামছা ধৌত করে নিলে নাপাকির ওয়াসওয়াসা থাকবে না ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
জনাব, ৩ নং প্রশ্নে বালতির পানি অপবিত্র হয়েছে কিনা জানতে চেয়েছিলাম। কেননা, শরীরের নাপাকি পরিষ্কাএ করার সময় শরীর থেকে পানির ছিটা বালতিতে যাওয়ার বেশ সম্ভাবনা আছে।

 দয়া করে যদি বলতেন..

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...