আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (60 points)
১. সূরা ফাতিহায়,  আত্তাহ্যিয়াতু, সহ অন্যন্য প্রয়োজনীয় দোয়া ও সূরায়, দ্বোয়াদ, এর স্থলে,  দাল ও, আঈন সঠিক ভাবে গলা থেকে উচ্চারণ না করে মুখ থেকে উচ্চারণ করলে নামাজ হবে কি?
২. আমি সঠিক উচ্চারণ পারি তাও যদি তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে বা বেখেয়ালে সঠিক মাখরাজ উচ্চারণ না করি, এতে কি নামাজ দোহরাতে হবে?

৩.আমার প্রায়ই নামাজ পরে সন্দেহ হয় সঠিক ভাবে উচ্চারণ করলাম কি না এক্ষেত্রে কি করবো?

৪. আমি ফাইনাল পরীক্ষায় অন্যের খাতা দেখে এবং নিজে লিখে দুইটা মিলিয়েই পরীক্ষা দিয়েছিলাম, বেশি অংশ হয়তো অন্যের থেকে সাহায্য নিয়েই হয়েছে। এরুপ পরীক্ষা দেওয়া আমি লজ্জিত। এখন এই পরীক্ষায় ভালো করার জন্য কি আমি দোয়া করতে পারি? ফেল না হওয়ার জন্য দোয়া করতে পারি? পরীক্ষা "আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয়েছে, বা ইনশাআল্লাহ পাশ করবো এভাবে বললে কি গুনাহ হবে?

৫. আজকে আমার স্ত্রী এর সাথে পর্দা নিয়ে কথা বলার সময় বলি, তুমি যদি খাছ পর্দা না করো তাহলে আত্মীয় দের থেকে কি বলে তোমাকে দূরে রাখবো?তখন তোমাকে তাদের সাথেও দোকা করতে হবে। তখন সে বলে আমি না হয় সালাম দিয়ে চলে আসবো এতে সমস্যা হবে না। তার এই কথায় কি ইমানে সমস্যা হবে?

৬. আমার তো মনে হয় না যে সে এভাবে দেখা করে সালাম দিলে গুনাহ হবে না মনে করে এই কথা বলেছে, তাকে জিজ্ঞেসা ও করা হয় নি, তাকে কি এই বিষয়ে জিগ্যেসা করা জরুরী?

৭. তার বাবা অনেক পর্দা নিয়ে কথা বলেন কিন্তু নিজে মেয়েদের সাথে কথা বলেন গল্প করেন। তাই তার চাচা একদিন তার বাবাকে বলেন, "সব সময় নিজে ফতোয়া মারাও আর নিজে অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলো" এই কথা আমাকে শুনিয়া আমার বউ একটু হেসে উঠে, এতে কি ইমানে সমস্যা হবে?

৮.আমি একবার আমার একটা বন্ধু সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলি " সে যে কি ভাবে একমাত্র সে ই জানে" এটা বলার পর মনে হলো কিন্তু আল্লাহ তো জানেন সব,তাই ওই বাক্যের সাথে যুক্ত করি, " সে যে কি ভাবে একমাত্র সে ই জানে, এই দুনিয়ার জমিনের উপর" পরে মনে হলো এই কথা দ্বারা কি এটা বুঝায়? "যে আমি ভাবছি আল্লাহ দুনিয়ায় নাই"। মূলত আল্লাহ সম্পর্কে আমার বিশ্বাস হলো উনি যেভাবে থারাক উনার মতো করে আছেন, আর অতিরিক্ত কিছু ভাবি না, আমার এসব কথায় কি ইমানে সমস্যা হবে?

৯. এক হিন্দু ছোট ভাই আজ আমাকে দেখে, তাদের ঠাকুরের সামনে হাত তুলে যেভাবে করে সেভাবে করে উঠে, আমি বিষয়টা অখুশি হই কিন্তু তার সাথে হাসিমুখে কথা বলে আসি, এর ফলে কি আমার ইমানে সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (564,060 points)
edited by
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


(১.২)
https://ifatwa.info/19542/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
নামাজে মাখরাজ অনুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত জরুরি। 
কেননা মাখরাজ গত ভূল হলে অনেক সময় অন্য অক্ষরের ন্যায় উচ্চারণ হয়ে যায়,যাতে প্রায়ই অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।
আর শরীয়তের বিধান হলো নামাজে অর্থ বিকৃত হলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
,
তাই অবশ্যই মাখরাজ অনুযায়ী প্রত্যেক অক্ষর উচ্চারণ করে নামাজ আদায় করতে হবে।
,    
আরো জানুনঃ  
https://ifatwa.info/62754

মদ অনুযায়ী নামাজ আদায় না করলে এক্ষেত্রে বিধান হলো যদি টান থাকা সত্ত্বেও টান না দেওয়া হয়,বা তিন/চার আলিফের জায়গায় এক আলিফ টানা হয়,এক্ষেত্রে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।
কিন্তু যেখানে টান নেই,সেখানে টান দিলে প্রায়ই অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।
আর শরীয়তের বিধান হলো নামাজে অর্থ বিকৃত হলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
,

আমরা তাজবিদ সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ
 
“তাজবিদ ও কিরাআতবিদগণ কর্তৃক উল্লেখিত তাজবিদের নিয়ম-কানুনগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেয়া ভালো। এটি কিরাআত সুন্দর করার অন্তর্গত। যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

« زَيِّنُوا الْقُرْآنَ بِأَصْوَاتِكُمْ »

“তোমরা সুন্দর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত কর।” [হাদিসটি ইমাম আহমদ, ইবনে মাজাহ, নাসায়ী ও হাকেম রহ. হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এবং তা সহীহ]

সুতরাং যদি গুন্নাহ, তারকিক (বারিক/চিকন করা), তাফখিম (পোর/মোটা করা) ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রাখা হয় তাহলে তা উত্তম। কিন্তু আমার কাছে যা মনে হয় এটা আবশ্যক নয়-যদি স্পষ্টভাবে ত্রটি-বিচ্যুতি ছাড়া পাঠ করে।”

 শাইখ সালেহ আল ফাউযান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,

“قراءة القرآن بالتجويد مستحبة من غير إفراط، وليست واجبة، وإنما الواجب تجويد القرآن من اللحن والخطأ في الإعراب”

“তাজবিদ সহ কুরআন তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। তবে এ ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। এটা ওয়াজিব নয়। বরং ওয়াজিব হল, ইরাব (উচ্চারণ ও প্রকাশ করা) এর ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত করে সুন্দরভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা।”

শাইখ উসাইমিন রহ. বলেন,

أما التجويد فليس بواجب، التجويد تحسين للفظ فقط، وتحسين اللفظ بالقرآن لا شك أنه خير، وأنه أتم في حسن القراءة، لكن الوجوب بحيث نقول من لم يقرأ القرآن بالتجويد فهو آثم قول لا دليل عليه، بل الدليل على خلافه”

“আর তাজবিদ ওয়াজিব নয়। তাজবিদ শব্দকে সুন্দর করে মাত্র। কুরআনের শব্দকে সুন্দর করা নি:সন্দেহে কল্যাণকর। এটি কিরাআতকে সুন্দর করার ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গতা দান করে। কিন্তু তাজবিদকে ওয়াজিব বলা অর্থাৎ “এ কথা বলা যে, যে ব্যক্তি তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন পড়বে না সে গুনাহগার হবে” এর পক্ষে কোনও দলিল নাই। বরং এর বিপরীতেই দলিল রয়েছে।”

★★যাদের জন্য পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত সম্ভব। শুধুমাত্র তাদের জন্যই পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা ওয়াজিব।আর যাদের বেলায় সম্ভব নয়, তাদের জন্য পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা ওয়াজিব নয়।বরং অর্থে পরিবর্তন আসেনা এমনকরে কুরআন পড়াই তাদের জন্য যথেষ্ট হবে।এমনকি তারা পূর্ণ তাজবিদ সহকারে না পড়লেও তাদের কোনোপ্রকার গোনাহগার হবেন না।(শরহু তাইয়্যিবাতুন-নাশর-৬৩)

আরো জানুনঃ

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
এক্ষেত্রে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাওয়ার মতো অর্থ বিকৃত হলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।
নতুবা নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।

(০৩)
নামাজের পর সন্দেহ হলে বিষয়টিকে পাত্তা না দেয়ার পরামর্শ থাকবে। 
তবে যদি প্রবল ধারণা হয়,তাহলে দেখতে হবে যে এক্ষেত্রে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাওয়ার মতো অর্থ বিকৃত হয়েছে কিনা,এমনটি হয়ে থাকলে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করবেন। 

নতুবা পুনরায় আদায় করতে হবেনা। 

(০৪)
এভাবে বললে গুনাহ হবেনা।

(৫-৯)
উপরোক্ত ছুরত সমূহে ঈমানের সমস্যা হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...