আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আমার মা ২০১৪ সালে এক লোকের কাছে ৬০ হাজার টাকা দেয়, সুদ হিসাবে প্রতি ধানের মৌসুমে ধানের দাম হিসাবে টাকা নেয়। এভাবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি টাকা নেন। তিনি তার টাকার হিসাব করে না রাখায়, কত টাকা তিনি পেয়েছেন তা একদম সঠিক ভাবে বলতে পারছেননা। তবে আমরা অনেক চেষ্টা করে calculation করে মনে হচ্ছে এই 3 বছরে ৫৫ কি ৫৭, ৫৮ হাজার টাকা আসছে। এরপর আবার ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সে আমার মাকে আর কোনো টাকা দেয় নাই, টাকা দেয়া বন্ধ ছিল। কিছু দিন আগে সেই ব্যাক্তি সেই ৬০ হাজারের বদলে দশ হাজার কম দিছে, অর্থাৎ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিছে। এখন এই টাকা আম্মুর কাছে আছে। আমার আম্মু আগে না বুঝে এই সুদের কারবারে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তিনি ১-২ বছর থেকে সুদের ভয়াবহতা সম্পর্কে আগের থেকে সচেতন এবং তিনি এই পথ থেকে ফিরে এসেছেন।এবং তিনি তওবা করতে চাচ্ছেন।এখন তিনি সুদ থেকে বাচতে চান।, কিন্তু এই যে এই টাকার ঝামেলাটা তিনি বুঝতে পারছেন না কি করবেন।এখন প্রশ্ন হলো।
1. এখন এই যে ৫০ হাজার টাকা আমার আম্মু নিছেন, এই টাকা আম্মুর জন্য জায়েজ হবে কিনা?

2.জায়েজ না হলে করনীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো টাকার বিনিময়ে টাকা নিলে কোনো কমবেশি করা যাবেনা।
কম বেশি করলে সেটি সূদ হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ مُسْلِمٍ الْمَكِّيِّ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ تِبْرُهَا وَعَيْنُهَا وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ تِبْرُهَا وَعَيْنُهَا وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ فَمَنْ زَادَ أَوِ ازْدَادَ فَقَدْ أَرْبَى وَلاَ بَأْسَ بِبَيْعِ الذَّهَبِ بِالْفِضَّةِ - وَالْفِضَّةُ أَكْثَرُهُمَا - يَدًا بِيَدٍ وَأَمَّا نَسِيئَةً فَلاَ وَلاَ بَأْسَ بِبَيْعِ الْبُرِّ بِالشَّعِيرِ وَالشَّعِيرُ أَكْثَرُهُمَا يَدًا بِيَدٍ وَأَمَّا نَسِيئَةً فَلاَ "

হাসান ইবন আলী (রহঃ) ........... উবাদা ইবন সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সোনা সোনার বিনিময়ে সমান সমান বিক্রি করবে, চাই তা সোনার পাত হোক বা স্বর্ণ মুদ্রাই হোক এবং রুপা রুপার বিনিময়ে সমান সমান বিক্রি করবে, চাই তা রুপার পাত হোক বা রৌপ্য মুদ্রাই হোক। আর গম গমের বিনিময়ে এক মুদ এক মুদের বিনিময়ে বিক্রি করতে হবে এবং যবের বিনিময়ে যবও এক মুদের বিনিময়ে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। আর খেজুর খেজুরের বদলে এক মুদের বিনিময়ে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। একই ভাবে লবণ লবণের বিনিময়ে এক মুদের বদলে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। এই প্রকারের একই ধরনের জিনিসের মধ্যে যে ব্যক্তি বেশী নিবে বা দিবে, তা-ই সূদ হবে।

তবে সোনাকে রুপার বিনিময়ে এ অবস্থায় বিক্রি করা, যখন রুপা উভয় অংশের মধ্যে অধিক হবে, তবে তা দূষণীয় নয়। তবে এতে শর্ত হলো- লেন-দেন হাতে হাতে হতে হবে, বাকীতে বিক্রি জায়িয হবে না। একই রূপে গম যবের বিনিময়ে বিক্রি করা দূষণীয় নয়, যখন যবের অংশ উভয়ের মধ্যে অধিক হবে। তবে তা এ শর্তে যে, লেন-দেন হাতে হাতে হতে হবে এবং এতেও বাকী বিক্রি বৈধ নয়।
(আবু দাউদ ৩৩১৬)

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَبِي الْأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهَذَا الْخَبَرِ يَزِيدُ، وَيَنْقُصُ وَزَادَ قَالَ: فَإِذَا اخْتَلَفَتْ هَذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيعُوا، كَيْفَ شِئْتُمْ، إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ 

‘উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে পূর্বোক্ত হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে কিছুটা কম-বেশি করে বর্ণিত হয়েছে। এতে অতিরিক্ত রয়েছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এসব ক্ষেত্রে এক ধরণের বস্তু অন্য ধরণের বস্তুর সাথে বিনিময় হলে তোমরা ইচ্ছামত পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারো। তবে আদান-প্রদান হতে হবে নগদে।
(আবু দাউদ ৩৩৫০)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনাদের প্রবল ধারণা অনুপাতে আপনার মা এই 3 বছরে ৫৫/৫৭/ ৫৮ হাজার টাকা নিয়েছেন।
সুতরাং তিনি যে ৬০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন,তাহা হতে এটি মাইনাস হয়ে যাহা থাকবে,শুধু সেটিই তিনি পাবেন।
বাকি টাকা তাকে ফেরত দিতে হবে।

★সুতরাং এখন যে ৫০ হাজার টাকা আপনার আম্মু নিয়েছেন, এই টাকা সম্পূর্ণভাবে আম্মুর জন্য জায়েজ হবেনা।

তিনি যেহেতু আগে ৫৫/৫৭/ ৫৮ হাজার টাকা নিয়েছিলেন,সুতরাং তিনি আর মাত্র ২/৩/৪ হাজার টাকা পাবেন।

বাকি টাকা সেই লোককে ফেরত দিয়ে দিবেন।

(তিনি আগে মোট কতটাকা নিয়েছিলেন,সেটি সেই ঋন গ্রহীতার সাথে বসে আলোচনা করে ঠিক করে নিবেন।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...