بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
টয়লেটের দুষ্ট জ্বীন থেকে সাবধান টয়লেট এমন এক
স্থান যেটাকে দুষ্ট জ্বীনের অভয়ারণ্য বলা চলে। টয়লেটে দুষ্ট
জ্বীনরা বাস করে। কেউ টয়লেটে প্রবেশের সময় দোয়া না পড়লে তারা তার যৌনাঙ্গ নিয়ে খেলা
করে। যার
বদ নজরে যৌনাঙ্গে বিভিন্ন রোগও হতে পারে। কিন্তু কেউ যদি টয়লেটে প্রবেশ করার আগে দোয়া
পড়ে নেয়, তবে
দুষ্ট জ্বীনরা তাকে দেখতে পায় না। তাই রাসুল (সাঃ) স্বীয় উম্মতকে টয়লেটে প্রবেশের পূর্বে
সর্বদা আল্লাহর কাছে দুষ্ট জ্বীনদের আক্রমণ থেকে আশ্রয় চাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি
নিজেও এর ওপর আমল করতেন।
টয়লেটে প্রবেশের দোয়া
اَللهُمَّ إِنّيْ
أَعًوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَ الْخَبَائِثِ
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পুরুষ ও নারী শয়তানদের
থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’
আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ)
যখন পায়খানায় প্রবেশ করতেন,
তখন তিনি বলতেন,
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পুরুষ ও নারী শয়তানদের থেকে আশ্রয় প্রার্থনা
করছি। (বুখারি, হাদিস
: ৬৩২২)
জ্বিনের আছর থেকে নিরাপদ থাকার আমল:
১) সবসময় পবিত্র থাকা। গোসল ফরজ হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গোসল
করা।
২) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ও শরিয়ত মোতাবেক চলা।
৩) ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় সুন্নাহসমর্থিত দোয়া পড়া। ঘরে
প্রবেশের সময় সালাম করে প্রবেশ করা।
৪) প্রস্রাব-পায়খানায় যাওয়ার সময় দোয়া পড়া। সেখান থেকে ফিরেও
দোয়া পড়া। কারণ এসব জায়গায় দুষ্ট জিনদের আনাগোনা বেশি থাকে।
৫) ঘরে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করা। বিশেষ করে সুরা বাকারা তেলাওয়াত
করা।
৬) প্রতি নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করা। ঘুমানোর সময় আয়াতুল
কুরসি পাঠ করে ঘুমানো।
৭) খাবারের সময় মাসনুন দোয়া পড়া। কারণ দোয়া না পড়লে দুষ্ট জিনেরা
খাবারে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকে। গোশত খাওয়ার পর হাড়গুলো পানিতে না ফেলা, কারণ এগুলো
জিনদের খাবার। এগুলো নষ্ট করলে তারা কষ্ট পায়। অনেক ক্ষেত্রে এ কারণেও আক্রমণ করে বসতে
পারে।
৮) ঘরে কোনো প্রাণীর কঙ্কাল ও মূর্তিজাতীয় জিনিস না রাখা।
৯) নির্জন বা ময়লার স্তূপ, আগুনের কুণ্ডলীর কাছে একাকী না যাওয়া।
১০) জনমানবহীন স্থান, গভীর জঙ্গলে রাতের বেলায় একা সফর না
করা।
১১) কোনো অবস্থায় ভয় পাওয়া যাবে না। কারণ ভয় পেলে তারা আরো বেশি
সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে।
১২) ভরদুপুর ও সন্ধ্যায় বাচ্চাদের ঘরের বাইরে না রাখা।
১৩) সকাল-সন্ধ্যা এবং শোবার সময় সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস
তিনবার করে পড়ে হাতের মধ্যে ফুঁক দিয়ে শরীরে মুছে নেওয়া।
১৪) সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে বিসমিল্লাহ বলে ঘরের দরজা ও জানালা বন্ধ
রাখা।
১৫) নারী ও শিশুদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে না দেওয়া।
রাতের এক প্রহর যাওয়ার পর এ বাধ্যবাধতা নেই।
★★প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনি ভাই/বোন!
বোবা জ্বীন বা বদকার
জ্বীনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে উপরে উল্লেখিত আমলগুলি করার চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ। রাত্রে শোবার সময় সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস তিনবার করে পড়ে হাতের মধ্যে
ফুঁক দিয়ে শরীরে মুছে নিবেন এবং আপনি
আপনার বাচ্চার নাপাক কাপড়গুলো যতদূর সম্ভব ঘরের বাহিরে রাখার চেষ্টা করবেন। যদি তা
কষ্টকর হয় তাহলে যেই পাত্রে কাপড়গুলো রাখেন তাতে যেন ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। সর্বাবস্থায়
বিশেষ করে হায়েজা মহিলার জন্য কোন ভাবে দোয়া পাঠ করা ছাড়া ট্য়লেটে প্রবেশ করা উচিত
নয়। দোয়া পাঠ না করে টয়লেটে প্রবেশ করা নারীদের উপর জ্বীন ভর করার একটি অন্যতম কারণ।
উপরে উল্লেখিত আমলগুলি করলে আশা করা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উক্ত সমস্যা থেকে
মুক্তি দিবেন।