আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
132 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার কিছু পরিমাণ স্বর্ণ আছে আর অন্য কোনো টাকা নেই তবে ২০০০/৩০০০ টাকা আছে যেটা একটু একটু করে আমি হজ্জের জন্য জামাচ্ছি এক্ষেত্রে এই টাকা কি নিসাবের মধ্যে ধরতে হবে?

 আমার উপর কি যাকাত ও কুরবানী ওয়াজিব হবে? যেহেতু আমার অন্য কোনো টাকা নেই আর এই টাকাটা হজ্জের জন্য জমানো এখন যদি যাকাত কুরবানী দিতে যাই তাহলে তো আর হজ্জের জন্য টাকা জমানো হবে না।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত।

 আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ

‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-(সূরা নূর : ৫৬)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ

 ‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। -(সূরা বাকারা : ১১০)

সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-

وَ الْمُقِیْمِیْنَ الصَّلٰوةَ وَ الْمُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ سَنُؤْتِیْهِمْ اَجْرًا عَظِیْمًا۠

‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’

আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজনাতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার সমমূল্যের হয়ে যায় তাহলেও তার উপর জাকাত ফরজ হবে। যেমন কারো নিকট কিছু স্বর্ণ ও কিছু টাকা আছে, যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার মূল্যের সমান হয় তাহলে তার উপরও জাকাত ফরজ হবে। -(রদ্দুল মুহতার: ৫/২১৯)

যদি কারো নিকট কিছু পরিমাণ স্বর্ণ এবং কিছু পরিমাণ রৌপ্য বা কিছু পরিমাণ ব্যবসায়িক পণ্য ও কিছু পরিমাণ নগদ অর্থ থাকে এবং এগুলো মিলে ৫২.৫ তোলা (৬১২.৩৬ গ্রাম) রৌপ্যের সমপরিমাণ মূল্যের হয়ে যায় তাহলেও  তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। ( রদ্দুল মুহতার ২/২৯৭; আলবাহরুর রায়েক ২/২২৬, ২/২২৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৫৪বাদায়েউস সানায়ে ২/১০৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৭৩)আল্লাম ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন,

 إذا أمسكه لينفق منه كل ما يحتاجه فحال الحول، وقد بقي معه منه نصاب فإنه يزكي ذلك الباقي، وإن كان قصده الإنفاق منه أيضا في المستقبل لعدم استحقاق صرفه إلى حوائجه الأصلية وقت حولان الحول، بخلاف ما إذا حال الحول وهو مستحق الصرف إليها، لكن يحتاج إلى الفرق بين هذا، وبين ما حال الحول عليه، وهو محتاج منه إلى أداء دين كفارة أو نذر أو حج، فإنه محتاج إليها أيضا لبراءة ذمته

কেউ মালকে এজন্য সংরক্ষণ করল যে,সে এখান থেকে প্রয়োজনানুরূপ খরছ করবে।ইতিমধ্যে একটি বৎসর চলে যায়।এবং সেই সংরক্ষিত মালে নেসাব পরিমাণ মাল অবশিষ্ট থাকে।তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে যাকাত দিতে হবে।যদিও ভবিষ্যতে সেই মালকে খরছ করার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু বৎসর পূর্ণ হওয়ার সময়ে তো এই টাকা কাজে লাগেনি বরং এখনও নেসাব পরিমাণ মাল রয়েছে ।সেজন্যই তাতে যাকাত আসবে। তবে যদি কোনো সম্পত্তিতে এক বৎসর অতিবাহিত হয়,এবং সেই মালে অন্যকারো হক্ব নির্ধারিত হয়ে যায়।যদিও সেই মালকে এখন পর্যন্ত অন্য মাল(অর্থাৎ যে মালে বৎসর অতিবাহিত হয়ে যাকাত ওয়াজিব হয়ে গেছে)থেকে পৃথক করা হয়নি তার পরও তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে না।(কেননা তাতে অন্যর হক্ব নির্ধারিত হয়ে গেছে) কেননা নিজের যিম্মা থেকে ওয়াজিব আদায় করার সবাই মুখাপেক্ষী। যেমন কাফফারা, মান্নত,হজ্ব ইত্যাদি।সুতরাং এগুলো খরছ না করলেও শরীয়ত তাকে খরছের মতই মনে করে। রদ্দুল মুহতার-2/262

হজ্বের জন্য জমাকৃত টাকায় যাকাত ওয়াজিব হবে। (কিতাবুল-নাওয়াযিল-৬/৪৬৬)

 যে টাকা হজ্বের টিকেটের জন্য দেয়া হয়ে গেছে,এবং টিকেট ক্ররিদ করা হয়ে গেছে,তাহলে যাকাত ওয়াজিব হবে না। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৯/৩৩৭)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নের বিবরণ মতে  আপনার মালিকানাধীন স্বর্ণ ও টাকার পরিমাণ যদি যাকাতের নেসাব পরিমাণ হয়ে যায় তাহলে বছর পূর্ণ হলে আপনার উপর যাকাত ফরজ হবে। প্রয়োজনে যাকাত প্রদানের ক্ষেত্রে আপনি কাহারো থেকে টাকা করজ নিতে পারেন,বা কিছু স্বর্ণ বিক্রি করতে পারেন। অনুরুপ ভাবে আপনার উপর নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকার কারণে কুরবানীও ওয়াজিব হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...