আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
91 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (11 points)
আসসালামু আসসালামু,
আমি বিবাহিতা। বিয়ের সময় স্বর্ণ পাই মোহরানা হিসেবে। বিয়ের পর প্রায় ৬ ভড়ির মতো স্বর্ণ হয় আমার এবং তখন আমার কাছে ২ ভড়ি রুপার নুপুর ও ছিল।
আমি জানতাম না তখন আমি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক ছিলাম ।
বিয়ের ৪ বছর পর রুপা বিক্রি করে ফেলি।এরপর থেকে আমার জমানো টাকাও নেই,রুপাও নেই।

 তাহলে তো এখন আমি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নই আমার জানা মতে।


১!!!!অই ৪ বছরে আমার উপর কি হজ্জ ফরজ হয়েছিল?তখনকার বাজারে ৬ ভড়ি স্বর্ণ কিনতেই লাগতো ৩ লাখ টাকা।আমার তারচেয়ে কম ছিল।


২!!!হজ্জ ফরজ হয়ে থাকলে কিভাবে কি করব? মাহরাম নেই আমার যাওয়ার মতো।ফরজ হজ্জে তো অনেক টাকা লাগে। আমার স্বর্ণ টুকু ছাড়া কিছুই নেই।


আমি এখন জানতে পেরেছি আমার উপর ওই ৪ বছর যাকাত ফরজ ছিল এবং কোরবানি ওয়াজিব ছিল।যেটা আমি আদায় করতে চাই ইন শা আল্লাহ।


৩!!!হিসাব টা কিভাবে করবো? বর্তমান বাজারের স্বর্ণ ও রুপার বিক্রয়মূল্য বের করে ৪ দিয়ে গুণ করে (২.৫%) ৪ বছরের যাকাত বের করবো?
নাকি ৪ বছর আগের বিয়ের সময়কার স্বর্ণ ও রুপার বিক্রয়মূল্য বের করে যাকাতের হিসাব করবো??


অই ৪ বছরের মাঝে আমার স্বামী ২বছর কোরবানি দেয়।শশুড়বাড়িতে ফেমিলি ছোট হওয়ায় সবার নাম নিয়েই কোরবানি হয় ১ টি গরুতে যেহেতু ৭ ভাগ হয়।অর্থাৎ দুই বছরেই আমার নামে কোরবানি হয় সেটা আমার স্বামী এবং পরিবারের সবাই জানে। মনে মনে বলতাম আমার উপর কোরবানি যদি ওয়াজিব হয়ে থাকে নাম দেয়ায় শরিক হয়ে ভালোই হয়েছে।তখন ও জানতাম না কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে।


৪!!!কিন্তু তখন তো নিয়্যাত কিছু করিনি সেটা নফল কোরবানি হবে?নাকি এখন নিয়্যাত করলে সেই ২ বছরের টা আদায় হবে?


উল্লেখ্য সেই ৪ বছর হলো ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল।

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(১.২)
হজ্ব ফরজ হয় দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে ব্যক্তির উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।

সে হিসেবে দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগবে। সে টাকা উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে তার উপর হজ্ব করা আবশ্যক।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরিফে এরশাদ করেনঃ   
ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا، ومن كفر فان الله غنى عن العلمين.
 (তরজমা) মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বায়তুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহরউদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্ব করা ফরয। আর কেউ যদি অস্বীকার করে তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিতযে, আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের প্রতি মুখাপেক্ষী নন।-সূরা আলে ইমরান (৩) : ৯৭
,

★ফাতওয়ার কিতাবে এসেছেঃ   

 যার মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণের খরচের অতিরিক্ত এই পরিমাণ টাকা-পয়সা বা সম্পত্তি আছে, যা দ্বারা হজ্জে যাওয়া-আসার ব্যয় এবং হজ্জকালীন সাংসারিক খরচ হয়ে যায়, তার উপর হজ্জ করা ফরয। (আদ্দুরুল মুখতার মা‘আ রদ্দিল মুহতার ২/৪৫৮)

হজ্জ যে বছর ফরয হয় সে বছরই তা আদায় করা ওয়াজিব। গ্রহণযোগ্য কোনো ওযর ছাড়া হজ্জ বিলম্বিত করলে গুনাহ হবে। তবে পরবর্তীতে হজ্জ আদায় করে নিলে এই গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ৩/৫১৭ রশীদিয়া, কিতাবুল মাসাইল ৩/৭৬)
,

মহিলাদের উপর হজ্বঃ

দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে এবং সফর সঙ্গি হিসেবে স্বামী বা মাহরাম কেউ থাকলে ঐ মহিলার উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।

স্বামী উভয়ের খরচ বহনে সক্ষম হ’লেই স্ত্রীর উপর হজ্জ ফরয হয় না।

বরং স্ত্রীর যদি নিজ মালিকানায় হজ ফরজ হওয়ার মতো সম্পদ থাকে,তাহলে তার উপর হজ ফরজ হবে

,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে যেহেতু হজ্বে যাওয়ার মতো আপনার মাহরাম পুরুষ নেই,সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ঐ ৪ বছরে আপনার উপর হজ্জ ফরজ হয়নি।

(০৩)
আপনাকে চার বছরের যাকাত আদায় করতে হবে।

এক্ষেত্রে বর্তমান বাজার নয়,বরং সেই সময়ের প্রত্যেক আলাদা আলাদা বছরের বাজার মূল্যের হিসেবে আপনার কাছে থাকা সমস্ত স্বর্ণ ও রুপার আনুমানিক বিক্রয়মূল্য বের করে ২.৫% যাকাত দিবেন।

২০১৯,২০২০,২০২১,২০২২  এর চার বছরের যাকাত।
এক্ষেত্রে উল্লেখিত প্রত্যেক আলাদা আলাদা বছরের বাজার মূল্যের হিসেবে আপনার কাছে থাকা সমস্ত স্বর্ণ ও রুপার আনুমানিক বিক্রয়মূল্য বের করে ২.৫% যাকাত দিবেন।

(০৪)
আপনার অনুমতি নিয়ে আপনার নামে কুরবানী হয়ে থাকলে সেই দুই বছরের কুরবানী আপনার আদায় হয়ে গিয়েছে। 

এখন অবশিষ্ট দুই বছরের কুরবানী না দেয়ার দরুন দুটি ছাগল সমপরিমাণ টাকা আপনি গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...